বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের আগে মাত্র আড়াই মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ২০ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের স্টার অ্যাডহেসিভ ১৫ কোটিতে উন্নিত হয়েছে। বাজারে আসার আগে এই দ্রুত উন্নতিকে অস্বাভাবিক মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। যে কারনে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনের আগে এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
কয়েক বছর ধরে শেয়ারবাজারে আইপিওতে আসার আগেই হঠাৎ করে পরিশোধিত মূলধন কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সমালোচনার মধ্যে রয়েছে। যে বৃদ্ধি নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশ্নও রয়েছে। যেটার সত্যতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
তবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন বিষয়টিকে গুরুত্বারোপ করে। এ নিয়ে ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ভালো আইপিও দিতে গিয়ে কয়েকটি বিষয় যাচাই করি। এরমধ্যে কত সময়ের মধ্যে পরিশোধিত মূলধনের পরিবর্তন হয়েছে, সেটা অন্যতম। অনেক কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসার আগে দ্রুত মূলধন বাড়ায়। যা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
যার ধারাবাহিকতায় গত ২৪ আগস্ট কোন কোম্পানি আইপিও আবেদনের পূর্ববর্তী দুই বছরে বোনাস শেয়ার ইস্যু ছাড়া অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে পারবে না বলে পাবলিক ইস্যু রুলসের সংশোধনীতে সংযুক্ত করা হয়েছে।
কিন্তু স্টার অ্যাডহেসিভের শেয়ারবাজারে আসাকে কেন্দ্র করে বোনাস শেয়ারসহ প্লেসমেন্টে দ্রুত পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো হয়েছে।
কোম্পানিটির শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের আগে মাত্র ২ মাস ২০ দিনের (২০২১ সালের ৩১ মার্চ থেকে ২০ জুন ) ব্যবধানে ২০ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধন ১৫ কোটিতে উন্নিত হয়েছে। অথচ ২০১৩ সালে ১ জানুয়ারি গঠিত কোম্পানিটি ওই সময় থেকে ২০২১ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত বা ৮ বছর ৩ মাস ২০ লাখ টাকা দিয়েই চলেছে।
স্টার অ্যাডহেসিভের প্রসপেক্টাসের ৭ পৃষ্টা অনুযায়ি, ১৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের প্রায় পুরোটাই বা ৯৯ শতাংশ ইস্যু করা হয়েছে শেষ আড়াই মাসে (৩১ মার্চ-২০ জুন ২১)। যার মধ্যে শেয়ার ইস্যুর জন্য আগেই সংগ্রহ করা কোন শেয়ার মানি ডিপোজিটও নেই। এমনকি শেয়ারবাজারে আসার আগে মূলধন বাড়ানো অর্থ ব্যবহারও করতে পারেনি। এরমধ্যেই ৫ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য শেয়ারবাজারে আসতে চাইছে স্টার অ্যাডহেসিভ।
এদিকে প্রসপেক্টাসের ৬৪ পৃষ্টা অুনযায়ি, সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে শেয়ার ইস্যুবাবদ সংগৃহিত অর্থের ৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা অব্যবহৃত রয়েছে। তবে আইপিওতে আসার ক্ষেত্রে এমন অব্যবহৃত থাকলে, অনুমোদন পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধনবাবদ উত্তোলিত পুরো অর্থ আগে ব্যবহার করতে হয়, তারপরে শেয়ারবাজারে আসতে হয়। যা কিউআইওর ক্ষেত্রে করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও স্টার অ্যাডহেসিভ কর্তৃপক্ষ কোন বক্তব্য দেয়নি।
উল্লেখ্য, স্টার অ্যাডহেসিভ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৫ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এজন্য কোম্পানিটির কিউআইওতে ২৭ মার্চ আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে ৩১ মার্চ।
বিজনেস আওয়ার/২৩ মার্চ, ২০২২/আরএ
5 thoughts on “শেয়ারবাজারে আসার আগে আড়াই মাসে ২০ লাখ টাকার কোম্পানি ১৫ কোটি”