বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেন সহজতর করল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এখন থেকে বিনিয়োগকারীদেরকে কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। এটা ডিএসই স্বয়ংক্রিয়ভাবে করে দেবে।
সোমবার (২৮ মার্চ) ডিএসইর ওয়েবসাইটে এই খবর জানানো হয়েছে।
এর আগে শেয়ারবাজারে এসএমইতে লেনদেন করার যোগ্য হওয়ার জন্য ডিএসইর ইএসএস ওয়েবসাইটে প্রদত্ত অনলাইন ফর্ম পূরণ করে, তা ডিএসইতে মেইল করতে হতো। এরপরে ডিএসই তা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিত। তবে এখন থেকে বিনিয়োগকারীদেরকে রেজিস্ট্রশন করা লাগবে না। পোর্টফোলিওতে ২০ লাখ টাকার বিনিয়োগ (ক্রয় মূল্য বা বাজার দরের সর্বোচ্চটা বিবেচ্য) থাকলেই ডিএসই স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন করে দেবে।
তবে ডিএসই এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া প্রতি প্রান্তিক অন্তর করবে। এজন্য সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) বা ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) প্রতি প্রান্তিকে কোয়ালিফাইড ইনভেস্টেরের তথ্য সরবরাহ করবে।
তবে এরইমধ্যে কয়েক দফায় এসএমইতে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহন বাড়ানোর জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো উদ্যোগ নিলেও তা খুব একটা ফলোদায়ক হয়নি। এক্ষেত্রে অন্যতম একটি বাধা ছিল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া। কারন শুধু বিনিয়োগকারী না, অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউজ কর্তৃপক্ষই এ রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে অবহিত না। এছাড়া এসএমই মার্কেটে মূল মার্কেটের মতো লেনদেন করা গেলেও অনেকে তা জানেন না। একটি বিও হিসাব দিয়েই যে মূল মার্কেট এবং এসএমইতে লেনদেন করা যায়, সেটাও অনেকেই জানেন না। এটা জানানোর জন্যও কেউ এগিয়ে আসেনি। এছাড়া এই খাতটি নতুন হলেও শেয়ারবাজারে রেগুলেটর থেকে শুরু করে সবার মধ্যেই প্রচারণাও অভাব রয়েছে।
যে কারনে এসএমইতে আসা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এখনো ১০ টাকার কাছেই অবস্থান করছে। যে কোম্পানিগুলোর আগামি ৩ বছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ একই কোম্পানিগুলো যদি মূল মার্কেটে লেনদেন শুরু হতো, তাহলে অভিহিত মূল্যের কয়েকগুণ দরে লেনদেন হতো।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এসএমই মার্কেটে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহন বাড়াতে কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হওয়ার জন্য শেয়ারবাজারে ৫০ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ২০ লাখ টাকায় বিনিয়োগ নামিয়ে আনে বিএসইসি। অর্থাৎ ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলেই কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হিসেবে বিবেচ্য হবে। এই এসএমই মার্কেটে লেনদেন করার জন্য কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হিসেবে বিবেচ্য হওয়ার শর্ত রয়েছে।
বিভিন্ন পক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় এমন স্বল্প মূলধনী কোম্পানির জন্য উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে ‘স্মল ক্যাপিটাল প্লাটফর্ম’ নামে আলাদা বাজার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। এর প্রেক্ষিতে স্বল্প মূলধনের কোম্পনির জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার বাই স্মল ক্যাপ কোম্পানিজ) রুলস-২০১৬ প্রনয়ন করে। তবে ২০১৮ সালে এর কিছু বিধির সংশোধন আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এরপর ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্মল ক্যাপ মার্কেট (এসএমই) প্লাটফর্ম উদ্বোধন করে। ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসএমই প্লাটফর্ম উদ্বোধনের আড়াই বছর পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে শেয়ারবাজারে এসএমই প্রতিষ্ঠানের লেনদেন শুরু হয়।
প্রথমিকভাবে ৬টি কোম্পানি নিয়ে শুরু হয় ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্মের লেনদেন। এই ছয় কোম্পানি হল- বেঙ্গল বিস্কিুট, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়, অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিং মিলস, মাস্টার ফিড এগ্রো, অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এবং হিমাদ্রী লিমিটেড।
বিজনেস আওয়ার/২৮ মার্চ, ২০২২/আরএ