ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বল্পমেয়াদি শর্তের জালে বেকায়দায় ভেনামি প্রকল্প

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২
  • 52

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : এ বছর ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষামূলকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য স্বল্প মেয়াদে অনুমতি দিয়েছে সরকার। যাতে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে এ চিংড়ি চাষীদের। স্বল্প মেয়াদে অনুমতি পাওয়ায় ভেনামি চিংড়ি চাষে ব্যাংকঋণ মিলছে না বলে জানিয়েছে চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

খুলনায় অবস্থিত বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে শনিবার (১৬ এপ্রিল) এসব কথা জানান রপ্তানিকারকেরা। যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফিশারি প্রডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল ও বিএফএফইএ।

জানা যায়, গত বছর যশোরের এমইউ-সি ফুডসকে পরীক্ষামূলকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দেওয়া হয়। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে আরও ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে চাষের অনুমতি দিয়েছে সরকার।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ভেনামি চিংড়ি চাষের উপযোগী খামার তৈরি ও বিদেশ থেকে পোনা আমদানি করতে বেশ খরচের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এক বছরের জন্য অনুমতি পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দিচ্ছে না ব্যাংক। ফলে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ মেয়াদে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তর খুলনার সাবেক উপপরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার। তিনি বলেন, একসময় দেশে ২ লাখ ৭৬ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ির চাষ হতো। কিন্তু বিভিন্ন কারণে চিংড়ি চাষের জমি অনেক কমে গেছে। এতে উৎপাদন কমার পাশাপাশি কমেছে রপ্তানিও। কাঁচামাল সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে আশার আলো হয়ে উঠতে পারে ভেনামি চিংড়ি। কম জায়গায় কম খরচে ভেনামি চিংড়ির অধিক উৎপাদন হয়। এ কারণে চিংড়ি উৎপাদনকারী দেশগুলো এখন ভেনামি চিংড়ি উৎপাদনে বেশি আগ্রহী।

সেমিনারে জানানো হয়, সারা বিশ্বে চিংড়ির চাহিদা বেড়েছে ১০ শতাংশ। বিশ্বে চাহিদা বাড়লেও সেখানে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। কারণ, চিংড়ির উৎপাদন কম। এশিয়ার মধ্যে ১৫টি দেশ চিংড়ি উৎপাদন করে। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশ ছাড়া অন্য ১৪টি দেশ ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন করছে। অন্যান্য দেশ যেখানে ২০ বছর আগে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন শুরু করেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করতে যাচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, ২০২০ সালে চিংড়ির বিশ্ববাজার ছিল ১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন (১ বিলিয়নে ১০০ কোটি) মার্কিন ডলারের। ২০২৬ সালে এ বাজারের আকার দাঁড়াবে ২৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বর্তমানে চিংড়ির বাজারের ৭৭ শতাংশই ভেনামির দখলে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদিকুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব কুমার পাল, বিএফএফইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম খলিলুল্লাহ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএফএফইএর সহসভাপতি এস হুমায়ুন কবির।

বিজনেস আওয়ার/১৭ এপ্রিল, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

স্বল্পমেয়াদি শর্তের জালে বেকায়দায় ভেনামি প্রকল্প

পোস্ট হয়েছে : ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : এ বছর ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষামূলকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য স্বল্প মেয়াদে অনুমতি দিয়েছে সরকার। যাতে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে এ চিংড়ি চাষীদের। স্বল্প মেয়াদে অনুমতি পাওয়ায় ভেনামি চিংড়ি চাষে ব্যাংকঋণ মিলছে না বলে জানিয়েছে চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

খুলনায় অবস্থিত বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে শনিবার (১৬ এপ্রিল) এসব কথা জানান রপ্তানিকারকেরা। যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফিশারি প্রডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল ও বিএফএফইএ।

জানা যায়, গত বছর যশোরের এমইউ-সি ফুডসকে পরীক্ষামূলকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দেওয়া হয়। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে আরও ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে চাষের অনুমতি দিয়েছে সরকার।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ভেনামি চিংড়ি চাষের উপযোগী খামার তৈরি ও বিদেশ থেকে পোনা আমদানি করতে বেশ খরচের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এক বছরের জন্য অনুমতি পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দিচ্ছে না ব্যাংক। ফলে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ মেয়াদে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তর খুলনার সাবেক উপপরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার। তিনি বলেন, একসময় দেশে ২ লাখ ৭৬ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ির চাষ হতো। কিন্তু বিভিন্ন কারণে চিংড়ি চাষের জমি অনেক কমে গেছে। এতে উৎপাদন কমার পাশাপাশি কমেছে রপ্তানিও। কাঁচামাল সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে আশার আলো হয়ে উঠতে পারে ভেনামি চিংড়ি। কম জায়গায় কম খরচে ভেনামি চিংড়ির অধিক উৎপাদন হয়। এ কারণে চিংড়ি উৎপাদনকারী দেশগুলো এখন ভেনামি চিংড়ি উৎপাদনে বেশি আগ্রহী।

সেমিনারে জানানো হয়, সারা বিশ্বে চিংড়ির চাহিদা বেড়েছে ১০ শতাংশ। বিশ্বে চাহিদা বাড়লেও সেখানে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। কারণ, চিংড়ির উৎপাদন কম। এশিয়ার মধ্যে ১৫টি দেশ চিংড়ি উৎপাদন করে। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশ ছাড়া অন্য ১৪টি দেশ ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন করছে। অন্যান্য দেশ যেখানে ২০ বছর আগে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন শুরু করেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করতে যাচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, ২০২০ সালে চিংড়ির বিশ্ববাজার ছিল ১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন (১ বিলিয়নে ১০০ কোটি) মার্কিন ডলারের। ২০২৬ সালে এ বাজারের আকার দাঁড়াবে ২৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বর্তমানে চিংড়ির বাজারের ৭৭ শতাংশই ভেনামির দখলে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদিকুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব কুমার পাল, বিএফএফইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম খলিলুল্লাহ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএফএফইএর সহসভাপতি এস হুমায়ুন কবির।

বিজনেস আওয়ার/১৭ এপ্রিল, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: