বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজারের উপর ভর করে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২০২১ সালে নিট মুনাফা বেড়েছে। কিন্তু ব্যাংক এশিয়া তার উল্টো দিকে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকৃত প্রায় সব কোম্পানিতে লোকসানে রয়েছে ব্যাংকটি। তবে মূল ব্যবসার উপরে ভর করে ব্যাংকটির আগের বছরের থেকে ২০২১ সালে নিট মুনাফা বেড়েছে।
দেশের শেয়ারবাজারে ২০২১ সালে লোকসান করেছে এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুজেঁ পাওয়া কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এই পরিস্থিতির মধ্যেও ব্যাংকের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারবাজারে প্রায় সব কোম্পানিতে লোকসানে থাকাটা অস্বাভাবিক।
ব্যাংক এশিয়া থেকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১৮ কোম্পানিতে ১০৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৬১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ৫টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটে। আর ৪১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ১৩ কোম্পানির শেয়ারে।
ব্যাংক এশিয়ার শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকৃত ১৮টি কোম্পানির মধ্যে ১৭টির বা ৯৪% কোম্পানির দর বিনিয়োগ মূল্যের (কস্ট প্রাইস) চেয়ে কমে অবস্থান করছে। শুধুমাত্র একমি ল্যাবরেটরিজে ব্যাংক এশিয়া আনরিয়েলাইজড মুনাফায় রয়েছে।
ব্যাংক এশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের ইউনিটে। এ কোম্পানিটিতে ২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এরপরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ কোটি ৯২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ডে।
ব্যাংকটির বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকৃত ১০৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বাজার দর (গত ৩১ ডিসেম্বর) দাঁড়িয়েছে ৮৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকটি ১৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বা ১৭% আনরিয়েলাইজড লোকসানে রয়েছে। এরমধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে এই লোকসানের পরিমাণ ৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। বাকি ৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার লোকসান ১৩ কোম্পানির শেয়ারে।
শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থায় থাকলেও ব্যাংকটির মূল ব্যবসার উপর ভিত্তি করে আগের বছরের ২০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার নিট মুনাফা বেড়ে ২০২১ সালে হয়েছে ২৭২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। অন্যভাবে বললে আগের বছরের শেয়ারপ্রতি ১.৭৪ টাকার মুনাফা বেড়ে হয়েছে ২.৩৪ টাকা।
ব্যাংকটির সমন্বিতভাবে আগের বছরে নিট সুদজনিত আয় ৩১৯ কোটি ৯ লাখ টাকা হলেও ২০২১ সালে বেড়ে হয়েছে ৫৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে গ্রাহকদের ডিপোজিট ও গৃহিত ঋণের বিপরীতে সুদজনিত ব্যয় কমে আসায় এমনটি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ব্যাংকটির সচিব এস.এম আনিসুজ্জামান মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে জানান।
১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যাংক এশিয়ার ১২৯টি শাখা রয়েছে। এছাড়া ৮টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১৯৮টি এটিএম বুথ ও ৫টি উপ শাখা রয়েছে। ব্যাংকটির ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ, বিএ এক্সচেঞ্জ কোম্পানি (ইউকে) ও বিএ এক্সপ্রেস (ইউএসএ) নামের ৩টি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/২৪ এপ্রিল, ২০২২/আরএ