ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামাত ছাড়ার কোনো কারণ দেখছে না বিএনপির হাইকমান্ড

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
  • 63

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ১৯৯৮ সালে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে গড়া সেই রাজনৈতিক ঐক্য এখনো আছে। জামায়াতের ব্যাপারে নিজেদর অবস্থান বিন্দুমাত্র বদলায়নি বিএনপি। সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ওঠে, জামায়াত ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বেশিরভাগ সদস্য একমত হয়েছেন। এ ব্যাপারে নাকি দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ারও সম্মতি আছে।

দলীয় সূত্রমতে, ২২ বছরের সম্পর্ক হঠাৎ করে ছিন্ন করার মতো কোনো কারণ দেখছে না বিএনপির হাইকমান্ড। সম্পর্ক ছিন্ন করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা থাকলে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের দিনগুলোতেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করত বিএনপি। স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলার জন্য সেটাই ছিল সবচেয়ে মোক্ষম সময়।

সেই উত্তাল সময়টাতে গোটা দেশের মানুষ যখন জামায়াতবিরোধী অবস্থান নিয়েছিল, তখনো জামায়াত ছাড়ার ঘোষণা দেয়নি বিএনপি। আর এখন জামায়াত ছাড়ার ঘোষণা কেন আসবে? এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের বেশ কয়েকজন সদস্যের।

তবে কেউ কেউ বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’-এ যোগ দেওয়ার আগেও জামায়াত ছাড়ার বিষয়টি ভাবতে পারত বিএনপি। কারণ, ওই সংকটময় মহূর্তে ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি চৌধুরী), বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্নার তরফ থেকে জামায়াত ছাড়ার শর্ত আরোপ করা হচ্ছিল।

শেষ পর্যন্ত জামায়াত না ছাড়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ না দিয়ে বরং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে যোগ দেন এনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসিচব সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। আর বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে নির্বাচনি জোট করে সমালোচনা মুখে পড়েন স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। তারপরও জামায়াত ছাড়েনি বিএনপি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি এখনো মনে করে— ভোটের রাজনীতিতে ড. কামাল হোসেন, বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না অথবা বাম রাজনৈতিক দল— সবাই মিলে একত্রিত হলে যা হবে, জামায়াত একা তাদের পাশে থাকলে তার চেয়ে বেশি কিছু হবে। ফলে কোনো অবস্থাতেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কোনো প্রয়োজন তারা বোধ করছে না।

তবে কৌশলগত কারণে মাঝে-মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে ‘লোক দেখানো’ দূরত্ব তৈরি করেছিল বিএনপি। যেমনটি ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের সময় করেছিল।

ইদানিং জামায়াত প্রসঙ্গে মুখে ‘কুলুপ’ এঁটে বসেছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কণও কথাই বলতে চাননা তাঁরা

জামায়াতের ব্যাপারে দলের অবস্থান সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জামায়াত নিয়ে নতুন করে কথা বলার মতো কিছু ঘটেনি। আর জামাত প্রসঙ্গে যদি কিছু বলার থাকে তাহলে সেটি দলের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলবেন।

বিজনেস আওয়ার/২৫ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

জামাত ছাড়ার কোনো কারণ দেখছে না বিএনপির হাইকমান্ড

পোস্ট হয়েছে : ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ১৯৯৮ সালে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে গড়া সেই রাজনৈতিক ঐক্য এখনো আছে। জামায়াতের ব্যাপারে নিজেদর অবস্থান বিন্দুমাত্র বদলায়নি বিএনপি। সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ওঠে, জামায়াত ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বেশিরভাগ সদস্য একমত হয়েছেন। এ ব্যাপারে নাকি দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ারও সম্মতি আছে।

দলীয় সূত্রমতে, ২২ বছরের সম্পর্ক হঠাৎ করে ছিন্ন করার মতো কোনো কারণ দেখছে না বিএনপির হাইকমান্ড। সম্পর্ক ছিন্ন করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা থাকলে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের দিনগুলোতেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করত বিএনপি। স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলার জন্য সেটাই ছিল সবচেয়ে মোক্ষম সময়।

সেই উত্তাল সময়টাতে গোটা দেশের মানুষ যখন জামায়াতবিরোধী অবস্থান নিয়েছিল, তখনো জামায়াত ছাড়ার ঘোষণা দেয়নি বিএনপি। আর এখন জামায়াত ছাড়ার ঘোষণা কেন আসবে? এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের বেশ কয়েকজন সদস্যের।

তবে কেউ কেউ বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’-এ যোগ দেওয়ার আগেও জামায়াত ছাড়ার বিষয়টি ভাবতে পারত বিএনপি। কারণ, ওই সংকটময় মহূর্তে ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি চৌধুরী), বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্নার তরফ থেকে জামায়াত ছাড়ার শর্ত আরোপ করা হচ্ছিল।

শেষ পর্যন্ত জামায়াত না ছাড়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ না দিয়ে বরং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে যোগ দেন এনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসিচব সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। আর বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে নির্বাচনি জোট করে সমালোচনা মুখে পড়েন স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। তারপরও জামায়াত ছাড়েনি বিএনপি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি এখনো মনে করে— ভোটের রাজনীতিতে ড. কামাল হোসেন, বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না অথবা বাম রাজনৈতিক দল— সবাই মিলে একত্রিত হলে যা হবে, জামায়াত একা তাদের পাশে থাকলে তার চেয়ে বেশি কিছু হবে। ফলে কোনো অবস্থাতেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কোনো প্রয়োজন তারা বোধ করছে না।

তবে কৌশলগত কারণে মাঝে-মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে ‘লোক দেখানো’ দূরত্ব তৈরি করেছিল বিএনপি। যেমনটি ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের সময় করেছিল।

ইদানিং জামায়াত প্রসঙ্গে মুখে ‘কুলুপ’ এঁটে বসেছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কণও কথাই বলতে চাননা তাঁরা

জামায়াতের ব্যাপারে দলের অবস্থান সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জামায়াত নিয়ে নতুন করে কথা বলার মতো কিছু ঘটেনি। আর জামাত প্রসঙ্গে যদি কিছু বলার থাকে তাহলে সেটি দলের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলবেন।

বিজনেস আওয়ার/২৫ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: