বিজনেসা আওয়ার প্রতিবেদকঃ আগামী তিন বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের যে চাহিদা রয়েছে তার ৪০ ভাগ অর্থাৎ ১০ লাখ টন দেশেই উৎপাদিত হবে বলে জানিয়েছেন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, এজন্য সরকার একটি কর্মপরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সচিবালয়ে ভোজ্যতলের বিদেশ নির্ভরতা কমাতে তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক সভার শুরুতে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বর্তমানে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদার ১২ ভাগ উৎপাদিত হয় বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয় সেই অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২৪ লাখ টন। এরমধ্যে তিন থেকে চার লাখ টন দেশে উৎপাদিত হয়। বাকিটা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। গত অর্থবছরে ভোজ্যতেল আমদানিতে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পেক্ষাপটে চলতি অর্থবছরে গত ১০ মাসে ভোজ্যতেল আমদানিতে ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। বাকি দুই মাসে ভোজ্যতেল আমদানির মোট ব্যয় দাঁড়াবে ২৪ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
তিনি বলেন, এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন, আমাদের এত তেল কেন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ সরিষার দেশ ছিল, সেই সরিষা আমরা করতে পারি না। ভোজ্যতেলে বিদেশের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করার জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আস্তে আস্তে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
এগুলো বিবেচনায় নিয়ে আগামী তিন থেকে চার বছরে কীভাবে তেলের উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং কতটা বাড়ানো যায়, আবার ধানের উৎপাদনও ব্যাহত করতে চাই না, এটা কীভাবে হবে সেটা নিয়েই আমরা কাজ করছি। আমরা তিন বছরের একটি পরিকল্পনা করেছি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় সয়াবিন ছিল গরিবের তেল। বলা হতো সরিষার ঝাঁজের জন্য এতে খারাপ জিনিস আছে, শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এটা সঠিক না।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা কীভাবে উৎপাদন বাড়াতে পারি? সরিষার আগের জাত, সাধারণত এটা ৭শ কেজি তেল উৎপাদন করতে পারে, টরি-৭। আমাদের নতুন যে জাত উৎপাদন করেছে সেটার উৎপাদন দুই টনেরও বেশি, প্রায় তিনগুণ।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্যাটার্ন ব্যবহার হয় এমন জমির পরিমাণ হলো ২০ লাখ হেক্টরে। এর শতকতা ২৫ শতাংশেও যদি আমরা সরিষা দিতে পারি তাহলেও কিন্তু বিরাট উৎপাদন বাড়ানো যাবে। এক বিঘা জমিতে কৃষক ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আয় করতে পারবে। এটাকে আমরা কর্মসূচি হিসেবে প্ল্যান করেছি। এটাকে আমরা মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাবো। এরজন্য বীজ, সারসহ যে প্রযুক্তি আছে সেটা দিয়ে আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘সূর্যমুখীও একটি নতুন ফসল হিসেবে আসছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা এক্সট্র্যাকশনের জন্য মেশিন আবিষ্কার করেছেন। এতে করে প্রতিবছর যে ২৪-২৫ লক্ষ টন তেলের প্রয়োজন হয় আমরা এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি নিজেরাই উৎপাদন করতে পারবো।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘অর্থাৎ ৪০ ভাগ তেল আমরা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করার পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ভোজ্য তেলের সংকট কাটবে।’
সভায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয় ও অধীন সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজনেস আওয়ার/ ০৭ জুন,২০২২/ এস এইচ