গত বছর ৪টি কোম্পানিকে ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট (ওটিসি) থেকে মূল মার্কেটে ফিরিয়ে আনে বর্তমান কমিশন। ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফিরে আসার পর কোম্পানি গুলোকে কিছু শর্ত পরিপালন করতে হয়।
যেমনঃ
✅ প্রথম ৩ বছর রাইট শেয়ার ইস্যু করা যাবে না।
✅ প্রথম ৩ বছর পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি করা যাবে না।
✅ প্রথম ৩ বছর বোনাস শেয়ার ইস্যু করা যাবে না।
অথচ উপরের একটি শর্তও পরিপালন করতে হয়নি সোনালি পেপারকে। বিএসইসির সহযোগীতায় প্রথম বছরেই বোনাস শেয়ার ইস্যু করেছে। প্রথম বছরেই রাইট শেয়ার ইস্যু করেছে। আবার কোম্পানির পরিচালকরাও শেয়ার বিক্রি করেছে। কিভাবে সম্ভব? সোনালি পেপারের জন্য বিএসইসির আইন কি ভিন্ন ?? শুধু সোনালি পেপার নয় OTC থেকে আসা মুন্নু ফেব্রিকের এক পরিচালক গত কয়েকদিন আগে ৫৭ লক্ষ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। সত্যিই অবাক হতে হয় এই সব দেখে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কমিশনে ২ বছর পূর্ণ উপলক্ষে একাত্তর টিভির এক সাক্ষাতে ওটিসি মার্কেটের ৬৫টি কোম্পানিকে পুনরায় সচল করার কথা বলেছেন। যেখানে মূল মার্কেটের বিনিয়োগকারী অস্তিত্ব সংকটে, সেখানে কয়েক যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই সব কোম্পানি নিয়ে চেয়ারম্যান সাহেবের আগ্রহ দেখে সত্যিই জনমনে সন্দেহের দানা সৃষ্টি করছে।
কয়েক যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই সকল ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলো বেশিরভাগই কাগজের শেয়ার। খোজ খবর নিলে জানতে পারবেন এই কোম্পানি গুলোর শেয়ার যাদের হাতে আছে তাদের অনেকেই বেঁচে নেই, আর যারা বেচে আছেন তাদের বেশির ভাগের বয়স ৬০ এর উপরে।
এই সকল ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলো বেশির ভাগই দেওলিয়া যাদের কোন অস্তিত্ব নেই। এই সকল কোম্পানি গুলো রং-চং করে কিছু মিথ্যা নিউজ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধরিয়ে দেয়াই মূল উদ্দেশ্য। শেয়ার গুলো ধরিয়ে দিতে পারলেই কয়েক বছর পর এই সকল কোম্পানি গুলোকে আর খুজে পাওয়া যাবে না। অতীতে কোম্পানি গুলো যেভাবে হারিয়ে গিয়েছিল আবার সেই ভাবে হারিয়ে যাবে।
কাগজের কোম্পানি গুলো নিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যানের এইভাবে ঢাকঢোল পেটানো কোন ভালো লক্ষণ না। আপনারাই বলেন বাজারে ভালো কোম্পানির অভাব আবার আপনারাই ওটিসি মার্কেট থেকে দেওলিয়া হয়ে যাওয়া কোম্পানি গুলোকে মূল মার্কেটে ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছেন। কিন্তু কেন? নুতন করে আর বিনিয়োগকারীদের ফকির করবেন না। মূল মার্কেটের অস্তিত্ব সংকটকে আরও তরান্বিত করবেন না।
লেখক
বিনিয়োগকারী তানভির আহমেদ