আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির কারণে গত চার মাস ধরে চেষ্টা করেও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পাননি বলে গত কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এমন খবর নাকচ করে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গত কয়েক মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারও সঙ্গেই সাক্ষাৎ করেননি। বুধবার (২৯ জুলাই) ইকোনমিক টাইমস এ খবর দিয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও অনুরোধই জানায়নি বলে জানতে পেরেছে তারা। আনুষ্ঠানিকভাবে যেখানে সাক্ষাতের অনুরোধই করা হয়নি, সেখানে সাড়া না দেওয়ার প্রশ্ন অবান্তর।
ইকোনমিক টাইমস বলছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে নানা ধরনের খবর বেরিয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ‘সফল’ ফোনালাপ এবং চীনের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের অবনতির মতো বিষয়গুলো এসব খবরের প্রতিপাদ্য।
তবে ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র এসব খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে বলছে, গত কয়েক মাসে ভরতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে বেশকিছু অনলাইন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের একাধিক মন্ত্রী অংশ নিয়েছেন। সবশেষ সোমবারও (২৭ জুলাই) দুই দেশের পররাষ্ট্র ও রেলপথ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা ১০টি রেল ইঞ্জিন স্থানান্তরের অনলাইন অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
পরদিন মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) রীভা গাঙ্গুলি দাশ সাক্ষাৎ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে।
বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকের বরাত দিয়ে সরকারের একজন উচ্ছ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করেছে ইকোনমিক টাইমস। সরকারের ওই কর্মকর্তা বলেন, সাক্ষাতের অনুমতি না চাইলে অনুমতি দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। তৃতীয় কোনো পক্ষ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়গুলো ছড়িয়েছে। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে।
সরকারের ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি— এই দুই সরকারেরই পারস্পরিক সহযোগিতা, আস্থা, বিশ্বাস, সব উপাদান মিলে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চ মাত্রায় অবস্থান করছে। এই সম্পর্ক পারস্পরিক সমঝোতা, সংস্কৃতির, মানুষে মানুষে যোগাযোগ-সম্পর্ক, নাড়ির টান, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, সবকিছু মিলিয়ে। এই সম্পর্ক অনেকগুলো উপাদান দ্বারা পরিচালিত।’
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ককে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ভারতীয় কূটনীতিকরা যেকোনো সময় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কারও সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করতে চাইলে তা সবসময় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিজনেস আওয়ার/৩০ জুলাই, ২০২০/এ