ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ অগাস্ট ২০২০
  • 80

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে চলা করোনামহামারির মধ্যে পুরোপুরি অচেনারূপে, সীমিত পরিসরে শুরু হওয়া পবিত্র হজের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। ১২ জিলহজ হজের অন্যতম আমল ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে পাথর মারতে হয়। এটা ওয়াজিব আমল। এই আমল শেষে হাজিরা মিনা ত্যাগ করে মক্কা পৌঁছেছেন। মক্কায় তারা বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছেন।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার সীমিত মানুষের অংশগ্রহণে হজের আয়োজন করা হয়। স্মরণকালের ইতিহাসে এবারের মতো এত কম মানুষ আর হজ করেনি। মোট কতজন হজযাত্রী এবারের হজের অংশ নিয়েছেন সেটা এখনও সৌদি কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি।

তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে ১৬০ দেশের মাত্র ১০ হাজার মানুষ এবার হজপালনের সুযোগ পেয়েছেন। শুধু সৌদি আরবে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ও স্থানীয় নাগরিকরা হজের জন্য নির্বাচিত হন। মোট হজযাত্রীর ৭০ শতাংশ সৌদি আরবে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের প্রবাসী।

যেহেতু এবার ভিন্ন পরিস্থিতিতে হজের আয়োজন করা হয়েছে, তাই এবার হাজিরা মদিনায় যাবেন কিনা, সেটা স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। মদিনা না গেলে হাজিরা নিজ নিজ বাড়ি ফিরবেন এবং সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন করবেন।

হজের বিধানে বিদায়ী তাওয়াফ ওয়াজিব। মিকাতের বাইরে যেসব হাজিরা এসেছেন, তাদের জন্য মক্কা মোকাররমা ত্যাগ করার সময় বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয়। আর যারা মক্কা এলাকার ভেতরে থাকেন, তাদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ মোস্তাহাব।

বিদায়ী তাওয়াফে কোনো রমল, ইজতেবা ও সায়ি নেই। শুধু কাবাকে সাত চক্করে তাওয়াফ করে ও দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজ শেষে খুব অনুনয়-বিনয় করে চোখের পানি ছেড়ে দোয়া করতে হয়। হানাফি মাজহাবে বিদায়ী তাওয়াফ ওয়াজিব। এটা ছুটে গেলে দম দিতে হবে।

অবশ্য কোনো কোনো মাজহাবে এটাকে হজের বহির্ভূত পৃথক ইবাদত হিসেবে পালন করা হয়। তাদের মতে মক্কাবাসী বা মক্কায় অবস্থানরত ভিনদেশি এবং বহিরাগত লোকেরা মক্কা থেকে সফরে বের হলে বিদায়ী তাওয়াফ করা লাগবে এবং এটা বছরের যেকোনো সময়েই হোক না কেন।

রোববার (২ আগস্ট) আসরের নামাজের আগে দলবেঁধে হাজিরা কাবা চত্বরে প্রবেশ করে বিদায়ী তাওয়াফ করেন। এর পর সেখানে নফল ইবাদত-বন্দেগিতে সময় কাটান। এর আগে নজিরবিহীন স্বাস্থ্যবিধি সুরক্ষা ও সৃশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে ২৯ জুলাই সকাল থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

এবারের হজে বেশকিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। যদিও এসবের কারণে হজে কোনো ত্রুটি হয়নি। এবারের হজে ইতিহাসের প্রথমবারের মতো একটিমাত্র মিকাত ‘কারন আল মানাজিল’ (ইহরাম পরিধানের সর্বশেষ নির্ধারিত স্থান) ব্যবহার করা হয়। সীমিত পরিসরে তাওয়াফ করতে হয়েছে, নফল তাওয়াফ করার সুযোগ পাননি।

হাজিদের মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করতে দেওয়া হয়নি। নির্ধারিত ভবনে অবস্থান করতে হয়েছে। মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। কোনো হাজি এ বছর নিজে কোরবানির পশু ক্রয় ও জবাই করেননি। নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের পক্ষ থেকে কোরবানি করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৩ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে

পোস্ট হয়েছে : ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ অগাস্ট ২০২০

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে চলা করোনামহামারির মধ্যে পুরোপুরি অচেনারূপে, সীমিত পরিসরে শুরু হওয়া পবিত্র হজের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। ১২ জিলহজ হজের অন্যতম আমল ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে পাথর মারতে হয়। এটা ওয়াজিব আমল। এই আমল শেষে হাজিরা মিনা ত্যাগ করে মক্কা পৌঁছেছেন। মক্কায় তারা বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছেন।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার সীমিত মানুষের অংশগ্রহণে হজের আয়োজন করা হয়। স্মরণকালের ইতিহাসে এবারের মতো এত কম মানুষ আর হজ করেনি। মোট কতজন হজযাত্রী এবারের হজের অংশ নিয়েছেন সেটা এখনও সৌদি কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি।

তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে ১৬০ দেশের মাত্র ১০ হাজার মানুষ এবার হজপালনের সুযোগ পেয়েছেন। শুধু সৌদি আরবে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ও স্থানীয় নাগরিকরা হজের জন্য নির্বাচিত হন। মোট হজযাত্রীর ৭০ শতাংশ সৌদি আরবে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের প্রবাসী।

যেহেতু এবার ভিন্ন পরিস্থিতিতে হজের আয়োজন করা হয়েছে, তাই এবার হাজিরা মদিনায় যাবেন কিনা, সেটা স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। মদিনা না গেলে হাজিরা নিজ নিজ বাড়ি ফিরবেন এবং সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন করবেন।

হজের বিধানে বিদায়ী তাওয়াফ ওয়াজিব। মিকাতের বাইরে যেসব হাজিরা এসেছেন, তাদের জন্য মক্কা মোকাররমা ত্যাগ করার সময় বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয়। আর যারা মক্কা এলাকার ভেতরে থাকেন, তাদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ মোস্তাহাব।

বিদায়ী তাওয়াফে কোনো রমল, ইজতেবা ও সায়ি নেই। শুধু কাবাকে সাত চক্করে তাওয়াফ করে ও দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজ শেষে খুব অনুনয়-বিনয় করে চোখের পানি ছেড়ে দোয়া করতে হয়। হানাফি মাজহাবে বিদায়ী তাওয়াফ ওয়াজিব। এটা ছুটে গেলে দম দিতে হবে।

অবশ্য কোনো কোনো মাজহাবে এটাকে হজের বহির্ভূত পৃথক ইবাদত হিসেবে পালন করা হয়। তাদের মতে মক্কাবাসী বা মক্কায় অবস্থানরত ভিনদেশি এবং বহিরাগত লোকেরা মক্কা থেকে সফরে বের হলে বিদায়ী তাওয়াফ করা লাগবে এবং এটা বছরের যেকোনো সময়েই হোক না কেন।

রোববার (২ আগস্ট) আসরের নামাজের আগে দলবেঁধে হাজিরা কাবা চত্বরে প্রবেশ করে বিদায়ী তাওয়াফ করেন। এর পর সেখানে নফল ইবাদত-বন্দেগিতে সময় কাটান। এর আগে নজিরবিহীন স্বাস্থ্যবিধি সুরক্ষা ও সৃশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে ২৯ জুলাই সকাল থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

এবারের হজে বেশকিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। যদিও এসবের কারণে হজে কোনো ত্রুটি হয়নি। এবারের হজে ইতিহাসের প্রথমবারের মতো একটিমাত্র মিকাত ‘কারন আল মানাজিল’ (ইহরাম পরিধানের সর্বশেষ নির্ধারিত স্থান) ব্যবহার করা হয়। সীমিত পরিসরে তাওয়াফ করতে হয়েছে, নফল তাওয়াফ করার সুযোগ পাননি।

হাজিদের মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করতে দেওয়া হয়নি। নির্ধারিত ভবনে অবস্থান করতে হয়েছে। মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। কোনো হাজি এ বছর নিজে কোরবানির পশু ক্রয় ও জবাই করেননি। নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের পক্ষ থেকে কোরবানি করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৩ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: