ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবজির বাজার চড়া, কমেছে মুরগি-মাছের দাম

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অগাস্ট ২০২০
  • 83

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশে চলমান বন্যা আর ঈদের পর বাড়তি মালামাল না আসার অজুহাতে দাম বেড়েছে সবজির। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রকারভেদে পাঁচ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন সবজি। অপরিবর্তিত আছে মসলাজতীয় পণ্য আদা, রসুন ও পেঁয়াজ, চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম।

তবে ঈদুল আজহার পর পরই নিম্নমুখী মুরগির বাজার। কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগির দাম। অন্যদিকে মুরগির সঙ্গে দাম কমেছে মাছেরও। সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে ইলিশের। মাছভেদে কেজিতে ১০ থেকে ১শ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে।

সবজি বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুন, করলা, করোল্লার দাম। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাকও। অন্যদিকে শাকসবজির সঙ্গে দাম বেড়েছে কাঁচামরিচেরও। ঈদের আগে কেজিতে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও ফের তা ২০০ এর ঘরে গিয়ে ঠেকেছে।

সবজির চড়া দাম নিয়ে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার পাশাপাশি ঈদের পর বাজারে সবজি সংকট থাকায় বাড়তি। আর ক্রেতারা বলছেন, একটা ইস্যু পেলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার সুত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজারগুলোতে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে করলা ও উস্তা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিদরে, লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন প্রতিকেজি গাজর ৯০ থেকে ১০০ টাকা।

প্রতিকেজি ঝিঙা-চিচিঙা-ধন্দুল ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কচুরলতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, কাকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কচুরছড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এছাড়া হালিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিহালি কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, হালিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতিহালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। দাম বেড়ে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ প্রতিকেজি (দেশি) ২০০ টাকা, আমদানি ১৬০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি আঁটি লালশাকের দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ টাকা, মূলা ও কলমিশাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়াশাক ৪০ টাকা, পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা।

তবে আগের দাম রয়েছে আদা, রসুন ও পেয়াজ বাজারে। এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে, প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিদরে। অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম।

মালিবাগ বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, কাঁচামাল আমদানি নির্ভর। এখন বন্যার পাশাপাশি ঈদের কারণে বাজারে মালামাল কম আসছে। এতে দাম বেড়েছে সবজির। তবে পণ্যের সরবরাহ বাড়লে দাম কম আসবে।

এ বাজারের এক ক্রেতা বলেন, কোনো ইস্যু পেলেই বিক্রেতারা পণ্যের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এখন বাজারে সবজির সরবরাহ কম, একইসঙ্গে ক্রেতাও কমেছে এতে দাম বাড়ার কোনো কারণ দেখছি না। তারপরেও বাজারে সব কিছুর বাড়তি দাম। এগুলো মনিটরিং হওয়া দরকার।

রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমে এখন প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা কেজিদরে। কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২শ থেকে ২১০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিদরে।

আর কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, ছোট সোনালি প্রতিহালি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগি। এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ কেজিদরে।

দাম কমেছে মাছের বাজারে। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে এসব বাজারে প্রতিকেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩শ টাকা কেজিদরে, প্রতিকেজি মলা বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতিকেজি ছোটপুঁটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে ৪শ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৫শ টাকা, শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪শ টাকা।

পাবদা ২৮০ থেকে ৪শ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩শ থেকে ৪শ টাকা, রুই (আকারভেদে) ১৮০ থেকে ৩শ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১শ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১শ থেকে ১৫০ টাকা, কাতল ১৮০ থেকে ৩শ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সবচেয়ে বেশি কমেছে ইলিশের। কেজিতে ১শ টাকা পর্যন্ত কম দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এখন এসব বাজারে প্রতি এককেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকায়, সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১শ থেকে এক হাজার ১শ টাকা কেজিদরে ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩শ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিজনেস আওয়ার/০৪ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সবজির বাজার চড়া, কমেছে মুরগি-মাছের দাম

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অগাস্ট ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশে চলমান বন্যা আর ঈদের পর বাড়তি মালামাল না আসার অজুহাতে দাম বেড়েছে সবজির। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রকারভেদে পাঁচ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন সবজি। অপরিবর্তিত আছে মসলাজতীয় পণ্য আদা, রসুন ও পেঁয়াজ, চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম।

তবে ঈদুল আজহার পর পরই নিম্নমুখী মুরগির বাজার। কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগির দাম। অন্যদিকে মুরগির সঙ্গে দাম কমেছে মাছেরও। সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে ইলিশের। মাছভেদে কেজিতে ১০ থেকে ১শ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে।

সবজি বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুন, করলা, করোল্লার দাম। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাকও। অন্যদিকে শাকসবজির সঙ্গে দাম বেড়েছে কাঁচামরিচেরও। ঈদের আগে কেজিতে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও ফের তা ২০০ এর ঘরে গিয়ে ঠেকেছে।

সবজির চড়া দাম নিয়ে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার পাশাপাশি ঈদের পর বাজারে সবজি সংকট থাকায় বাড়তি। আর ক্রেতারা বলছেন, একটা ইস্যু পেলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার সুত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজারগুলোতে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে করলা ও উস্তা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিদরে, লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন প্রতিকেজি গাজর ৯০ থেকে ১০০ টাকা।

প্রতিকেজি ঝিঙা-চিচিঙা-ধন্দুল ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কচুরলতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, কাকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কচুরছড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এছাড়া হালিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিহালি কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, হালিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতিহালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। দাম বেড়ে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ প্রতিকেজি (দেশি) ২০০ টাকা, আমদানি ১৬০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি আঁটি লালশাকের দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ টাকা, মূলা ও কলমিশাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়াশাক ৪০ টাকা, পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা।

তবে আগের দাম রয়েছে আদা, রসুন ও পেয়াজ বাজারে। এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে, প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিদরে। অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম।

মালিবাগ বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, কাঁচামাল আমদানি নির্ভর। এখন বন্যার পাশাপাশি ঈদের কারণে বাজারে মালামাল কম আসছে। এতে দাম বেড়েছে সবজির। তবে পণ্যের সরবরাহ বাড়লে দাম কম আসবে।

এ বাজারের এক ক্রেতা বলেন, কোনো ইস্যু পেলেই বিক্রেতারা পণ্যের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এখন বাজারে সবজির সরবরাহ কম, একইসঙ্গে ক্রেতাও কমেছে এতে দাম বাড়ার কোনো কারণ দেখছি না। তারপরেও বাজারে সব কিছুর বাড়তি দাম। এগুলো মনিটরিং হওয়া দরকার।

রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমে এখন প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা কেজিদরে। কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২শ থেকে ২১০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিদরে।

আর কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, ছোট সোনালি প্রতিহালি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগি। এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ কেজিদরে।

দাম কমেছে মাছের বাজারে। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে এসব বাজারে প্রতিকেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩শ টাকা কেজিদরে, প্রতিকেজি মলা বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতিকেজি ছোটপুঁটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে ৪শ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৫শ টাকা, শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪শ টাকা।

পাবদা ২৮০ থেকে ৪শ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩শ থেকে ৪শ টাকা, রুই (আকারভেদে) ১৮০ থেকে ৩শ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১শ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১শ থেকে ১৫০ টাকা, কাতল ১৮০ থেকে ৩শ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সবচেয়ে বেশি কমেছে ইলিশের। কেজিতে ১শ টাকা পর্যন্ত কম দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এখন এসব বাজারে প্রতি এককেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকায়, সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১শ থেকে এক হাজার ১শ টাকা কেজিদরে ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩শ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিজনেস আওয়ার/০৪ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: