ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামাআতে নামাজ আদায়ে পাঁচ শ্রেষ্ঠত্ব

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 114

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: একাকি নামাজ আদায়ের চেয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব, তুলনামূলক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এর কল্যাণকর প্রভাব অত্যাধিক বেশি। যে কারণে রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য জোর তাগিদসহ আদেশ করেছেন।

এখানে জামাতে নামাজ আদায়ের পাঁচ শ্রেষ্ঠত্ব ও কল্যাণকর প্রভাব নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

১. সাতাশ গুণ বেশি প্রতিদান

রাসূল (সা.) থেকে সহীহ হাদীসের সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একাকি নামাজের তুলনায় সাতাশ গুণ অধিক প্রতিদান পাওয়া যাবে। অপর এক বর্ণনায় পঁচিশ গুণ অধিক প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে।

সাতাশ বা পঁচিশ যেটিই হোক না কেন, একাকি নামাজের তুলনায় জামাতে নামায অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

২. ফেরেশতাদের দুআ

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অযু অবস্থায় তার নামাজের স্থানে যতক্ষণ অবস্থান করে, ফেরেশতারা তার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত দুআ করতে থাকে। তারা দুআ করে: হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তাকে দয়া করুন।” (সহীহ বুখারী)

সুতরাং, আপনি যদি শুধু অযু করে মসজিদেও অবস্থান নেন, ফেরেশতারা আপনার জন্য দুআ করতে থাকবে।

৩. মুনাফেকি থেকে সুরক্ষা

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, “মুনাফেকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন নামাজ হল এশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এর প্রতিদান সম্পর্কে জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও নামাজে এসে অংশগ্রহণ করতো।” (বুখারী)

এই হাদীসে রাসূল (সা.) মূলত আমাদের সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, এই দুই ওয়াক্তের নামায যাদের পক্ষে আদায় করা কঠিন, তাদের মনে নিফাকের প্রভাব রয়েছে। সুতরাং এই দুই নামাজ জামাতে আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের মনকে নিফাক থেকে মুক্ত করতে পারি।

৪. পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের সওয়াব

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জামাতের সাথে এশার নামাজ আদায় করবে, সে যেনো অর্ধেক রাত নামাজে অতিবাহিত করলো। আবার যে ব্যক্তি এশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করলো, সে যেনো সম্পূর্ণ রাত নামাজে অতিবাহিত করলো।” (তিরমিজি)

সুতরাং, জামাতে এশা ও ফজর আদায়ের মাধ্যমে আমরা পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের মত বিশাল প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকে পেতে পারি।

৫. গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধি

হযরত আবু সাইদ আল-খুদরী (রা.) বলেছেন, একবার রাসূল (সা.) তার সমবেত সাহাবাদের প্রশ্ন করেন, “আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলবো না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গুনাহকে মাফ করবেন এবং তোমাদের নেকিকে বাড়িয়ে দেবেন?”

সকলে বলল, “অবশ্যই, আল্লাহর রাসূল!”

রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “প্রতিবন্ধকতা থাকলেও যথাযথভাবে অযু করে পায়ে হেটে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা।” (ইবনে মাযাহ)

সুতরাং, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের গুনাহগুলোকে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে নিতে এবং তার দৃষ্টিতে আমাদের মর্যাদাকে বাড়িয়ে নিতে পারি।

আল্লাহ আমাদেরকে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।

বিজনেস আওয়ার/১৬ সেপ্টেম্বর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

জামাআতে নামাজ আদায়ে পাঁচ শ্রেষ্ঠত্ব

পোস্ট হয়েছে : ০৮:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: একাকি নামাজ আদায়ের চেয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব, তুলনামূলক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এর কল্যাণকর প্রভাব অত্যাধিক বেশি। যে কারণে রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য জোর তাগিদসহ আদেশ করেছেন।

এখানে জামাতে নামাজ আদায়ের পাঁচ শ্রেষ্ঠত্ব ও কল্যাণকর প্রভাব নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

১. সাতাশ গুণ বেশি প্রতিদান

রাসূল (সা.) থেকে সহীহ হাদীসের সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একাকি নামাজের তুলনায় সাতাশ গুণ অধিক প্রতিদান পাওয়া যাবে। অপর এক বর্ণনায় পঁচিশ গুণ অধিক প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে।

সাতাশ বা পঁচিশ যেটিই হোক না কেন, একাকি নামাজের তুলনায় জামাতে নামায অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

২. ফেরেশতাদের দুআ

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অযু অবস্থায় তার নামাজের স্থানে যতক্ষণ অবস্থান করে, ফেরেশতারা তার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত দুআ করতে থাকে। তারা দুআ করে: হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তাকে দয়া করুন।” (সহীহ বুখারী)

সুতরাং, আপনি যদি শুধু অযু করে মসজিদেও অবস্থান নেন, ফেরেশতারা আপনার জন্য দুআ করতে থাকবে।

৩. মুনাফেকি থেকে সুরক্ষা

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, “মুনাফেকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন নামাজ হল এশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এর প্রতিদান সম্পর্কে জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও নামাজে এসে অংশগ্রহণ করতো।” (বুখারী)

এই হাদীসে রাসূল (সা.) মূলত আমাদের সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, এই দুই ওয়াক্তের নামায যাদের পক্ষে আদায় করা কঠিন, তাদের মনে নিফাকের প্রভাব রয়েছে। সুতরাং এই দুই নামাজ জামাতে আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের মনকে নিফাক থেকে মুক্ত করতে পারি।

৪. পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের সওয়াব

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জামাতের সাথে এশার নামাজ আদায় করবে, সে যেনো অর্ধেক রাত নামাজে অতিবাহিত করলো। আবার যে ব্যক্তি এশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করলো, সে যেনো সম্পূর্ণ রাত নামাজে অতিবাহিত করলো।” (তিরমিজি)

সুতরাং, জামাতে এশা ও ফজর আদায়ের মাধ্যমে আমরা পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের মত বিশাল প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকে পেতে পারি।

৫. গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধি

হযরত আবু সাইদ আল-খুদরী (রা.) বলেছেন, একবার রাসূল (সা.) তার সমবেত সাহাবাদের প্রশ্ন করেন, “আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলবো না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গুনাহকে মাফ করবেন এবং তোমাদের নেকিকে বাড়িয়ে দেবেন?”

সকলে বলল, “অবশ্যই, আল্লাহর রাসূল!”

রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “প্রতিবন্ধকতা থাকলেও যথাযথভাবে অযু করে পায়ে হেটে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা।” (ইবনে মাযাহ)

সুতরাং, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের গুনাহগুলোকে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে নিতে এবং তার দৃষ্টিতে আমাদের মর্যাদাকে বাড়িয়ে নিতে পারি।

আল্লাহ আমাদেরকে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।

বিজনেস আওয়ার/১৬ সেপ্টেম্বর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: