ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে বাল্যবিয়ে বেড়েছে ১০ শতাংশ

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ২০২১ সালের আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে ওই দুই বছর এই বয়সী প্রায় ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) বাল্যবিয়ের ওপর জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে। অনুষ্ঠানে শহরের বস্তি এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শিরোনামে আরও একটি জরিপ প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ১৮ বছরের নিচের বয়সী মেয়েদের বিয়ে হলে তা বাল্যবিয়ে হিসেবে ধরা হয়। সে ক্ষেত্রে জরিপ প্রতিবেদনে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী দল বিবেচনা করার পেছনে যুক্তি তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বলা হয়, জরিপকালে ১৯ বছর বয়সী বেশকিছু মেয়েকে পাওয়া গেছে, যাদের বয়স ২০২০ ও ২০২১ সালের শুরুতে ১৮ বছরের নিচে ছিল।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মহামারির দুই বছরে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী যে ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রথম বছর (২০২০) প্রায় ২৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বছর (২০২১) হয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশের।

এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (মিকস) ২০১৯ অনুসারে, একই বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার প্রায় ৩৩ শতাংশ। আর ১৮ বছর বয়সের নিচে এ হার ৫১ শতাংশ।

ইউএনএফপিএর জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে ২০২০ সালে বাল্যবিয়ের হার কম হয়ে থাকতে পারে। তবে জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগের মত ছিল, করোনাকালে বাল্যবিয়ে বেড়েছে। এ সময়ে বুলিংসহ নানা সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় মেয়েরা বাল্যবিয়ের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বোধ করেছে। বাল্যবিয়েতে মহামারি ও লকডাউনের প্রভাব সম্পর্কে জানতে আরও জরিপ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ইউএনএফপিএর সহায়তায় জরিপটি পরিচালনা করে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। ২০২১ সালের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২০ জেলায় ২ হাজার ৮২০ জন মেয়ের ওপর জরিপ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জেলায় জেলায় বাল্যবিয়ের হারের ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। যেমন রাঙামাটিতে বাল্যবিয়ে ৪ শতাংশ ও লক্ষ্মীপুরে ৪০ শতাংশ। জরিপের সময় দেখা গেছে, বিবাহিত ওই কিশোরী-তরুণীদের ১৫ শতাংশ ছিল অন্তঃসত্ত্বা। বিবাহিত কিশোরীদের মাত্র ২৪ শতাংশ স্কুলে ফিরেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভিন। প্রধান আলোচক ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ মাসাকি ওয়াতাবে।

বিজনেস আওয়ার/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দেশে বাল্যবিয়ে বেড়েছে ১০ শতাংশ

পোস্ট হয়েছে : ১০:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ২০২১ সালের আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে ওই দুই বছর এই বয়সী প্রায় ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) বাল্যবিয়ের ওপর জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে। অনুষ্ঠানে শহরের বস্তি এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শিরোনামে আরও একটি জরিপ প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ১৮ বছরের নিচের বয়সী মেয়েদের বিয়ে হলে তা বাল্যবিয়ে হিসেবে ধরা হয়। সে ক্ষেত্রে জরিপ প্রতিবেদনে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী দল বিবেচনা করার পেছনে যুক্তি তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বলা হয়, জরিপকালে ১৯ বছর বয়সী বেশকিছু মেয়েকে পাওয়া গেছে, যাদের বয়স ২০২০ ও ২০২১ সালের শুরুতে ১৮ বছরের নিচে ছিল।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মহামারির দুই বছরে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী যে ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রথম বছর (২০২০) প্রায় ২৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বছর (২০২১) হয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশের।

এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (মিকস) ২০১৯ অনুসারে, একই বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার প্রায় ৩৩ শতাংশ। আর ১৮ বছর বয়সের নিচে এ হার ৫১ শতাংশ।

ইউএনএফপিএর জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে ২০২০ সালে বাল্যবিয়ের হার কম হয়ে থাকতে পারে। তবে জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগের মত ছিল, করোনাকালে বাল্যবিয়ে বেড়েছে। এ সময়ে বুলিংসহ নানা সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় মেয়েরা বাল্যবিয়ের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বোধ করেছে। বাল্যবিয়েতে মহামারি ও লকডাউনের প্রভাব সম্পর্কে জানতে আরও জরিপ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ইউএনএফপিএর সহায়তায় জরিপটি পরিচালনা করে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। ২০২১ সালের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২০ জেলায় ২ হাজার ৮২০ জন মেয়ের ওপর জরিপ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জেলায় জেলায় বাল্যবিয়ের হারের ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। যেমন রাঙামাটিতে বাল্যবিয়ে ৪ শতাংশ ও লক্ষ্মীপুরে ৪০ শতাংশ। জরিপের সময় দেখা গেছে, বিবাহিত ওই কিশোরী-তরুণীদের ১৫ শতাংশ ছিল অন্তঃসত্ত্বা। বিবাহিত কিশোরীদের মাত্র ২৪ শতাংশ স্কুলে ফিরেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভিন। প্রধান আলোচক ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ মাসাকি ওয়াতাবে।

বিজনেস আওয়ার/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: