ঢাকা , সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, চিকিৎসক কারাগারে

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 6

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজাকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক তারিক হাসান এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গাংনীর রাজা ক্লিনিকে ২০০২ সালে পিত্তথলির পাথর অপারেশন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী বাচেনা খাতুন। এর ২০ বছর পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার পরামর্শে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটে ৪/৫ ইঞ্চির একটি কাঁচি পাওয়া যায়। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, গত ২০০২ সালের ২৫ মার্চ গাংনীর রাজা ক্লিনিকে পিত্তথলিতে স্টোন জনিত সমস্যায় অপারেশন কর হয়। অপারেশনের পর পেটের মধ্যেই প্রায় পাঁচ ইঞ্চি লম্বা একটি সিজারিয়ান ইন্সট্রুমেন্ট “কাঁচি” রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। এর ২০ বছর পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার পরামর্শে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটে ৪/৫ ইঞ্চির একটি কাঁচি পাওয়া যায়। পেটের মধ্যে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী পারভিয়াস হোসেন রাজা ভুক্তভোগী বাচেনা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করে রাজা’র নিজ খরচে পুনরায় অপারেশন ও চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করেন।

এই ঘটনায় রোগী বাচেনা খাতুন নিজে বাদী মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাজা ক্লিনেকর মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনাটি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকীকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়।

রোববার দুপুরে অভিযুক্তরা আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত ডা. মিজানুর রহমান ও ডা. তাপস কুমারকে জামিন দিলেও করলেও ডা. রাজার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ইব্রাহিম শাহিন বলেন, আমরা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চেয়েছিলাম। বিচারক জামিন দেননি। আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আমরা এই মামলায় উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

বিজনেস আওয়ার/২৫ সেপ্টেম্বর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, চিকিৎসক কারাগারে

পোস্ট হয়েছে : ০৬:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজাকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক তারিক হাসান এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গাংনীর রাজা ক্লিনিকে ২০০২ সালে পিত্তথলির পাথর অপারেশন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী বাচেনা খাতুন। এর ২০ বছর পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার পরামর্শে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটে ৪/৫ ইঞ্চির একটি কাঁচি পাওয়া যায়। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, গত ২০০২ সালের ২৫ মার্চ গাংনীর রাজা ক্লিনিকে পিত্তথলিতে স্টোন জনিত সমস্যায় অপারেশন কর হয়। অপারেশনের পর পেটের মধ্যেই প্রায় পাঁচ ইঞ্চি লম্বা একটি সিজারিয়ান ইন্সট্রুমেন্ট “কাঁচি” রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। এর ২০ বছর পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার পরামর্শে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটে ৪/৫ ইঞ্চির একটি কাঁচি পাওয়া যায়। পেটের মধ্যে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী পারভিয়াস হোসেন রাজা ভুক্তভোগী বাচেনা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করে রাজা’র নিজ খরচে পুনরায় অপারেশন ও চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করেন।

এই ঘটনায় রোগী বাচেনা খাতুন নিজে বাদী মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাজা ক্লিনেকর মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনাটি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকীকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়।

রোববার দুপুরে অভিযুক্তরা আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত ডা. মিজানুর রহমান ও ডা. তাপস কুমারকে জামিন দিলেও করলেও ডা. রাজার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ইব্রাহিম শাহিন বলেন, আমরা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চেয়েছিলাম। বিচারক জামিন দেননি। আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আমরা এই মামলায় উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

বিজনেস আওয়ার/২৫ সেপ্টেম্বর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: