ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাক প্রধানমন্ত্রীর অডিও টেপ নিলামে

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 3

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শেহবাজ শরিফের একটি অডিও ক্লিপ নিলামে উঠেছে ইন্টারনেটের ডার্ক ওয়েবে। দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাক তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী এ তথ্যটি জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অসতর্কতা ও গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতার ফলেই ফাঁস হয়েছে ১১৫ ঘণ্টার এই অডিও টেপটি।

কী আছে ওই অডিও ক্লিপে? পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ-সহ শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ, আইন মন্ত্রী আজম তরার, পররাষ্ট্র মন্ত্রী রানা সানাউল্লা এবং পাকিস্তানের বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার আয়াজ সাদিকের গলা শোনা গিয়েছে ওই অডিও রেকর্ডিংয়ে।

পাকিস্তানের দৈনিক ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম ক্লিপটিতে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল সম্পর্কে আলোচনা ও পরামর্শ করতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেবকে। দেশের অর্থনীতি সংস্কারে বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াই ইতোমধ্যে নিজের পার্টি পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজে (পিএমএল-এন) বর্তমানে কোনঠাসা অবস্থায় আছেন মিফতাহ। শেহবাজ শরিফ ও মরিয়ম আওরঙ্গজেব পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আছেন।

অডিও ক্লিপে মরিয়মকে বলতে শোনা গেছে— পেট্রোল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর যে ঘোষণা সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী দিয়েছেন, তার সঙ্গে তিনি একেবারেই একমত নন। এই প্রশ্নে এমনকি তার দল পিএমএল-এন ক্ষমতায় থাকল কি থাকল না— তাও গুরুত্বপূর্ণ নয় মরিয়মের কাছে। মিফতার নীতির নিন্দাও করতেও শোনা গেছে মরিয়মকে।

এ ছাড়াও ওই অডিয়ো ক্লিপে এমন আরও অনেক টুকরো টাকরা কথোপকথন ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ অবশ্য ওই ক্লিপকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাননি। ডনকে তিনি বলেছেন, অডিয়ো রেকর্ডিংয়ে এমন কিছু নেই, যাতে আতঙ্কিত হতে হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে নীরবতার কারণে এসব অডিও টেপ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবুও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠছে, যার মূল বিষয় হচ্ছে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ও কর্মকর্তাদের সাইবার নিরাপত্তা।

অতীতেও পাকিস্তানে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়েছে, তবে এগুলোর বেশিরভাগই ছিল ফোন কথোপকথন।

ফাঁস হওয়া অডিও টেপে পিটিআইয়ের পদত্যাগের বিষয়েও কথা বলতে শোনা গেছে পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ নেতাদের।

পাঞ্জাবের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ড. আরসালান খালিদ বলেছেন, আসল প্রশ্ন হলো, ১০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রেকর্ডিং কীভাবে হলো? প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কি গোয়েন্দা যন্ত্র বসানো হয়েছিল?

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘরে পররাষ্ট্রনীতিসহ সব স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, তাহলে কি এই সব তথ্যও হ্যাকারদের কাছে আছে? এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটা পাকিস্তানের ওপর সাইবার হামলা।

উমর সাইফ, যিনি পূর্ববর্তী শেহবাজ শরিফ সরকারের সময় পাঞ্জাবে ডিজিটাল সংস্কার বাস্তবায়ন করেছিলেন, তিনি বলছেন যে, পাকিস্তানের সাইবার স্পেস নিরাপদ নয়।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সাইবারস্পেসের অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ক্ষমতা পাকিস্তানের নেই। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যু। পাকিস্তানকে রাজনৈতিক উত্তেজনার ঊর্ধ্বে উঠতে হবে এবং বুঝতে হবে হুমকি আসলে কী।

সাংবাদিক সিরিল আলমাইদা লিখেছেন, ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আমি প্রথম একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিলাম যে, একজন লোক এসে মেশিনের সাহায্যে দু’বার ঘরে তল্লাশি চালায় এবং সমস্ত ডিজিটাল গ্যাজেট দূরে সরিয়ে রাখা হয়।

বিজনেস আওয়ার/ ২৬ সেপ্টেম্বর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পাক প্রধানমন্ত্রীর অডিও টেপ নিলামে

পোস্ট হয়েছে : ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শেহবাজ শরিফের একটি অডিও ক্লিপ নিলামে উঠেছে ইন্টারনেটের ডার্ক ওয়েবে। দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাক তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী এ তথ্যটি জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অসতর্কতা ও গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতার ফলেই ফাঁস হয়েছে ১১৫ ঘণ্টার এই অডিও টেপটি।

কী আছে ওই অডিও ক্লিপে? পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ-সহ শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ, আইন মন্ত্রী আজম তরার, পররাষ্ট্র মন্ত্রী রানা সানাউল্লা এবং পাকিস্তানের বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার আয়াজ সাদিকের গলা শোনা গিয়েছে ওই অডিও রেকর্ডিংয়ে।

পাকিস্তানের দৈনিক ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম ক্লিপটিতে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল সম্পর্কে আলোচনা ও পরামর্শ করতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেবকে। দেশের অর্থনীতি সংস্কারে বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াই ইতোমধ্যে নিজের পার্টি পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজে (পিএমএল-এন) বর্তমানে কোনঠাসা অবস্থায় আছেন মিফতাহ। শেহবাজ শরিফ ও মরিয়ম আওরঙ্গজেব পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আছেন।

অডিও ক্লিপে মরিয়মকে বলতে শোনা গেছে— পেট্রোল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর যে ঘোষণা সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী দিয়েছেন, তার সঙ্গে তিনি একেবারেই একমত নন। এই প্রশ্নে এমনকি তার দল পিএমএল-এন ক্ষমতায় থাকল কি থাকল না— তাও গুরুত্বপূর্ণ নয় মরিয়মের কাছে। মিফতার নীতির নিন্দাও করতেও শোনা গেছে মরিয়মকে।

এ ছাড়াও ওই অডিয়ো ক্লিপে এমন আরও অনেক টুকরো টাকরা কথোপকথন ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ অবশ্য ওই ক্লিপকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাননি। ডনকে তিনি বলেছেন, অডিয়ো রেকর্ডিংয়ে এমন কিছু নেই, যাতে আতঙ্কিত হতে হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে নীরবতার কারণে এসব অডিও টেপ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবুও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠছে, যার মূল বিষয় হচ্ছে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ও কর্মকর্তাদের সাইবার নিরাপত্তা।

অতীতেও পাকিস্তানে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়েছে, তবে এগুলোর বেশিরভাগই ছিল ফোন কথোপকথন।

ফাঁস হওয়া অডিও টেপে পিটিআইয়ের পদত্যাগের বিষয়েও কথা বলতে শোনা গেছে পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ নেতাদের।

পাঞ্জাবের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ড. আরসালান খালিদ বলেছেন, আসল প্রশ্ন হলো, ১০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রেকর্ডিং কীভাবে হলো? প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কি গোয়েন্দা যন্ত্র বসানো হয়েছিল?

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘরে পররাষ্ট্রনীতিসহ সব স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, তাহলে কি এই সব তথ্যও হ্যাকারদের কাছে আছে? এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটা পাকিস্তানের ওপর সাইবার হামলা।

উমর সাইফ, যিনি পূর্ববর্তী শেহবাজ শরিফ সরকারের সময় পাঞ্জাবে ডিজিটাল সংস্কার বাস্তবায়ন করেছিলেন, তিনি বলছেন যে, পাকিস্তানের সাইবার স্পেস নিরাপদ নয়।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সাইবারস্পেসের অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ক্ষমতা পাকিস্তানের নেই। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যু। পাকিস্তানকে রাজনৈতিক উত্তেজনার ঊর্ধ্বে উঠতে হবে এবং বুঝতে হবে হুমকি আসলে কী।

সাংবাদিক সিরিল আলমাইদা লিখেছেন, ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আমি প্রথম একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিলাম যে, একজন লোক এসে মেশিনের সাহায্যে দু’বার ঘরে তল্লাশি চালায় এবং সমস্ত ডিজিটাল গ্যাজেট দূরে সরিয়ে রাখা হয়।

বিজনেস আওয়ার/ ২৬ সেপ্টেম্বর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: