বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: মানুষের দুনিয়ার জীবন একেবারেই ক্ষণস্থায়ী। আল্লাহর কাছে এ জীবনের মূল্য একেবারেই তুচ্ছ। হজরত ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘বান্দার প্রাণ উষ্ঠাগত (বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম) না হওয়া পর্যন্ত অবশ্যই আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।’ -সুনানে তিরমিজি : ৩৫৩৭
চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী, মহাপবিত্র, সর্বজ্ঞানী ও সর্বশ্রোতা, সীমাহীন অনুগ্রহকারী মহান রব বলেছেন, ‘আমার বান্দাদের জানিয়ে দাও, আমি বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সুরা হিজর : ৪৯
কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তার কাছে তওবা করে এবং তিনি তাদেরকে ভালোবাসেন যারা নিজেদেরকে পবিত্র করে।’ -সুরা আল বাকারা : ২২২
আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘তবে কি তারা আল্লাহর কাছে তওবা করবে না (ফিরে আসবে না), তার কাছে ইস্তেগফার করবে না (ক্ষমাপ্রার্থনা করবে না)? আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সুরা মায়িদা : ৭৪
হাদিসে এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমার অন্তরে কখনও কখনও অলসতা দেখা দেয়, তাই আমি দৈনিক ১০০ বার আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকি।’ -সহিহ মুসলিম : ৬৭৫১
হজরত হাসান আল বসরি (রহ.) বলেন, ‘তোমার জীবনে ইস্তিগফারের পরিমাণ বৃদ্ধি করো, কারণ তুমি জানো না, কোন দিকে আল্লাহতায়ালার রহমত তোমার ওপর অবতীর্ণ হবে।’
আসুন দেখে নেই ইস্তিগফার মানুষের জীবনে কি কি পরিবর্তন আনতে পারে-
১. ইস্তিগফারে দুঃখ-দুঃশ্চিন্তা দূর হয়।
২. ইস্তিগফারে দোয়ার উত্তর আসে।
৩. ইস্তিগফার ক্ষমার দরজা খুলে দেয়।
৪. ইস্তিগফার রিজিকের দুয়ার খুলে দেয়।
৫. ইস্তিগফার বিয়ে সহজ করে দেয়।
৬. ইস্তিগফার সন্তান-সন্তানাদি আসতে সাহায্য করে।
৭. ইস্তিগফার সম্পদে বরকত আনে।
৮. ইস্তিগফার হৃদয়কে কোমল করে।
আপনার জীবনে যদি ওপরের সমস্যাগুলোর অন্তত যেকোনো একটি সমস্যা বিদ্যমান থাকে, তাহলে ইস্তিগফারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। আপনার জীবনের চেঞ্জ আপনি নিজেই উপলব্ধি করতে পারবেন- ইনশাআল্লাহ।
হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার করবে, আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫২০
‘শয়তান (আল্লাহর কাছে) বলল, হে মহান প্রতিপালক, তোমার ইজ্জতের কসম! আমি তোমার বান্দাদের প্রতিনিয়ত গোমরাহ করতে থাকব, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দেহে রূহ থাকবে। তখন আল্লাহ বললেন, আমার ইজ্জত, আমার মর্যাদা ও আমার সুউচ্চ অবস্থানের কসম! আমার বান্দা আমার কাছে যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে থাকবে, আমি সর্বদা তাদেরকে ক্ষমা করতে থাকব।’ -সহিহ আত তারগীব : ১৬১৭
হাশরের ময়দানে নিজ আমলনামা দেখে কি হাসতে চান? তাহলে শুনুন, ‘যে ব্যক্তি নিজ আমলনামা দেখে খুশি হতে চায়, সে যেন বেশি করে ইস্তেগফার করে।’ -সিলসিলা সহিহাহ : ২২৯৯
‘সুসংবাদ তার জন্য, যে তার আমলনামায় অনেক বেশি ইস্তিগফার পেয়েছে।’ -সহিহুল জামে : ৩৯৩০
বিজনেস আওয়ার/৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ