আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়াকে সংযোগকারী ইউরোপের দীর্ঘতম সেতুতে তেল ট্যাংকারবাহী রেলে আগুন লেগে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে। বিস্ফোরণে সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উল্লাস প্রকাশ করেছে ইউক্রেনের শাসকগোষ্ঠী।
রাশিয়ার অ্যান্টি টেররিজম কমিটি জানিয়েছে, শনিবার (৮ অক্টোবর) মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৭ মিনিটে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
রাশিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদ বিবিসি জানিয়েছে, ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ব্রিজে প্রথমে একটি ট্রাক বিস্ফোরণ হয়।
বিবিসি জানায়, বিস্ফোরণের পরপরই একে একে উল্লাস প্রকাশ করা শুরু করে ইউক্রেনের সরকারি কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে লিখেছেন: ‘কেবল শুরু’।
বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো দায় স্বীকার না করলেও মিখাইল পোডোলিয়াক বলেছেন, যা কিছু বেআইনি তা অবশ্যই ধ্বংস হবে। যা কিছু কেড়ে নেয়া হয়েছে তা অবশ্যই ইউক্রেনে ফেরত আসবে। যা কিছু দখল করেছে রাশিয়া সেখান থেকে তাদের বহিষ্কার করা হবে। এদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ব্রিজ বিস্ফোরণের সঙ্গে এপ্রিলে মিসাইলের আঘাতে ডুবে যাওয়া রাশিয়ার বিখ্যাত মসকোভা জাহাজের সঙ্গে তুলনা করেছে। তারা লিখেছে, ‘রাশিয়ার অপশক্তির দুই কুখ্যাত প্রতীকের সমাপ্তি ঘটেছে। এর পর কী!’
২০১৮ সালের পুতিনের হাতে উদ্বোধন হওয়া ক্রিমিয়ার এই ব্রিজ ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চলে সামরিক সরঞ্জাম, যুদ্ধাস্ত্র, সেনা সদস্য পরিবহনে ব্যবহার করা হতো। এই ব্রিজটিকে ইউক্রেনের অধিবাসীরা ঘৃণার চোখে দেখে। তা স্পষ্ট বোঝা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়ায়। ব্রিজ বিস্ফোরণের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চরম উল্লাস প্রকাশ করেছেন তারা। এদিকে ক্রিমিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, বিস্ফোরণের পর রোড এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ফেরি সার্ভিস চালুর কথা জানিয়েছে তারা।
ক্রিমিয়ার সংসদের স্পিকার ভ্লাদিমির কোনস্টান্টিনভ বিস্ফোরণের ঘটনায় ইউক্রেনকে দায়ী করে বলেছেন, ইউক্রেনের শয়তানি আর তাদের কালো হাত এই ব্রিজ বিস্ফোরণে কাজে লাগিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ে মধ্যে এই ব্রিজ সংস্কার করা হবে। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পুতিন জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনে নির্দেশ দিয়েছেন।
ক্রিমিয়া সেতু বা কের্চ স্ট্রেইট সেতু নামে পরিচিত ইউরোপের দীর্ঘতম এ সেতুতে একটি সড়কপথ ও একটি রেলপথ রয়েছে। চার বছর আগে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি তৈরি করা হয়। এই সেতু তৈরিতে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করে রাশিয়া। ইউরোপের শতাব্দীর সর্বশেষ্ঠ নির্মাণ বলে অবিহিত করে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো।
বিজনেস আওয়ার/ ০৮ অক্টোবর,২০২২/এএইচএ