আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার (৮ অক্টোবর) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শিল্প শহর জাপোরিঝিয়ায় সাতটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এক শিশুসহ অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে।
দক্ষিণ ফ্রন্টের আর্টিলারি যুদ্ধ থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) দূরে বৃহস্পতিবার ভোরের আগে শহরের কেন্দ্রে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা টেলিগ্রামে বলেছে, ‘মোট ১৭ জন নিহত হয়েছে।’ তাদের মধ্যে এক শিশুও রয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপোরিঝিয়ায় রাশিয়া অন্তত ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে ৯তলা একটি ভবন আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাতারাতি ধসে পড়েছে অন্য পাঁচটি আবাসিক ভবন।
গভর্নর আলেক্সান্ডার জানান, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও লোক আটকে থাকতে পারে। ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে। এরই মধ্যে আটজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে আনাতোলি কুর্তেভ নামে ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন যে, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। যদিও স্বতন্ত্রভাবে এসব খবরের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বার্তা সংস্থা।
এদিকে বিস্ফোরণের পর ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডকে যুক্ত করা একমাত্র সেতুটি যান চলাচলের জন্য আংশিকভাবে খুলে দেয়া হয়েছে এবং শিগগিরই ট্রেন চলাচলও শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
রিপাবলিক অব ক্রিমিয়ার প্রধান সের্গেই আকসিওনভ এক টেলিগ্রাম পোস্টে জানান, ক্রিমিয়া সেতু দিয়ে যান চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাড়ি এবং বাস চলাচলের জন্য সেতুটি চালু করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, ক্রিমিয়া সেতুতে পুনরায় যানবাহন চলাচল শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ও। প্রাথমিকভাবে উভয় দিকে (রাশিয়া-ক্রিমিয়া) চলাচলের জন্য সেতুর একটি লেন চালু রয়েছে। এর আগে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে গঠিত রুশ কমিটি শনিবার (৮ অক্টোবর) জানায়, সেতুর ওপর একটি ট্রাকে বিস্ফোরণের ফলে ক্রিমিয়ার দিকে যাওয়া একটি ট্রেনের ৭টি জ্বালানি ট্যাংকে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বিস্ফোরণের কারণে সেতুটির ক্ষতির পরিমাণ ২০০-৫০০ মিলিয়ন রুবল (৩.২ থেকে ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) হতে পারে বলে জানিয়েছে অল-রাশিয়ান ইউনিয়ন অব ইন্স্যুরার্স।
ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর ইউক্রেনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উল্লাস করলেও তারা এর দায় স্বীকার করেননি। তবে এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী উরমাস রেইনসালু কিয়েভের বিশেষ অপারেশন ইউনিটকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, যারা এ ‘অভিযানের’ পেছনে রয়েছে বলে ধারণা অনেকের।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডকে সংযোগকারী ক্রিমিয়া সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। ২০১৮ সালে সেতুটি উদ্বোধন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বিজনেস আওয়ার/ ০৯ অক্টোবর,২০২২/ এসএস