বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কোটা সুবিধা পেতে আদালতে হলফনামা করে নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে আটক হয়েছেন এনআইডি জালিয়াতি করে শশুর-শাশুড়িকে নিজের পিতা-মাতা বানানো আলোচিত সেই গৃহবধূ সোনালী খাতুন।
সোমবার (১০ অক্টোবর) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মজনু মিয়ার আদালতে হলফনামা করতে যান তিনি। এ সময় ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে হলফনামা করার চেষ্টার অপরাধে তাকে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে আদালত।
এ ঘটনায় আদালতের বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী বাদী হয়ে রাতেই সোনালী খাতুনসহ ৩ জনকে আসামি করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। আসামিরা হলেন- সোনালী খাতুন, নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু এবং উলিপুর পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) নুরুল হুদা।
এর আগে, গৃহবধূ সোনালীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নেবার উদ্দেশ্যে নিজের শশুর বীরমুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক ও শাশুড়ি জমিলা বেগমকে নিজের পিতা-মাতা বানিয়ে উপজেলার সাপখাওয়া দাখিল মাদরাসায় ২০১০-১১ সনে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হন। এবং ২০১৩ সালে থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরে ২০১৪ সালে ভোটার হালনাগাদ করার সময় তিনি সেই এসএসসি সনদ দেখিয়ে ভোটার হন।
সোনালী খাতুন সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটি নাওডাঙা আমিরটারী তালেবেরহাট গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা দম্পত্তির বড় ছেলে আনিছুর রহমানের স্ত্রী। তিনি ২০১২ সাল থেকে রংপুর বেতারে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করছেন।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, সোমবার দুপুরে অভিযুক্ত গৃহবধূ সোনালী নিজের ও তার শশুর-শাশুড়ির নাম পরিবর্তন করে তার প্রকৃত পিতা- মাতার নাম দিয়ে হলফনামা করতে যান। তার দাখিলকৃত কাগজপত্রে তিনি নাম ও জন্ম তারিখ ১৯৯৪ সাল পরিবর্তন করে নতুন জন্ম তারিখ ১৯৯০ সাল দেখিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি জন্মসনদ দাখিল করেন। তার সেই জন্ম সনদের তথ্য ব্যবহার করে নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু জ্ঞাতসারেই তাকে নাগরিকত্ব সনদ প্রদান করেন। এছাড়াও তার দাখিলকৃত কাজি কর্তৃক সরবরাহকৃত কাবিন নামায় বয়সের ঘর পূরণে বাধ্যতামূলক থাকলেও সেটি ফাঁকা রেখেই কাজি কাবিননামার প্রতিলিপি সরবরাহ করেছেন। সরবরাহকৃত সকল সরকারি কাগজপত্র জাল ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ায় আদালত সোনালী খাতুনকে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন এবং আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।
এজাহার পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, সোনালী খাতুনকে থানায় রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
বিজনেস আওয়ার/১১ অক্টোবর, ২০২২/এএইচএ