স্পোর্টস ডেস্ক: ফুটবলের ঈশ্বর দিয়াগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা। স্বনামেই বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত। ফুটবলারদের মধ্যে সর্বকালের সেরা দু’জনের একজন। ফুটবলের ঈশ্বর ম্যারাডোনার জীবনটা রূপকথার মতো। উত্থান-পতনে পরিপূর্ণ। হাসি-আনন্দে ব্যস্ত থাকা এই কিংবদন্তি এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন দুই বছর হলো।
১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েন্স আইরেসের লানুসের ভিয়া ফিয়োরিতোর এক বস্তিতে আর্জেন্টাইন এই জাদুকরের জন্ম। কিংবদন্তি ফুটবল ঈশ্বর দিয়াগো ম্যারাডোনা কারও কাছে তিনি সাক্ষাত নরকের দূত, কারও কাছে ঈশ্বর। যেভাবেই দেখা হোক না কেন, ম্যারাডোনা ছাড়া অপূর্ণই থেকে যাবে ফুটবল।
মাত্র দুই দশকের পেশাদার ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা খেলেছেন ছয়টি ক্লাবে। ষোল বছর বয়সে পা দেয়ার ঠিক দশদিন আগে নিজ শহরের ক্লাব আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে অভিষেক ঘটে তার, বর্তমানে হোম গ্রাউন্ডের নামকরণ হয়েছে ম্যারাডোনারই নামে।
তরুণ বয়সের কারণে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও ১৯৮২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে চাপান ম্যারাডোনা। ব্রাজিলের বিপক্ষে লাল কার্ড পেয়ে শেষ হয় তার আসর। পরের বিশ্বকাপে মেক্সিকোতে বিশ্বকে দেখান তার সামর্থ্য। তার নৈপুণ্য ও নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো আর্জেন্টিনা জিতে নেয় বিশ্বকাপ। তত দিনে বিশ্ব ফুটবলে সবার ওপরে একটিই নাম দিয়াগো ম্যারাডোনা।
এরপর ১৯৯০ বিশ্বকাপেও দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। এই আসরে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হন এই ফুটবল কিংবদন্তি। ফলে ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলেও স্বাভাবিক ছন্দে দেখা যায়নি ম্যারাডোনাকে। ২০ বছরের আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ক্যারিয়ারে আর্জেন্টাইন এই মহাতারকা মোট গোল করেছেন ৩৪৬টি।
ক্যারিয়ারে কোচিংও করেছেন ম্যারাডোনা। ২০০৮ সালে ছিলেন মেসিদের কোচ। সেবার নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আর্জেন্টিনা নিশ্চিত করে ২০১০ বিশ্বকাপের টিকিট। বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার দল কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে হজম ৪ গোল হজম করে বিদায় নেয়।
২০২০ সালে বুয়েনোস আইরেসের হাসপাতালের আইসোলেশনে থেকে ৬০তম জন্মদিন পালন করেন ‘এল দিয়াগো’। তবে কে জানত, তার এক মাসের মধ্যেই না-ফেরার দেশে পাড়ি জমাবেন বিশ্বকাপজয়ী এ কিংবদন্তি। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দিয়াগো ম্যারাডোনা।
বিজনেস আওয়ার/৩০ অক্টোবর, ২০২২/এএইচএ