ঢাকা , সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুজরাটে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে নদীতে, মৃত বেড়ে ১৪১

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২
  • 35

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের মোরবিতে নদীর উপর প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো একটি ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকালে এক প্রতিবেদনে সবশেষ আপডেটে নিহতের এ সংখ্যা জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এছাড়া এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও কয়েকজনের অনুসন্ধান চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, গুজরাটের মোরবি জেলার মাচ্ছু নদীতে প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক ওই ঝুলন্ত সেতু রোববার ভেঙে পড়ে। মেরামতের পর চারদিন আগে এই সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। ভেঙে পড়ার সময় পাঁচ শতাধিক মানুষ সেতুতে ছিলেন।

এনডিটিভি বলছে, গুজরাট রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঝুলন্ত সেতুটি রোববার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ভেঙে পড়ে। ঘটনায় সময় সেতুতে প্রায় ৫০০ জন লোক ছট পূজার কিছু রীতি পালনের জন্য জড়ো হয়েছিলেন।

দুর্ঘটনার পরপরই প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৪০ বলে জানানো হয়। পরে রাতেই তা সংশোধন করে ৯১ বলে প্রকাশ করা হয়। আর সোমবার সকালে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ঐতিহাসিক এই সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন তিন দিনের সফরে গুজরাটে অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া সোমবার তিনি দুর্ঘটনাস্থলে যেতে পারেন বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্য সরকারও নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে চার লাখ এবং আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মোরবি পৌরসভার কর্মকর্তারা বলেছেন, যথাযথ ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় একটি বেসরকারি ট্রাস্ট সেতুটির মেরামত ও সংস্কার কাজ করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা না দিয়েই ওই ট্রাস্ট সেতুটি খুলে দেয়।

দুর্ঘটনার পরপরই ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফ-এর পাঁচটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকেও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত করে অভিযান জোরালো করা হয়।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর প্রায় ১৯ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের কার্যালয় জানিয়েছে, ‘সেতু ধসে আহতদের চিকিৎসার জন্য সিভিল হাসপাতালে একটি পৃথক ওয়ার্ডও স্থাপন করা হয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো সেতুটি ভেঙে পড়ার সময় সেটিতে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু ছিল। সেতুর তার ছিঁড়ে যাওয়ার পর অনেক লোক নদীতে পড়ে যায়। আর এতেই হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য, প্রায় ১৫০ বছর আগে নির্মিত মোরবির ঝুলন্ত এই সেতু ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায়ও রয়েছে। গুজরাটের স্থানীয় নববর্ষ উপলক্ষে মেরামতের পর গত চারদিন আগে (২৬ অক্টোবর) সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।

বিজনেস আওয়ার/৩১ অক্টোবর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

গুজরাটে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে নদীতে, মৃত বেড়ে ১৪১

পোস্ট হয়েছে : ১০:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের মোরবিতে নদীর উপর প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো একটি ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকালে এক প্রতিবেদনে সবশেষ আপডেটে নিহতের এ সংখ্যা জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এছাড়া এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও কয়েকজনের অনুসন্ধান চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, গুজরাটের মোরবি জেলার মাচ্ছু নদীতে প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক ওই ঝুলন্ত সেতু রোববার ভেঙে পড়ে। মেরামতের পর চারদিন আগে এই সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। ভেঙে পড়ার সময় পাঁচ শতাধিক মানুষ সেতুতে ছিলেন।

এনডিটিভি বলছে, গুজরাট রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঝুলন্ত সেতুটি রোববার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ভেঙে পড়ে। ঘটনায় সময় সেতুতে প্রায় ৫০০ জন লোক ছট পূজার কিছু রীতি পালনের জন্য জড়ো হয়েছিলেন।

দুর্ঘটনার পরপরই প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৪০ বলে জানানো হয়। পরে রাতেই তা সংশোধন করে ৯১ বলে প্রকাশ করা হয়। আর সোমবার সকালে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ঐতিহাসিক এই সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন তিন দিনের সফরে গুজরাটে অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া সোমবার তিনি দুর্ঘটনাস্থলে যেতে পারেন বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্য সরকারও নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে চার লাখ এবং আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মোরবি পৌরসভার কর্মকর্তারা বলেছেন, যথাযথ ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় একটি বেসরকারি ট্রাস্ট সেতুটির মেরামত ও সংস্কার কাজ করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা না দিয়েই ওই ট্রাস্ট সেতুটি খুলে দেয়।

দুর্ঘটনার পরপরই ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফ-এর পাঁচটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকেও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত করে অভিযান জোরালো করা হয়।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর প্রায় ১৯ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের কার্যালয় জানিয়েছে, ‘সেতু ধসে আহতদের চিকিৎসার জন্য সিভিল হাসপাতালে একটি পৃথক ওয়ার্ডও স্থাপন করা হয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো সেতুটি ভেঙে পড়ার সময় সেটিতে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু ছিল। সেতুর তার ছিঁড়ে যাওয়ার পর অনেক লোক নদীতে পড়ে যায়। আর এতেই হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য, প্রায় ১৫০ বছর আগে নির্মিত মোরবির ঝুলন্ত এই সেতু ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায়ও রয়েছে। গুজরাটের স্থানীয় নববর্ষ উপলক্ষে মেরামতের পর গত চারদিন আগে (২৬ অক্টোবর) সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।

বিজনেস আওয়ার/৩১ অক্টোবর,২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: