ঢাকা , সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেপলের ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ আত্মসাৎ, চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২
  • 37

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিদেশিদের আইডেন্টিটি হ্যাক করে অননুমোদিত পেপলে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)৷ গ্রেফতাররা হলেন- ফয়সাল শেখ (৩০) এবং রাজ মোহাম্মদ শেখ (৩১)।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম রাজধানী হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ৯২ লাখ টাকা, ৫৯টি মোবাইল ফোন, ১টি পকেট রাউটার ও ২টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ।

তিনি বলেন, গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় কয়েকজন প্রতারক সদস্য বিদেশিদের পরিচয় চুরি করে পেপলে অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে আসছে। যা বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত নয়।

গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতারকরা পেপলে অ্যাকাউন্টে প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ মজুত আছে মর্মে গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে হারুন বলেন, গ্রেফতাররা পারস্পরিক যোগসাজশে ভুয়া লিংক ব্যবহার করে বিদেশিদের তথ্য চুরি করে। এরপর সেসব তথ্য ব্যবহারে পেপলে অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে আসছিল।

বাংলাদেশে যারা ফ্রিল্যান্সার তারা যে আয় করেন তা অনেকেই সহজে ডলার থেকে টাকায় রুপান্তর করতে পারেন না। তারা তখন গ্রেফতারদের মাধ্যমে স্বস্তায় ডলার পেপলে অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। তারা পেপলে অ্যাকাউন্টের ডলার আবার জুয়ারিদের কাছে স্বস্তায় বিক্রি করে। ১১২ টাকার ডলার ৮৫ টাকায় কিনে জুয়াড়িরা জুয়ায় ডলার বিনিয়োগ করছে। এতে করে ফ্রিল্যান্সাররা যেমন ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না, তেমনি বাংলাদেশ সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কখনো আবার গ্রেফতাররা পেপলে অ্যাকাউন্ট থেকে ডলারকে টাকায় রুপান্তর করতে নগদ, বিকাশ ও বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও অ্যাপস্ ব্যবহার করে।

এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন বলেন, বিদেশি আইডেন্টিটি চুরি করে তা ব্যবহার অবৈধ। এটি বাংলাদেশে ব্যবহারও অবৈধ। গ্রেফতার ফয়সাল শেখ ৫৯টি মোবাইল ব্যবহার করেন। একেক মোবাইলে একেক লেনদেন হতো। যা এক রকম ডিজিটাল হুন্ডি।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। তাদের আমরা রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। তাদের মতো আরও কারা বাংলাদেশে বসে বিদেশি আইডেন্টিটি চুরি করে পেপলে অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে ডিজিটাল হুন্ডির ব্যবসা করছে, তা জানার চেষ্টা করা হবে। কিছু নাম ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি। আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনবো।

বিজনেস আওয়ার/০১ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পেপলের ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ আত্মসাৎ, চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার

পোস্ট হয়েছে : ০৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিদেশিদের আইডেন্টিটি হ্যাক করে অননুমোদিত পেপলে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)৷ গ্রেফতাররা হলেন- ফয়সাল শেখ (৩০) এবং রাজ মোহাম্মদ শেখ (৩১)।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম রাজধানী হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ৯২ লাখ টাকা, ৫৯টি মোবাইল ফোন, ১টি পকেট রাউটার ও ২টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ।

তিনি বলেন, গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় কয়েকজন প্রতারক সদস্য বিদেশিদের পরিচয় চুরি করে পেপলে অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে আসছে। যা বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত নয়।

গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতারকরা পেপলে অ্যাকাউন্টে প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ মজুত আছে মর্মে গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে হারুন বলেন, গ্রেফতাররা পারস্পরিক যোগসাজশে ভুয়া লিংক ব্যবহার করে বিদেশিদের তথ্য চুরি করে। এরপর সেসব তথ্য ব্যবহারে পেপলে অ্যাকাউন্ট খুলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে আসছিল।

বাংলাদেশে যারা ফ্রিল্যান্সার তারা যে আয় করেন তা অনেকেই সহজে ডলার থেকে টাকায় রুপান্তর করতে পারেন না। তারা তখন গ্রেফতারদের মাধ্যমে স্বস্তায় ডলার পেপলে অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। তারা পেপলে অ্যাকাউন্টের ডলার আবার জুয়ারিদের কাছে স্বস্তায় বিক্রি করে। ১১২ টাকার ডলার ৮৫ টাকায় কিনে জুয়াড়িরা জুয়ায় ডলার বিনিয়োগ করছে। এতে করে ফ্রিল্যান্সাররা যেমন ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না, তেমনি বাংলাদেশ সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কখনো আবার গ্রেফতাররা পেপলে অ্যাকাউন্ট থেকে ডলারকে টাকায় রুপান্তর করতে নগদ, বিকাশ ও বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও অ্যাপস্ ব্যবহার করে।

এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন বলেন, বিদেশি আইডেন্টিটি চুরি করে তা ব্যবহার অবৈধ। এটি বাংলাদেশে ব্যবহারও অবৈধ। গ্রেফতার ফয়সাল শেখ ৫৯টি মোবাইল ব্যবহার করেন। একেক মোবাইলে একেক লেনদেন হতো। যা এক রকম ডিজিটাল হুন্ডি।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। তাদের আমরা রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। তাদের মতো আরও কারা বাংলাদেশে বসে বিদেশি আইডেন্টিটি চুরি করে পেপলে অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে ডিজিটাল হুন্ডির ব্যবসা করছে, তা জানার চেষ্টা করা হবে। কিছু নাম ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি। আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনবো।

বিজনেস আওয়ার/০১ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: