ঢাকা , বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চার শর্তে চেক দিয়ে শেয়ার কেনার সুযোগ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২
  • 41

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থা উত্তোরনে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে চেক জমা দিয়েই শেয়ার কেনার সুযোগ করে দিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এক্ষেত্রে চারটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় এই এই সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

গত ১১ অক্টোবর গ্রাহকের চেক ব্রোকারেজ হাউজের হিসাবে নগদায়ন বা জমা না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারী লেনদেন করতে পারবে না বলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে ডিএসই চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে বিএসইসির সংযুক্ত করা এক নির্দেশনার বিষয়ে বলা হয়, গত ২২ সেপ্টেম্বর কমিশনার আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে ডিএসইর সিআরও এবং বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কমিশনের এসআরআই বিভাগের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক ঊভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে আগামি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে বলা হয়।

ওই গৃহিত সিদ্ধান্তের মধ্যে ১ নম্বরে ছিল, প্রতি ট্রেকহোল্ডার বিনিয়োগকারীর চেক নগদায়নের পরে ক্রয় আদেশ বাস্তবায়ন করবে। এক্ষেত্রে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের নির্দেশনা পরিপালন করতে বলা হয়েছিল।

ডিএসইর প্ররোচনায় বিএসইসির এমন হঠকারি সিদ্ধান্তের খবর ১৩ অক্টোবর বাজারে ছড়িয়ে পড়লে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যাতে ওইদিন ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট কমে যায়। এরপর থেকে টানা পতনে রয়েছে বাজার। এই পরিস্থিতিতে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের দাবির আলোকে চেকে লেনদেন করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসল বিএসইসি। এতে করে আপাতত শেয়ারবাজারের জন্য একটি বড় নেতিবাচক বিষয় কেটে গেল বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

আজকের বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের থেকে চেক, পে অর্ডার ডিমান্ড ড্রাফট বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত অন্য কোনো মাধ্যমে টাকা পেলে, সেই টাকা নগদ করার আগে লেনদেন করতে পারবে।’

শিবলী রুবাইয়াত চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে এতোদিন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না বিএসইসি। তিনি দেশে ফেরার পর প্রথম কর্মদিবসিই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসেন।

চেকে লেনদেন করার সুযোগ দেওয়ার পেছনে চার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ১. বিনিয়োগকারীর জমা দেয়া চেক যদি ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংক সেদিন বা পরের কর্মদিবসে ব্যাংকে জমা না দেয়, তাহলে পরের এক বছরের জন্য আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারীর সুযোগ সুবিধা হারাবে তারা।

২. সেই চেক যদি বাউন্স করে, অর্থাৎ ব্যাংক হিসাবে যদি সমপরিমাণ টাকা পাওয়া না যায়, তখন ব্রোকারেজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের হিসাব থেকে সে টাকা দিতে হবে। সেটিও যদি না হয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান আইপিওতে এক বছরের জন্য সব সুবিধা হারাবে।

৩. যে গ্রাহকের চেক বাউন্স করবে, তিনি পরের এক বছর শেয়ারবাজারে আর লেনদেন করতে পারবেন না।

৪. প্রতিটি স্টক ব্রোকারকে ডিজঅনার চেকের তালিকা মাস শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বিএসইসিকে পাঠাতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/০১ নভেম্বর, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চার শর্তে চেক দিয়ে শেয়ার কেনার সুযোগ

পোস্ট হয়েছে : ০৮:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থা উত্তোরনে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে চেক জমা দিয়েই শেয়ার কেনার সুযোগ করে দিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এক্ষেত্রে চারটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় এই এই সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

গত ১১ অক্টোবর গ্রাহকের চেক ব্রোকারেজ হাউজের হিসাবে নগদায়ন বা জমা না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারী লেনদেন করতে পারবে না বলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে ডিএসই চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে বিএসইসির সংযুক্ত করা এক নির্দেশনার বিষয়ে বলা হয়, গত ২২ সেপ্টেম্বর কমিশনার আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে ডিএসইর সিআরও এবং বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কমিশনের এসআরআই বিভাগের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক ঊভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে আগামি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে বলা হয়।

ওই গৃহিত সিদ্ধান্তের মধ্যে ১ নম্বরে ছিল, প্রতি ট্রেকহোল্ডার বিনিয়োগকারীর চেক নগদায়নের পরে ক্রয় আদেশ বাস্তবায়ন করবে। এক্ষেত্রে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের নির্দেশনা পরিপালন করতে বলা হয়েছিল।

ডিএসইর প্ররোচনায় বিএসইসির এমন হঠকারি সিদ্ধান্তের খবর ১৩ অক্টোবর বাজারে ছড়িয়ে পড়লে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যাতে ওইদিন ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট কমে যায়। এরপর থেকে টানা পতনে রয়েছে বাজার। এই পরিস্থিতিতে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের দাবির আলোকে চেকে লেনদেন করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসল বিএসইসি। এতে করে আপাতত শেয়ারবাজারের জন্য একটি বড় নেতিবাচক বিষয় কেটে গেল বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

আজকের বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের থেকে চেক, পে অর্ডার ডিমান্ড ড্রাফট বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত অন্য কোনো মাধ্যমে টাকা পেলে, সেই টাকা নগদ করার আগে লেনদেন করতে পারবে।’

শিবলী রুবাইয়াত চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে এতোদিন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না বিএসইসি। তিনি দেশে ফেরার পর প্রথম কর্মদিবসিই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসেন।

চেকে লেনদেন করার সুযোগ দেওয়ার পেছনে চার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ১. বিনিয়োগকারীর জমা দেয়া চেক যদি ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংক সেদিন বা পরের কর্মদিবসে ব্যাংকে জমা না দেয়, তাহলে পরের এক বছরের জন্য আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারীর সুযোগ সুবিধা হারাবে তারা।

২. সেই চেক যদি বাউন্স করে, অর্থাৎ ব্যাংক হিসাবে যদি সমপরিমাণ টাকা পাওয়া না যায়, তখন ব্রোকারেজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের হিসাব থেকে সে টাকা দিতে হবে। সেটিও যদি না হয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান আইপিওতে এক বছরের জন্য সব সুবিধা হারাবে।

৩. যে গ্রাহকের চেক বাউন্স করবে, তিনি পরের এক বছর শেয়ারবাজারে আর লেনদেন করতে পারবেন না।

৪. প্রতিটি স্টক ব্রোকারকে ডিজঅনার চেকের তালিকা মাস শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বিএসইসিকে পাঠাতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/০১ নভেম্বর, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: