বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: অবৈধভাবে আসা বা চোরাচালানের সময় জব্দ করা সোনা নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিলামের মাধ্যমে ২৫ কেজি বা ২ হাজার ১৭০ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শুধুমাত্র সনদধারী স্বর্ণের ব্যবসায়ীরা নিলামে অংশ নিতে পারবেন।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিলামে স্বর্ণ বিক্রির বিষয়টি জানা গেছে।
জানা যায়, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অবৈধ বা চোরাচালানের স্বর্ণ জব্দ করে। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলাও করে অধিদফতর। জব্দ করা সেই স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকে। মামলার রায় সরকারের অনুকূলে গেলে পরে এসব স্বর্ণ নিলামে বিক্রি করা হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী খাতে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি আর স্থায়ী খাতে রয়েছে ১৫৯ কেজি স্বর্ণ রয়েছে। এখন স্থায়ী খাত থেকে ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নিলামে অংশ নিতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স; টিআইএন সনদ; মূসক নিবন্ধন; বিআইএন সনদ; স্বর্ণ ক্রয়, মজুত ও সরবরাহের লাইসেন্স; সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যপদ; আর্থিক সচ্ছলতার বিষয়ে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সনদ; আয়কর পরিশোধের হালনাগাদ সনদ; আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত লিমিটেড কোম্পানি হলে কোম্পানির নিবন্ধন সনদ; মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন, আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন ও পরিচালকদের হালনাগাদ তালিকা জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ১৪ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত আগ্রহী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে দুই হাজার টাকা জমা (অফেরতযোগ্য) দিয়ে দরপত্র শিডিউল কিনতে পারবেন। এ সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। পরে সংস্থাটির কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করে নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্যদের একটি তালিকা করবে। এই পর্যায়ে যেসব স্বর্ণর বার, অলংকার, টুকরা বা পাত বিক্রি করা হবে, তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে স্বর্ণ কতটুকু খাঁটি, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবেন নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান। এ জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একজন স্বর্ণকার বা পরীক্ষক যেতে পারবেন। এই প্রদর্শনের তৃতীয় কর্মদিবসে দরপত্র জমা দিতে হবে। সঙ্গে দরপত্রে উদ্ধৃত মূল্যের আড়াই শতাংশ অর্থ বায়না বা নিরাপত্তা জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে। পরবর্তী সময়ে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ ক্রয়ের কার্যাদেশ দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সব অর্থ জমা দিতে হবে। অর্থ পরিশোধ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্বর্ণ নিতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংক দরদাতা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জামানত বাজেয়াপ্ত ও প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করতে পারবে বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে স্বর্ণের বাজার ও জুয়েলারি ব্যবসায় স্বচ্ছতা ফেরাতে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ আমদানির লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিজনেস আওয়ার/৮ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ