ঢাকা , সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
  • 57

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির শীর্ষ পর্যায় থেকে একাধিকবার সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

এ লক্ষ্যে সরকারের প্রতি ক্রমেই চাপ বাড়াচ্ছে দেশটি।

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষে তিনি খোলামেলাভাবেই বলেছেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও একাধিক অনুষ্ঠানে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তাগিদ দিয়ে আসছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রে রয়েছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। সে কারণে তারা বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে আগ্রহী দেশটি।

মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করেছেন। সে সময় তিনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজনৈতিকদলগুলোকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহ্বান জানান তিনি।

আফরিন আক্তার ঢাকা সফরকালে জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তা নিয়ে তাদর কোনো আগ্রহ নেই। আগামীতে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, সেটা নিয়ে চিন্তাও করে না যুক্তরাষ্ট্র। তারা চায়, নির্বাচন যেন সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়। অতীতের মতো বাংলাদেশে নির্বাচন চায় না বলেও সরকারের কাছে বার্তা দিয়েছে দেশটি।

আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে সরকারী ও বিরোধী দল। আওয়ামী লীগের পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

তবে, বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। এ সময় উভয়পক্ষ এনিয়ে বাগ-বিতণ্ডাও করেছেন। এ সময় আফরিন আক্তার বলেছেন, বিশ্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পপুলার নয়। কেননা বিশ্বে শুধু মাত্র দুইটি দেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সেটা ভালোভাবে নেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তাকে পছন্দ করছে না সরকার।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চায় দুর্বলতা থাকতে পারে, আর সেটা যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ও ভোট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ড. মোমেন। ঢাকার কূটনীতিকদের তিনি কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও আচরণবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দিয়েছেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১২ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির শীর্ষ পর্যায় থেকে একাধিকবার সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

এ লক্ষ্যে সরকারের প্রতি ক্রমেই চাপ বাড়াচ্ছে দেশটি।

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষে তিনি খোলামেলাভাবেই বলেছেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও একাধিক অনুষ্ঠানে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তাগিদ দিয়ে আসছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রে রয়েছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। সে কারণে তারা বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে আগ্রহী দেশটি।

মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করেছেন। সে সময় তিনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজনৈতিকদলগুলোকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহ্বান জানান তিনি।

আফরিন আক্তার ঢাকা সফরকালে জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তা নিয়ে তাদর কোনো আগ্রহ নেই। আগামীতে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, সেটা নিয়ে চিন্তাও করে না যুক্তরাষ্ট্র। তারা চায়, নির্বাচন যেন সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়। অতীতের মতো বাংলাদেশে নির্বাচন চায় না বলেও সরকারের কাছে বার্তা দিয়েছে দেশটি।

আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে সরকারী ও বিরোধী দল। আওয়ামী লীগের পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

তবে, বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। এ সময় উভয়পক্ষ এনিয়ে বাগ-বিতণ্ডাও করেছেন। এ সময় আফরিন আক্তার বলেছেন, বিশ্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পপুলার নয়। কেননা বিশ্বে শুধু মাত্র দুইটি দেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সেটা ভালোভাবে নেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তাকে পছন্দ করছে না সরকার।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চায় দুর্বলতা থাকতে পারে, আর সেটা যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ও ভোট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ড. মোমেন। ঢাকার কূটনীতিকদের তিনি কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও আচরণবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দিয়েছেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১২ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: