1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : user : user
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আইপিডিসির শেয়ার নিয়ে যেভাবে কারসাজি
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৭ অপরাহ্ন

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আইপিডিসির শেয়ার নিয়ে যেভাবে কারসাজি

  • পোস্ট হয়েছে : রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২
print sharing button

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে কারসাজিকর হিসেবে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আবুল খায়ের হিরু। যার সহযোগি হিসেবে তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকে রয়েছেন। যারা শেয়ারবাজারের উন্নতি করতে ও লেনদেন বাড়াতে সিরিজ ট্রেডিং করেছেন বলে শুনানিতে দাবি করেছেন। যার পেছনে অন্যকোন উদ্দেশ্য ছিল না। তবে তাদের এই দাবি অন্যসব কোম্পানির ন্যায় আইপিডিসির শেয়ারের ক্ষেত্রেও কমিশনের কাছে বিবেচনাযোগ্য হয়নি। যে কারনে কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির দায়ে আবুল খায়ের হিরু সংঘবদ্ধ চক্রকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে কমিশন। তবে এটা কারসাজিতে আয়ের চেয়ে অনেক কম।

বিভিন্ন কোম্পানির ন্যায় আবুল খায়ের চক্রটি আইপিডিসি শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে। এই কারসাজিতে তারা ১ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে (২৯ মার্চ – ২৪ এপ্রিল ২০২২) আইপিডিসির ৩৪ টাকার শেয়ার ৫৪.৭০ টাকায় উঠায়। এক্ষেত্রে দর বাড়ানো হয় ৬০.৮৮%। এই দর বৃদ্ধিতে মোহাম্মদ ইউনুসের সোনালি পেপারসহ আবুল খায়ের হিরুর সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত বলে ডিএসইর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এই চক্রের মধ্যে আবুল খায়ের অগ্রনি ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এর এবিএম৬৪৫ কোড থেকে সবচেয়ে বেশি কেনা-বেচা হয়েছে। সে ওইসময় ১ কোটি ৩৮ লাখ শেয়ার কেনে এবং বিক্রি করে ১ কোটি ৫ লাখ।

আইপিডিসির শেয়ার কারসাজিতে আবুল খায়ের হিরু ২০টি বিও পরিচালনা করে। এতে তিনি পিতা আবুল কালাম মাতবর, মাতা আলেয়া বেগম, বোন কনিকা আফরোজ, স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, তার নেতৃত্বাধীন ডিআইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেড, ভাই মোহাম্মদ বাশার ও সাজেদ মাদবর, শ্যালক কাজী ফরিদ হাসান, কাজী ফুয়াদ হাসান ও তানভির নিজামের বিও হিসাব পরিচালনা করেন।

তাদের ২০টি বিও হিসাব রয়েছে-অগ্রনি ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইউসিবি ব্রোকারেজ, ইবিএল সিকিউরিটিজ, ব্র্যাক ইপিএল, এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, সোনালি ইনভেস্টমেন্ট ও মোনার্ক হোল্ডিংসে।

এই কারসাজি চক্রটি গত ৩ এপ্রিল আইপিডিসির শেয়ারে মোট লেনদেন হওয়া ২২৭৫ বারের মধ্যে করেছে ৫০৩ বার বা ২২.১১%। এছাড়া ওইদিন কোম্পানিটির মোট লেনদেন হওয়া ১ কোটি ৩০ লাখ শেয়ারের মধ্যে চক্রটির ছিল ৫৬ লাখ বা মোট লেনদেনের ৪৩.২১%।

চক্রটি তদন্তকালীন অন্যসব দিনের ন্যায় ১০ এপ্রিল ৪২.৫০ টাকায় ১২:৩৪:৫৯-এ সিরিয়াল ট্রেডিং শুরু করে। যা ১২:৪৭:৩১-এ ৪৪.৫০ টাকায় উঠায়। ওই ১২:৩৪:৫৯ থেকে ১২:৪৭:৩১ পর্যন্ত সময়ে লেনদেনকালীন খায়ের গ্রুপ মোট ২৪ লাখ ২৭ হাজার লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে তারাই কেনে ২২ লাখ ৭০ হাজার।

এই লেনদেন থেকে আবুল খায়ের চক্রটি কোম্পানিটির শেয়ার আগের দিনের থেকে দর বাড়াতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে বলে ডিএসইর তদন্ত কমিটি মনে করে। এই প্রক্রিয়ায় খায়ের গ্রুপ ব্যাংকটির শেয়ারকে ২৪ এপ্রিল ৫৪.৭০ টাকায় তুলে।

ওই ২৯ মার্চ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত সময়ে খায়ের গ্রুপ আইপিডিসির ৪ কোটি ৩২ লাখ শেয়ার কেনে। এর বিপরীতে বিক্রি করে ২ কোটি ২৬ লাখ শেয়ার। এতে করে আইপিডিসির শেয়ার বিক্রি থেকে ৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার রিয়েলাইজড গেইন করে। এছাড়া আনরিয়েলাইজড গেইন দাঁড়ায় ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

এভাবে মুনাফা করতে গিয়ে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে আবুল খায়ের চক্রটি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ধারা ১৭(ই)ভি) ভঙ্গ করেছে। এ বিষয়ে চলতি বছরের ২১ আগস্ট কারন দর্শাতে আবুল খায়ের ও সহযোগিদেরকে শুনানিতে তলব করা হয়। শুনানিতে নিজের এবং সহযোগিদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য দেন আবুল খায়ের।

শুনানিতে খায়ের বলেন, বাজারের উন্নতি করতে ও লেনদেন বাড়াতে আমরা বিপুল পরিমাণে লেনদেনের চেষ্টা করেছি। এছাড়া আমাদের অন্যকোন উদ্দেশ্য ছিল না। অন্যসব শেয়ারের ন্যায় ক্যাপিটাল গেইন করার জন্য বিনিয়োগ করি।

তিনি দাবি করেন,কোন অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়াই আমরা ট্রেডারকে আইপিডিসির শেয়ার কেনা ও বেচার জন্য আদেশ দিয়েছিলাম। যেখানে ম্যানুপুলেটিংয়ের কোন উদ্দেশ্য ছিল না।

তিনি বলেন, সবসময় রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস মেনে চলার চেষ্টা করি। আমাদের লেনদেনে শেয়ারবাজারে তারল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে, যা চূড়ান্তভাবে স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বৃদ্ধি করেছে। তারপরেও ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। যা অবহেলার কারনে ও অচ্ছিাকৃতভাবে ঘটেছে। ভবিষ্যতে লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকব।

তার বক্তব্যে উপস্থাপিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে কমিশন মনে করে। যে কারনে তার ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে বিবেচনাযোগ্য হয়নি। এই পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারের উন্নয়ন, বাজারে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা রক্ষার স্বার্থে আবুল খায়ের ও তার সহযোগিদেরকে জরিমানা করা প্রয়োজন এবং সমীচীন বলে কমিশন মনে করে। যে কারনে কমিশন আবুল খায়ের ও তার সহযোগিদেরকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। এই শাস্তির বিষয়ে সম্প্রতি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।

বিজনেস আওয়ার/১৩ নভেম্বর, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো সংবাদ