বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায়, পরিবার ছেড়ে প্রেমের টানে প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পরের পেঁপে বাগান থেকে প্রেমিকার মৃতদেহ উদ্ধার করে কালকিনি থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৮ সালে মাদারীপুরের সদর উপজেলায়। প্রেমিকা ফরিদা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার ১৪ বছর পর আসামি শহিদুল মোল্লাকে (৪২) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায়ের আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শহিদুল মোল্লা উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদী এলাকার মোহাম্মদ মোল্লার ছেলে।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্র জানা যায়, শহিদুলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো মহিষেরচর এলাকার আব্দুল করীম ক্কারীর মেয়ে ফরিদা বেগমের। ২০০৮ সালের ৬ মে সকালে ফরিদা প্রেমিক শহিদুলের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। পরের দিন ৭ মে সকালে কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ ধুয়াসার এলাকার কাদের কবিরাজের পেঁপে বাগান থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে কালকিনি থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত ফরিদার ভাই হান্নান ক্কারী একই দিনে বিকেলে শহিদুল মোল্লাকে ও অজ্ঞাতনামা আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে কালকিনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তৎকালীন কালকিনি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ হারুনর রশীদ ঘটনার তদন্তের পর ২০০৯ সালের ২২ জুন আসামি শহিদুল মোল্লাকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১২ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করেন। পরে বিচারিক আদালতে দীর্ঘ ১৪ বছর যুক্তিতর্ক শেষে উপযুক্ত স্বাক্ষী প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
নিহতের ভাই হান্নান ক্কারী বলেন, আজ ১৪ বছর পর আমার বোনকে হত্যার মামলার রায় পেলাম। আদালতের এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আদালতের কাছে একটাই দাবি রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।
মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, আসামি শহিদুল মোল্লা প্রতারণার মাধ্যমে ভিকটিমকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিয়ে করেনি। পরে ভিকটিমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছি শহিদুল মোল্লা তার প্রেমিকাকে হত্যা করেছে। আজ বিজ্ঞ আদালত আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
আসামি পক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম এ বিষয়ে বলেন, আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।
বিজনেস আওয়ার/১৫ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ