বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: খেজুরের রস আর গুড়ের জন্য দেশের কোন জায়গাটি সবচেয়ে বিখ্যাত? এই প্রশ্নে একটি জেলার নামই বারবার উঠে আসবে, সেটি হলো যশোর। ‘যশোরের যশ, খেজুরের রস’ কথাটি মানুষের মুখে থেকে গেলেও আগের মতো গাছিদের (যারা খেজুর গাছ কাটেন) খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতে দেখা যায় না।
একদিকে ইটভাটা যেমন খেজুর গাছ গিলে খাচ্ছে তেমনি কিছু সংখ্যক গাছি গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে অধিক লাভের আশায় তাতে ভেজাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন। ফলে হারাতে বসেছে যশোরের ঐতিহ্য খেজুর গাছ ও খেজুরের রস। তাই খাঁটি গুড় তৈরি করতে এবং খেজুরের রস ও গুড়ের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে শপথ পাঠ করেছেন গাছিরা।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় যশোরের চৌগাছায় উপজেলা প্রশাসন ও গাছিদের যৌথ উদ্যোগে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে গাছিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভা শেষে গাছিদের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ঈদগাহ মাঠে শপথ পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। গাছিদের মনোনীত একজন গাছি তাদের শপথ পাঠ করান। শপথ পাঠ এবং মতবিনিময় সভায় অংশ নেন প্রায় চার শতাধিক গাছি।
চৌগাছা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা গাছিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কে কয়টি গাছ কেটেছেন সেটি লিখে জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে মোবাইল নম্বরসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেবেন। এটি দিয়ে যাচাই করে প্রতিটি ইউনিয়নের সর্বোচ্চ গাছ কাটা তিনজন গাছিকে পুরস্কৃত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যেন আগামীতে সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা পেতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ভালো গাছিদের দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। নতুন নতুন গাছি সৃষ্টি করতে আপনাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এবং যশোরের খেজুরের রস ও গুড়ের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে নতুন নতুন রাস্তার পাশে খেজুর গাছ লাগানো হবে।
ইউএনও ইরুফা সুলতানার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান। এসময় কয়েকজন গাছি তাদের বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধরে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। এসময় গাছিরা উপজেলা প্রশাসনের এসব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
বিজনেস আওয়ার/১৫ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ