ঢাকা , শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় নবদম্পতির আত্মহত্যা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২
  • 101

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: হবিগঞ্জের লাখাইয়ে প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে নবদম্পতি আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (২০ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার লাখাই ইউনিয়নের টাউনশিপ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

তারা হলেন- মোস্তাফিজুর রহমান হৃদয়ের (৩০) ও তানিয়া বেগম (১৮)। হৃদয় কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কুলহানি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে ও তানিয়া লাখাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের টাউনশিপ এলাকার আনছার মিয়ার মেয়ে।

খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মোবাইলে পরিচয় ও প্রেমের সূত্র ধরে ১৩ দিন আগে তানিয়াকে বিয়ে করেন হৃদয়। বিয়ের পর তানিয়া তাকে শ্বশুরালয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। কিন্তু হৃদয় তাতে রাজি হননি। প্রেমের বিয়ে বাড়িতে মেনে নেবে না বলে তিনি জানান। বাড়িতে তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে বলেও তিনি জানান। রোববার হৃদয় বাড়িতে যেতে চাইলে তানিয়া বেঁকে বসেন তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। হৃদয় তাতে রাজি না হওয়ায় তিনি ঘরে রাখা বিষপান করেন। এ সময় ক্ষোভে তানিয়া নিজেও বিষপান করেন।

এরই জের ধরে তানিয়াকে হৃদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার অনুরোধ করেন স্বজনরা। কিন্তু তা মানেননি তানিয়া। হৃদয়ও একইভাবে তানিয়াকে কাছে পেতে মরিয়া। বার বার বলার পরও তানিয়ার স্বজনরা তাদের সম্পর্কের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ক্ষোভে-অভিমানে ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে ফেলেন হৃদয়। একপর্যায়ে স্বামীকে ছটফট করতে দেখে স্ত্রী তানিয়াও সেই বিষ খান। তাৎক্ষণিক দুজনকেই উদ্ধার করে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গের সামনে তানিয়া বেগমের মা আবিদা বেগম বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান হৃদয়ের আগের স্ত্রী ও ৮ মাসের একটি সন্তান রয়েছে। বিষয়টি গোপন করে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে। বিষয়টি জানার পর আমার মেয়ে হৃদয়ের সংসার করবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে দুজনই বিষ খায়।

হৃদয়ের মামাতো ভাই এহসানুল হক রুবেল বলেন, মোবাইলে রং নম্বরের মাধ্যমে তানিয়ার সঙ্গে হৃদয়ের পরিচয় হয়। তানিয়ার পরিবারের চাপে একপর্যায়ে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। মেয়ের বাড়ির চাপে বিয়ের আগে হৃদয় তার আগের স্ত্রীর গহনাও নিয়ে আসে। আগের বিয়ের কথা জানাজানি হলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ নিয়েই তারা বিষ খায়।

লাখাই থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুনু মিয়া জানান, টাউনশিপ এলাকার বাসিন্দা আনছর মিয়ার মেয়ে তানিয়া বেগমকে ১২ দিন আগে কোর্টে গিয়ে বিয়ে করেন কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঢাকি-চারগাও গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান হৃদয়। বিয়ের পর থেকেই হৃদয় তার শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি হৃদয়ের গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী সন্তান রয়েছে বলে জানতে পারেন তানিয়ার পরিবারের সদস্যরা।

বিজনেস আওয়ার/২১ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় নবদম্পতির আত্মহত্যা

পোস্ট হয়েছে : ০৪:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: হবিগঞ্জের লাখাইয়ে প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে নবদম্পতি আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (২০ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার লাখাই ইউনিয়নের টাউনশিপ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

তারা হলেন- মোস্তাফিজুর রহমান হৃদয়ের (৩০) ও তানিয়া বেগম (১৮)। হৃদয় কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কুলহানি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে ও তানিয়া লাখাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের টাউনশিপ এলাকার আনছার মিয়ার মেয়ে।

খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মোবাইলে পরিচয় ও প্রেমের সূত্র ধরে ১৩ দিন আগে তানিয়াকে বিয়ে করেন হৃদয়। বিয়ের পর তানিয়া তাকে শ্বশুরালয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। কিন্তু হৃদয় তাতে রাজি হননি। প্রেমের বিয়ে বাড়িতে মেনে নেবে না বলে তিনি জানান। বাড়িতে তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে বলেও তিনি জানান। রোববার হৃদয় বাড়িতে যেতে চাইলে তানিয়া বেঁকে বসেন তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। হৃদয় তাতে রাজি না হওয়ায় তিনি ঘরে রাখা বিষপান করেন। এ সময় ক্ষোভে তানিয়া নিজেও বিষপান করেন।

এরই জের ধরে তানিয়াকে হৃদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার অনুরোধ করেন স্বজনরা। কিন্তু তা মানেননি তানিয়া। হৃদয়ও একইভাবে তানিয়াকে কাছে পেতে মরিয়া। বার বার বলার পরও তানিয়ার স্বজনরা তাদের সম্পর্কের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ক্ষোভে-অভিমানে ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে ফেলেন হৃদয়। একপর্যায়ে স্বামীকে ছটফট করতে দেখে স্ত্রী তানিয়াও সেই বিষ খান। তাৎক্ষণিক দুজনকেই উদ্ধার করে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গের সামনে তানিয়া বেগমের মা আবিদা বেগম বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান হৃদয়ের আগের স্ত্রী ও ৮ মাসের একটি সন্তান রয়েছে। বিষয়টি গোপন করে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে। বিষয়টি জানার পর আমার মেয়ে হৃদয়ের সংসার করবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে দুজনই বিষ খায়।

হৃদয়ের মামাতো ভাই এহসানুল হক রুবেল বলেন, মোবাইলে রং নম্বরের মাধ্যমে তানিয়ার সঙ্গে হৃদয়ের পরিচয় হয়। তানিয়ার পরিবারের চাপে একপর্যায়ে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। মেয়ের বাড়ির চাপে বিয়ের আগে হৃদয় তার আগের স্ত্রীর গহনাও নিয়ে আসে। আগের বিয়ের কথা জানাজানি হলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ নিয়েই তারা বিষ খায়।

লাখাই থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুনু মিয়া জানান, টাউনশিপ এলাকার বাসিন্দা আনছর মিয়ার মেয়ে তানিয়া বেগমকে ১২ দিন আগে কোর্টে গিয়ে বিয়ে করেন কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঢাকি-চারগাও গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান হৃদয়। বিয়ের পর থেকেই হৃদয় তার শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি হৃদয়ের গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী সন্তান রয়েছে বলে জানতে পারেন তানিয়ার পরিবারের সদস্যরা।

বিজনেস আওয়ার/২১ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: