বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : কমিটি গঠন এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জকে পিটিয়েছে প্রতিপক্ষ। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পৌর এলাকার পিটিআই সড়কে তার খালার বাসায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশের গাড়িতে করে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা না নিয়ে তিনি খালি গায়ে কয়েকজন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে যান ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তার সারা মুখে রক্তাক্ত ছিল এবং কপাল দিয়ে রক্ত ঝরছিলো।
এ ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ফেসবুক লাইভে এসে হামলার শিকার ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ তার ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিচার দাবি করেন এবং এ হামলার বিচার না পেলে তার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না বলে জানান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং যে বাড়িতে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন সেই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুরের দিকে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ খাওয়ার জন্য পিটিআই রোডস্থ তার খালায় বাসায় যান। খাওয়া-দাওয়া শেষে তিনি ওই বাসায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক হাসিব কোরাইশি, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অন্তর, ছাত্রলীগ নেতা অভি, সজল, সজিবসহ তাদের প্রায় ৪০ থেকে ৫০জন কর্মী ওই বাসায় গিয়ে চ্যালেঞ্জের খোঁজ করতে থাকেন। এ সময় ভয়ে হাফিজ বাসার টয়লেটের ফলস ছাদে আশ্রয় নেন। প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা সেখানে উঠে টেনে নামিয়ে তাকে পেটাতে পেটাতে সামনের সড়কে নিয়ে যান।
পিটিআই রোডে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপির বাসার সামনে নিয়ে এসেও পুলিশের সামনেই তাকে জুতা-স্যান্ডেল দিয়ে মারধর করে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এমনকি পুলিশ ভ্যানে তোলার পরও তাকে মারধর করা হয়। ঘটনার সময় জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবি ছাত্রলীগ কর্মীদের থামাতে দেখা যায়।
পরে চ্যালেঞ্জকে উদ্ধার করে পুলিশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জকে নেওয়া হলে চিকিৎসা না নিয়েই তিনি চলে আসেন। এ সময় তার মাথা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অন্তরের বলেন, পিটিআই রোডের একটি বাড়িতে মেয়ে নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকাবস্থায় স্থানীয় জনতা হাফিজকে আটক করে এবং গণপিটুনি দেয়।
গুরুতর আহত শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, কমিটি গঠন নিয়ে মূলত বিরোধ তৈরি হয়েছে। আমি ঢাকায় ছিলাম। কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়া এসেছি। দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকার অফিসে দেখা করতে যাই। সেখান থেকে বের হলে কয়েকজন যুবক আমার পিছু নেয়। আমি পিটিআই রোডে আমার খালার বাসায় গেলে সেখানে গিয়ে আক্রমণ করে জেলা ও শহর ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী। আমি জামায়াত-ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি এটা কি আমার দোষ?
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খাঁন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
বিজনেস আওয়ার/২৩ নভেম্বর, ২০২২/কমা