বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরেকটি মাইলফলক অতিক্রম করেছে। একের পরে এক রেকর্ড গড়ে মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে ৩৮ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার বা তিন হাজার ৮১৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। এছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে প্রবাসীরা ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পঠিয়েছেন। একক মাস হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
জানা গেছে, গত অর্থবছরে রেমিট্যান্সের ওপর ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরেও রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এরপর থেকেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যার এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত অর্থ দেশে আসেনি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৭৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ১৫ হাজার কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভর করেই রিজার্ভ একটার পর একটা রেকর্ড গড়ছে। মহামারীর এই কঠিন সময়ে বেশি বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অবদান রাখার জন্য তিনি প্রবাসীদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, এই রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারের বড় ভূমিকা আছে। বৈধ পথে রেমিটেন্স আনতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত বছরের জুলাই থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে সরকার তার সঙ্গে ২ টাকা যোগ করে স্বজনকে ১০২ টাকা দেয়া হচ্ছে। এতে প্রবাসীরা উৎসাহিত হচ্ছেন। বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছেন।
বিজনেস আওয়ার/১৯ আগস্ট, ২০২০/এ