ঢাকা , শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিকৃত যৌনাচার থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২
  • 56

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বালু ও কাঠ ব্যবসায়ী কাওসার খানের (৪১) হত্যা রহস্য উদঘান করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত এক কিশোর (১৬) ও তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

লিখিত বক্তব্যে পুলিশ জানায়, এ হত্যার ঘটনার তদন্ত শুরু হওয়ার ১২ ঘন্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। বিকৃত যৌনাচার থেকে বাঁচতে ওই ব্যবসায়ীকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ওই কিশোর।

নিহত ব্যবসায়ী কাউসার খান চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের এম কে ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল খানের ছেলে। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। কাওসার খান বিবাহিত, তার দুই মেয়ে আছে।

কাওসার দীর্ঘদিন সৌদি আবর ছিলেন। গত তিন বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। গত দুই বছর ধরে একই গ্রামের ওই কিশোরের সাথে তার পরিচয় হয় ইলেকট্রিক মেরামত কাজের সুবাদে। প্রায় এক বছর ধরে কাওসার ওই কিশোরের সাথে সমকামিতার সম্পর্ক স্থাপন করেন। তবে ওই কিশোর এ বিষয়টি মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। কাওসার একাধিক সময় তাকে ছুরি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এ কাজে বাধ্য করতেন।

গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে কাওসার তার মোটরসাইকেলে করে ওই কিশোরকে উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের বিশাই মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের জিয়ারত শেখের জমির উপর বালুর ঢিপিতে নিয়ে যান। তিনি তখন ওই কিশোরকে সমকামিতায় বাধ্য করলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে কাওসার একটি চাকু বের করে কিশোরকে ভয়ভীতি দেখালে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপযার্য়ে কাওসারের গলায় ছুরির আঘাত লাগে। এরপর ওই কিশোর ব্যবসায়ীর পিঠে, গলায় ও মাথার পিছনের অংশে ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে তাকে হত্যা করে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কাওসারের মৃত্যুর পর তার ব্যবহৃত মোবাইল, মোটরসাইকেল ও চাকু নিয়ে বাড়ি এসে কিশোর তার বাবাকে সব খুলে বলে। তখন তার বাবা শাহিন মোল্যা ছেলেকে বাঁচাতে নিহতের মোবাইলটি ভেঙ্গে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। ছেলের গায়ের রক্তমাখা জ্যাকেট বাড়ির ভেতরে মাটিতে পুঁতে রাখে এবং কাওসারের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ফরিদপুরের শহরের চানমারি এলাকায় নিয়ে ফেলে আসে।

এ ঘটনায় নিহত কাওসারের ভাই লিয়াকত খান গতকাল শনিবার (২৬ নভেম্বর) অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে চরভদ্রাসন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার।

তিনি বলেন, শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ এ হত্যা রহস্য নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ওই দিন দিবাগত রাত ১২টার মধ্যে এ হত্যা রহস্য উদঘাটিত হয় এবং ওই কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর কিশোর হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দেয়।

চরভদ্রাসন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন, রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর শহরের চানমারি এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় কাউসারের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে কোতয়ালী থানার পুলিশ। এ ঘটনায় ওই কিশোর ও তার বাবাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পেরণ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৭ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিকৃত যৌনাচার থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বালু ও কাঠ ব্যবসায়ী কাওসার খানের (৪১) হত্যা রহস্য উদঘান করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত এক কিশোর (১৬) ও তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

লিখিত বক্তব্যে পুলিশ জানায়, এ হত্যার ঘটনার তদন্ত শুরু হওয়ার ১২ ঘন্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। বিকৃত যৌনাচার থেকে বাঁচতে ওই ব্যবসায়ীকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ওই কিশোর।

নিহত ব্যবসায়ী কাউসার খান চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের এম কে ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল খানের ছেলে। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। কাওসার খান বিবাহিত, তার দুই মেয়ে আছে।

কাওসার দীর্ঘদিন সৌদি আবর ছিলেন। গত তিন বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। গত দুই বছর ধরে একই গ্রামের ওই কিশোরের সাথে তার পরিচয় হয় ইলেকট্রিক মেরামত কাজের সুবাদে। প্রায় এক বছর ধরে কাওসার ওই কিশোরের সাথে সমকামিতার সম্পর্ক স্থাপন করেন। তবে ওই কিশোর এ বিষয়টি মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। কাওসার একাধিক সময় তাকে ছুরি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এ কাজে বাধ্য করতেন।

গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে কাওসার তার মোটরসাইকেলে করে ওই কিশোরকে উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের বিশাই মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের জিয়ারত শেখের জমির উপর বালুর ঢিপিতে নিয়ে যান। তিনি তখন ওই কিশোরকে সমকামিতায় বাধ্য করলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে কাওসার একটি চাকু বের করে কিশোরকে ভয়ভীতি দেখালে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপযার্য়ে কাওসারের গলায় ছুরির আঘাত লাগে। এরপর ওই কিশোর ব্যবসায়ীর পিঠে, গলায় ও মাথার পিছনের অংশে ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে তাকে হত্যা করে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কাওসারের মৃত্যুর পর তার ব্যবহৃত মোবাইল, মোটরসাইকেল ও চাকু নিয়ে বাড়ি এসে কিশোর তার বাবাকে সব খুলে বলে। তখন তার বাবা শাহিন মোল্যা ছেলেকে বাঁচাতে নিহতের মোবাইলটি ভেঙ্গে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। ছেলের গায়ের রক্তমাখা জ্যাকেট বাড়ির ভেতরে মাটিতে পুঁতে রাখে এবং কাওসারের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ফরিদপুরের শহরের চানমারি এলাকায় নিয়ে ফেলে আসে।

এ ঘটনায় নিহত কাওসারের ভাই লিয়াকত খান গতকাল শনিবার (২৬ নভেম্বর) অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে চরভদ্রাসন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার।

তিনি বলেন, শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ এ হত্যা রহস্য নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ওই দিন দিবাগত রাত ১২টার মধ্যে এ হত্যা রহস্য উদঘাটিত হয় এবং ওই কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর কিশোর হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দেয়।

চরভদ্রাসন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন, রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর শহরের চানমারি এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় কাউসারের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে কোতয়ালী থানার পুলিশ। এ ঘটনায় ওই কিশোর ও তার বাবাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পেরণ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৭ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: