ঢাকা , সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেনউইকের আর্থিক হিসাবে নানা অনিয়ম

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • 40

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দূর্বল ব্যবসার রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানির ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবে আপত্তিকর মন্তব্য (কোয়ালিফাইড ওপিনিয়ন) করেছেন নিরীক্ষক। যে কোম্পানির নিয়মিত লোকসানের কারনে অস্তিত্বই যেখানে হূমকি, সেই কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার এখন ১ হাজার টাকার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর কর্তৃপক্ষ ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ব্যবসায় গ্রাহকের কাছ থেকে ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা পাওনা দেখিয়েছে। যা কার কাছ থেকে কতটাকা এবং কতদিন ধরে পাওনা রয়েছে, কালেকশন স্টেটমেন্ট ও প্রভিশনিং তথ্যের ঘাটতির কারনে ওই অর্থের বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে অগ্রিম প্রদান হিসেবে ৮৯ লাখ টাকা, কাঁচামাল কেনাবাবদ দায় ৪৫ লাখ টাকা ও বিভিন্ন ব্যয়জনিত দায় হিসেবে ৩৪ লাখ টাকা দেখিয়ে আসছে। কিন্তু এর কোন সমন্বয় হচ্ছে না।

রেনউইকের হিসাবে সরকারের কাছ থেকে ১০ কোটি ৬ লাখ টাকার ইক্যুইটি লোন, ফরেন কারেঞ্চি লোন ৫০ লাখ টাকা ও এডিপি লোকাল কারেঞ্চি লোন ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা দেখাচ্ছে। যা দীর্ঘদিন ধরে দেখিয়ে আসলেও নিরীক্ষার জন্য প্রয়াজনীয় ডকুমেন্টস দেখাতে পারেনি রেনউইক কর্তৃপক্ষ।

রেনউইক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে কোন ধরনের সমন্বয় ছাড়াই বা প্রদান না করে এডিপি লোন ও ফরেন কারেঞ্চি লোনের উপর সুদ ব্যয় দেখিয়ে আসছে রেনউইক কর্তৃপক্ষ। যা প্রদান না করায় নিয়মিত বৃদ্ধির মাধ্যমে সুদজনিত দায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এডিপি লোনের উপরে ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ও ফরেন কারেঞ্চি লোনের উপর ৭৫ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন….
শেয়ারপ্রতি ৪১ পয়সা বেশি মুনাফা দেখিয়েছে ওয়াটা কেমিক্যাল

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ উৎসে কর কেটে রেখেছে, তবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। যাতে ৩৯ লাখ টাকা বকেয়া হয়ে গেছে। এছাড়া ৭৩ লাখ ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি।

কোম্পানিটি ভবিষ্যতে ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম বলে আর্থিক হিসাব তৈরী করেছে। কিন্তু কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এতে করে পূঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

রাষ্ট্রায়াত্ত্ব রেনউইক যজ্ঞেশ্বর ব্যবসায় দূর্বল হলেও শেয়ার দরে চাঙ্গা। রবিবার (২৭ নভেম্বর) লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৯৭৮.৩০ টাকায়। এই অস্বাভাবিক দরের পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে রেনউইকের স্বল্পমূলধন। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ মাত্র ২ কোটি টাকা। এ কারনে কারসাজিকাররা সহজে শেয়ারটি গেম্বলিং করতে পারছে।

বিজনেস আওয়ার/২৮ নভেম্বর, ২০২২/এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

রেনউইকের আর্থিক হিসাবে নানা অনিয়ম

পোস্ট হয়েছে : ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দূর্বল ব্যবসার রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানির ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবে আপত্তিকর মন্তব্য (কোয়ালিফাইড ওপিনিয়ন) করেছেন নিরীক্ষক। যে কোম্পানির নিয়মিত লোকসানের কারনে অস্তিত্বই যেখানে হূমকি, সেই কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার এখন ১ হাজার টাকার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর কর্তৃপক্ষ ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ব্যবসায় গ্রাহকের কাছ থেকে ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা পাওনা দেখিয়েছে। যা কার কাছ থেকে কতটাকা এবং কতদিন ধরে পাওনা রয়েছে, কালেকশন স্টেটমেন্ট ও প্রভিশনিং তথ্যের ঘাটতির কারনে ওই অর্থের বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে অগ্রিম প্রদান হিসেবে ৮৯ লাখ টাকা, কাঁচামাল কেনাবাবদ দায় ৪৫ লাখ টাকা ও বিভিন্ন ব্যয়জনিত দায় হিসেবে ৩৪ লাখ টাকা দেখিয়ে আসছে। কিন্তু এর কোন সমন্বয় হচ্ছে না।

রেনউইকের হিসাবে সরকারের কাছ থেকে ১০ কোটি ৬ লাখ টাকার ইক্যুইটি লোন, ফরেন কারেঞ্চি লোন ৫০ লাখ টাকা ও এডিপি লোকাল কারেঞ্চি লোন ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা দেখাচ্ছে। যা দীর্ঘদিন ধরে দেখিয়ে আসলেও নিরীক্ষার জন্য প্রয়াজনীয় ডকুমেন্টস দেখাতে পারেনি রেনউইক কর্তৃপক্ষ।

রেনউইক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে কোন ধরনের সমন্বয় ছাড়াই বা প্রদান না করে এডিপি লোন ও ফরেন কারেঞ্চি লোনের উপর সুদ ব্যয় দেখিয়ে আসছে রেনউইক কর্তৃপক্ষ। যা প্রদান না করায় নিয়মিত বৃদ্ধির মাধ্যমে সুদজনিত দায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এডিপি লোনের উপরে ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ও ফরেন কারেঞ্চি লোনের উপর ৭৫ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন….
শেয়ারপ্রতি ৪১ পয়সা বেশি মুনাফা দেখিয়েছে ওয়াটা কেমিক্যাল

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ উৎসে কর কেটে রেখেছে, তবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। যাতে ৩৯ লাখ টাকা বকেয়া হয়ে গেছে। এছাড়া ৭৩ লাখ ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি।

কোম্পানিটি ভবিষ্যতে ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম বলে আর্থিক হিসাব তৈরী করেছে। কিন্তু কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এতে করে পূঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

রাষ্ট্রায়াত্ত্ব রেনউইক যজ্ঞেশ্বর ব্যবসায় দূর্বল হলেও শেয়ার দরে চাঙ্গা। রবিবার (২৭ নভেম্বর) লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৯৭৮.৩০ টাকায়। এই অস্বাভাবিক দরের পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে রেনউইকের স্বল্পমূলধন। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ মাত্র ২ কোটি টাকা। এ কারনে কারসাজিকাররা সহজে শেয়ারটি গেম্বলিং করতে পারছে।

বিজনেস আওয়ার/২৮ নভেম্বর, ২০২২/এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: