ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারি: আমরা কি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখব?

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • 44

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বেসিক ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির মামলায় হাইকোর্ট বলেছেন, সব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে আমরা কি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখব? এটা কি হয়?

আদালত বলেন, এসব অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন যা করছে তাতে মনে হয়, আমরা নাটক দেখছি। হাততালি দেওয়া ছাড়া আর কী করার আছে, না হয় বসে থাকতে হবে।

সোমবার (২৮নভেম্বর) বেসিক ব্যাংকের অর্থপাচারের মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীর জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

শুনানির সময় আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন বলেন, পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও দুদক এ মামলায় চার্জশিট দিচ্ছে না। তাই বিচারও শেষ হচ্ছে না। আমার মক্কেল একজন কেরানি হিসেবে কাজ করেছেন। এখানে তার অপরাধ কী দুদক সেটিও সুনির্দিষ্ট করতে পারেনি। মামলায় টাকা ও সম্পদের যে বিবরণ এসেছে সেখানে আমার মক্কেলের নিয়ন্ত্রণে কিছুই ছিল না। এখানে বিশ্বাস ভঙ্গেরও কিছু ছিল না।

এ সময় তিনি বলেন, দুদক দৌড়ায় টাকার পেছনে। দুদক নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত।

তিনি আদালতকে আরও বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে অপরাধ কী সেটাই দুদক শনাক্ত করতে পারেনি। এ মামলায় এখনও ১০৪ জন আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে। অথচ আমার মক্কেল ২০১৯ সাল থেকে কারাগারে আছেন।

এ সময় বেঞ্চের বিচারপতি বলেন, আমরা তো মনে হয় নাটক দেখছি। নাটক দেখে হাততালি ছাড়া আর তো কিছু দেওয়ার নেই। হয় হাততালি দিতে হবে না হয় বসে থাকতে হবে।

বিচারপতি বলেন, জজ, আইনজীবী আর যে লাখ লাখ চোখ চেয়ে আছে। কেউ কোনো কাজ করতে পারছেন না। কেন সবাই নীরব? সব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখব?

এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, দুদক ড্রামা (নাটক) করছে। আমার বলার কিছু ছিল না।

পরে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আদালতে এসে তার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত আগামীকাল (মঙ্গলবার) দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার দিন ধার্য করেন।

এর আগে আজ সকালে বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আলামত চেয়ে মালয়েশিয়ায় অনুরোধ পাঠানোর তথ্য হাইকোর্টকে জানায় দুদক।

হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে দুদক জানায়, পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির (এমএলএআর) আওতায় মালয়েশিয়াকে অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় দায়ের করা ৫৬ মামলার মধ্যে ১২ মামলার আসামি ব্যাংকটির সাবেক কর্মকর্তা মোহম্মদ আলীর জামিন শুনানিতে গত ৮ নভেম্বর হালনাগাদ তথ্য চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক।

বিজনেস আওয়ার/২৮ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারি: আমরা কি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখব?

পোস্ট হয়েছে : ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বেসিক ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির মামলায় হাইকোর্ট বলেছেন, সব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে আমরা কি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখব? এটা কি হয়?

আদালত বলেন, এসব অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন যা করছে তাতে মনে হয়, আমরা নাটক দেখছি। হাততালি দেওয়া ছাড়া আর কী করার আছে, না হয় বসে থাকতে হবে।

সোমবার (২৮নভেম্বর) বেসিক ব্যাংকের অর্থপাচারের মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীর জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

শুনানির সময় আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন বলেন, পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও দুদক এ মামলায় চার্জশিট দিচ্ছে না। তাই বিচারও শেষ হচ্ছে না। আমার মক্কেল একজন কেরানি হিসেবে কাজ করেছেন। এখানে তার অপরাধ কী দুদক সেটিও সুনির্দিষ্ট করতে পারেনি। মামলায় টাকা ও সম্পদের যে বিবরণ এসেছে সেখানে আমার মক্কেলের নিয়ন্ত্রণে কিছুই ছিল না। এখানে বিশ্বাস ভঙ্গেরও কিছু ছিল না।

এ সময় তিনি বলেন, দুদক দৌড়ায় টাকার পেছনে। দুদক নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত।

তিনি আদালতকে আরও বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে অপরাধ কী সেটাই দুদক শনাক্ত করতে পারেনি। এ মামলায় এখনও ১০৪ জন আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে। অথচ আমার মক্কেল ২০১৯ সাল থেকে কারাগারে আছেন।

এ সময় বেঞ্চের বিচারপতি বলেন, আমরা তো মনে হয় নাটক দেখছি। নাটক দেখে হাততালি ছাড়া আর তো কিছু দেওয়ার নেই। হয় হাততালি দিতে হবে না হয় বসে থাকতে হবে।

বিচারপতি বলেন, জজ, আইনজীবী আর যে লাখ লাখ চোখ চেয়ে আছে। কেউ কোনো কাজ করতে পারছেন না। কেন সবাই নীরব? সব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখব?

এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, দুদক ড্রামা (নাটক) করছে। আমার বলার কিছু ছিল না।

পরে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আদালতে এসে তার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত আগামীকাল (মঙ্গলবার) দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার দিন ধার্য করেন।

এর আগে আজ সকালে বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আলামত চেয়ে মালয়েশিয়ায় অনুরোধ পাঠানোর তথ্য হাইকোর্টকে জানায় দুদক।

হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে দুদক জানায়, পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির (এমএলএআর) আওতায় মালয়েশিয়াকে অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় দায়ের করা ৫৬ মামলার মধ্যে ১২ মামলার আসামি ব্যাংকটির সাবেক কর্মকর্তা মোহম্মদ আলীর জামিন শুনানিতে গত ৮ নভেম্বর হালনাগাদ তথ্য চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক।

বিজনেস আওয়ার/২৮ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: