বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: পঞ্চগড়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকুরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করে মৌখিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধরা পড়েছেন ইয়াসমিন আক্তার (২১) এবং মৌসূমি আক্তার (২৮) নামে দুই চাকরি প্রত্যাশী।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) মৌখিক পরীক্ষা চলাকালীন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের দুই সহযোগি সাইদুর রহমান (২৪) এবং মাসুদ রয়েল (২৮) সহ চারজনকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি আটোয়ারী উপজেলার তেলীপাড়া ও নলপুখরি গ্রামে।
এ ঘটনায় সোমবার রাতেই জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব বড়ুয়া বাদী হয়ে পাঁচ জনের নামে এবং আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় চার জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। মামলার আরেক আসামি দুলাল হোসেন পলাতক রয়েছে।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) পঞ্চগড়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার কল্যাণ সহকারি ও আয়া পদে ২ হাজার ৬শ’ ৮১ জন চাকরি প্রত্যাশী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন ২শ ৯০ জন। পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরিবার কল্যাণ সহকারি পদে লিখিত পরীক্ষায় ইয়াসমিন ও মৌসূমি উত্তীর্ণ হয়ে সোমবার (২৮ নভেম্বর) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় তাদের খাতার লেখার সাথে হাতের লেখার মিল না পেয়ে লিখিত পরীক্ষায় আসা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারেননি। এতে ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে তারা প্রক্সির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় পাসের কথা স্বীকার করেন। তারা ধাক্কামারা এলাকার দুলাল হোসেন নামে এক জনের সাথে ১২ লাখ টাকা চুক্তিতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং চাকরি প্রদানের আশ্বাসের কথাও স্বীকার করেন। পরে দুই পরীক্ষার্থী, তাদের দুই সহযোগি এবং দুলাল হোসেনসহ পাঁচ জনের নামে এই মামলা দেওয়া হয়। এছাড়া সংখ্যা উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ভাইভা বোর্ডের প্রধান ও জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম সন্দেহবশত ইয়াসমিন ও মৌসূমি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে তারা নিকটজনদের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকায় চুক্তিতে প্রক্সির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় পাশের কথা স্বীকার করেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে চারজনকে আমাদের কাছে সোপর্দ করা হয়। রাতে মামলার পর নামসহ এজাহার দেওয়া পাঁচ আসামীর মধ্যে আটক চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজাতে পাঠানো হয়। পলাতক আসামী দুলাল হোসেনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে ও ঘটনা তদন্তে পুলিশ কাজ করছে।
বিজনেস আওয়ার/২৯ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ