বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ফেনীর পরশুরাম উপজেলার কৃষক মোহাম্মদ মেজবাহারের (৪৭) মরদেহ ১৩ দিন পর ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীকারী বাহিনী (বিএসএফ)।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরের পর উপজেলার বিলোনিয়া চেকপোস্ট এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও কৃষক মেজবাহারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। হস্তান্তরের পর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
মেজবাহার পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামের মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি স্থানীয়ভাবে গরু ব্যবসা করতেন। ১৩ নভেম্বর বিকেলে কৃষক মেজবাহারকে সীমান্ত এলাকা থেকে জোর করে বিএসএফের সদস্যরা ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে।
তিনদিন পর ১৬ নভেম্বর সকালে সীমান্তের কাঁটাতারের পাশে শূন্যরেখার ভারতীয় অংশে মেজবাহারের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। ১৭ নভেম্বর ভোরে আইনানুযায়ী মরদেহ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিএসএফ তার মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর ১৩ দিন পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে ওই কৃষকের মরদেহ ফেরত দিলো বিএসএফ।
বিজিবি সূত্র জানায়, আজ দুপুর ১টা ২০ মিনিটে বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় মরদেহটি নিয়ে আসে বিএসএফ। পরে বিজিবির সঙ্গে পতাকা বৈঠকের পর বিএসএফ মরদেহ হস্তান্তর করে।
পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নিহতের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার, বোন পারুল আক্তার, পরশুরাম পৌরমেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, স্থানীয় কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের ত্রিপুরার বিলোনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক পরিতোষ ঘোষ, পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম, বিএসএফ কর্মকর্তা সত্যপাল সিং, এম এম লাল, বিলোনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণ পাল, বিজিবির গুথুমা সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার সুবেদার ওমর ফারুক, বিলোনিয়ার মজুমদারহাট কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
পরে মেজবাহারের মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পরশুরাম থানা-পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ সময় স্বজনরা মরদেহটি এক নজর না দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মেজবাহারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, ভিটেমাটি ছাড়া তাদের কোনো জমি-জমা নেই। স্বামী অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করতেন। এ বছর ১ একর জমিতে আমনের চাষ করেছিলেন। জমি সীমান্ত এলাকায়, পাকা ধান কাটতে গেলে বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়। তার স্বামী কোনো অন্যায় করেননি। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যার বিচার দাবি করেন।
বিজনেস আওয়ার/২৯ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ