ঢাকা , সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেয়ারবাজারের ভবিষ্যত উজ্জ্বল : জাপানিদের বিনিয়োগের আহ্বান

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২
  • 49

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : জাপানিদেরকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উজ্জ্বল ভবিষ্যত এবং অশেষ সম্ভাবনার কথা জানালেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এই সম্ভাবনার শেয়ারবাজারে জাপানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে অংশীদার হওয়ার আহ্বান করেছেন তিনি। এসময় তিনি বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের রিটার্ন, মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন এবং বিগত ১২ বছরে বাংলাদেশের বাজারে মূলধন উত্তোলনের উন্নতির চিত্র তুলে ধরেন।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিএসইসি এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর যৌথ উদ্যোগে জাপানে আয়োজিত ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব-এ তিনি এ আহ্বান করেন। বাংলাদেশ ও জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাপানের টোকিওতে প্রোগ্রামটি আয়াজিত হয়।

ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব অনুষ্ঠানের সভাপতি বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম প্রবন্ধে ভূরাজনৈতিকভাবে দক্ষিন এশিয়ায় বাংলাদেশ কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের মানবসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ, ভূমি ও পানি সম্পদ এবং ধর্মীয়-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দরুণ বাংলাদেশের উন্নয়নের অপার সম্ভাবনাময় দিকটি তুলে ধরেন।

তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের ৫০ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ক, বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগসহ বাংলাদেশে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (JICA)’র অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের বিস্ময়কর অর্থনৈতিক অগ্রগতি, প্রাযুক্তিক উন্নয়ন এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় মাথাপিছু আয়সহ সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়নের তথ্য উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া Foreign Direct Investment’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এতে জাপানের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখানোর জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি। বাংলাদেশের রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলো, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো এবং হাইটেক পার্কগুলো নিয়ে কথা বলেন। এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ-সুবিধার তথ্য তুলে ধরেন এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের ব্যবসার পরিবেশ সংস্কারে কাজ করছে বলে জানান।

বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ Portfolio Investment Process’ সংক্রান্ত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। তিনি নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কিভাবে সহজে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনা করেন। কিভাবে নন রেসিডেন্ট ইনভেস্টমেন্ট টাকা অ্যাকাউন্ট(NITA) এর মাধ্যমে বিনিয়োগ কার্যক্রম করা যায় এবং ট্রেড পরিচালনা করা যায় সে বিষয়টি তিনি ব্যাখ্যা করেন। এছাড়াও তিনি বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর অর্পিত কর নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি স্থানীয় ও নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর অর্পিত করের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বিভিন্ন প্রডাক্টগুলো নিয়ে কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য যেসব বিশেষ প্রণোদনা আছে সেগুলোর বিষয়ে আলোকপাত করে বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ করতে অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশে জাপানের মনোনীত নতুন রাষ্ট্রদূত Mr. Kimonori Iwama ‘ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব প্রোগ্রামটিতে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি সকলকে শুভেচ্ছা জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ককে কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশীপে উন্নীত করেছেন। তিনি বাংলাদেশের মাতারবাড়ি তাপ বিদুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরসহ বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে জাপানের প্রত্যক্ষ সহায়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি অর্থনৈতিক ও প্রাযুক্তিক সহায়তার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান। আগামীতেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং জাপানের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সবসময় একটি বন্ধুসুলভ গন্তব্য হিসেবে থাকবে বলে জানান।

‘ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে তুলে ধরার কথা বলেন। জাপান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম দেশগুলোর একটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ক এক বিশেষ সম্পর্ক, ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক। তিনি বলেন, জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে নিজের দেশের মত অনুভূতি পান, এখানে তারা কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন না ও নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারেন।

বিজনেস আওয়ার/২৯ নভেম্বর, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শেয়ারবাজারের ভবিষ্যত উজ্জ্বল : জাপানিদের বিনিয়োগের আহ্বান

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : জাপানিদেরকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উজ্জ্বল ভবিষ্যত এবং অশেষ সম্ভাবনার কথা জানালেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এই সম্ভাবনার শেয়ারবাজারে জাপানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে অংশীদার হওয়ার আহ্বান করেছেন তিনি। এসময় তিনি বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের রিটার্ন, মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন এবং বিগত ১২ বছরে বাংলাদেশের বাজারে মূলধন উত্তোলনের উন্নতির চিত্র তুলে ধরেন।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিএসইসি এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর যৌথ উদ্যোগে জাপানে আয়োজিত ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব-এ তিনি এ আহ্বান করেন। বাংলাদেশ ও জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাপানের টোকিওতে প্রোগ্রামটি আয়াজিত হয়।

ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব অনুষ্ঠানের সভাপতি বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম প্রবন্ধে ভূরাজনৈতিকভাবে দক্ষিন এশিয়ায় বাংলাদেশ কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের মানবসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ, ভূমি ও পানি সম্পদ এবং ধর্মীয়-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দরুণ বাংলাদেশের উন্নয়নের অপার সম্ভাবনাময় দিকটি তুলে ধরেন।

তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের ৫০ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ক, বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগসহ বাংলাদেশে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (JICA)’র অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের বিস্ময়কর অর্থনৈতিক অগ্রগতি, প্রাযুক্তিক উন্নয়ন এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় মাথাপিছু আয়সহ সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়নের তথ্য উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া Foreign Direct Investment’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এতে জাপানের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখানোর জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি। বাংলাদেশের রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলো, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো এবং হাইটেক পার্কগুলো নিয়ে কথা বলেন। এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ-সুবিধার তথ্য তুলে ধরেন এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের ব্যবসার পরিবেশ সংস্কারে কাজ করছে বলে জানান।

বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ Portfolio Investment Process’ সংক্রান্ত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। তিনি নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কিভাবে সহজে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনা করেন। কিভাবে নন রেসিডেন্ট ইনভেস্টমেন্ট টাকা অ্যাকাউন্ট(NITA) এর মাধ্যমে বিনিয়োগ কার্যক্রম করা যায় এবং ট্রেড পরিচালনা করা যায় সে বিষয়টি তিনি ব্যাখ্যা করেন। এছাড়াও তিনি বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর অর্পিত কর নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি স্থানীয় ও নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর অর্পিত করের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বিভিন্ন প্রডাক্টগুলো নিয়ে কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য যেসব বিশেষ প্রণোদনা আছে সেগুলোর বিষয়ে আলোকপাত করে বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ করতে অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশে জাপানের মনোনীত নতুন রাষ্ট্রদূত Mr. Kimonori Iwama ‘ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব প্রোগ্রামটিতে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি সকলকে শুভেচ্ছা জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ককে কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশীপে উন্নীত করেছেন। তিনি বাংলাদেশের মাতারবাড়ি তাপ বিদুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরসহ বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে জাপানের প্রত্যক্ষ সহায়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি অর্থনৈতিক ও প্রাযুক্তিক সহায়তার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান। আগামীতেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং জাপানের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সবসময় একটি বন্ধুসুলভ গন্তব্য হিসেবে থাকবে বলে জানান।

‘ইনভেস্টমেন্ট ফ্ল্যাশ মব অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে তুলে ধরার কথা বলেন। জাপান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম দেশগুলোর একটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ক এক বিশেষ সম্পর্ক, ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক। তিনি বলেন, জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে নিজের দেশের মত অনুভূতি পান, এখানে তারা কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন না ও নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারেন।

বিজনেস আওয়ার/২৯ নভেম্বর, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: