বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় রাহেলা খাতুন (১০১) নামে এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তার ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতিকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ওই বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রাহেলা খাতুন ভাংবাড়িয়া গ্রামের কারিগরপাড়ার বাসিন্দা।
নিহতের মেয়েদের অভিযোগ- রাহেলা খাতুনকে ঠিক মতো খেতে দিতেন না ছেলে ও পুত্রবধূ। মলমূত্র পরিষ্কারও করতেন না। খাবার চাওয়ায় রাগান্বিত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছেলে সেলিম, পুত্রবধূ রিনা ও নাতি সম্রাট পিটিয়ে রাহেলা খাতুনকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রাখে।
প্রতিবেশীরা জানান, নিহতের একমাত্র ছেলে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে পাকা ঘরে থাকলেও মাকে রেখে দিতেন টিনের ছাপড়া ঘরে। প্রায় রাতে ক্ষুধার জ্বালায় খাবার ও পানি চাইলেও দেওয়া হতো না বৃদ্ধা রাহেলাকে। প্রতিবেশীরা খাবার দিতে আসলে খারাপ আচরণ করতেন পুত্রবধূ রিনা। বিরক্ত হয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
নিহতের জামাতা মঈনুল ইসলাম বলেন, আমার শাশুড়িকে দেখাশোনা করতো না। খেতে দিতো না। আজ সাত দিন অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিল। কেউ দেখেনি, খেতেও দেয়নি। সাধ্যমতো আমি দেখাশোনা করতাম। মঙ্গলবার রাতে পুত্রবধূ রিনা ও নাতি ছেলে সম্রাট লাঠি দিয়ে পিটিয়ে একটি হাত ভাঙাসহ মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম আছে। মারধরের পর ফেলে রাখে তারা। রাতে কোনো এক সময় তার মৃত্যু হয়। বেলা ১১টার দিকে প্রতিবেশীরা খাবার দিতে আসলে বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশকে জানান।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলীম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বাম হাতের কনুয়ের কাছে ভাঙা এবং কপালে জখম রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ নিহতের ছেলে, পুত্রবধূ ও তাদের সন্তানকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়েছে। মরদেহ থানা হেফাজতে রাখা হবে। বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় নিহতের মেয়েদের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বিজনেস আওয়ার/৩০ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ