ঢাকা , বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস আজ

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২
  • 266

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রতিবছর ৩ ডিসেম্বরকে বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৯২ সাল থেকে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে। শারীরিকভাবে অসম্পূর্ন মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগীতা প্রদর্শন ও তাদের কর্মকান্ডের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই এই দিবসটির সূচনা।

দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য পরিবর্তনমুখী পদক্ষেপ: প্রবেশগম্য ও সমতাভিত্তিক বিশ্ব বিনির্মাণে উদ্ভাবনের ভূমিকা’।

প্রতিবন্ধীদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা, প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা পৃথক পৃথক বানী দিয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধিতার শিকার। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের সাথে জাতীয় উন্নয়নের যোগসূত্র আছে। প্রতিবন্ধীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হলে তারা জাতীয় উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতায় প্রভূত অবদান রাখতে পারবে।

অধিকারকর্মীদের মতে, দেশে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হলেও এর তাৎপর্য আমরা ঠিকভাবে উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছি। প্রায় এক যুগ হতে চলল- বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাগ্যের তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। বিশেষ করে যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা গ্রহণের হার আগের চেয়ে বাড়লেও চাকরির বাজারে অনেকেই যোগ্যতা অনুযায়ী টিকে থাকতে পারছে না।

প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে উপবৃত্তি দিচ্ছে। বিভিন্ন সময় এ ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু সেবা গ্রহণের পথ এখনও সুগম হয়নি। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে অনেক হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতা। আর সেই দীর্ঘসূত্রতার প্রভাব পড়ে ভাতা পাওয়ার উপরও। অনেকে প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার কারণে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৫৮ সালের মার্চ মাসে বেলজিয়ামে এক ভয়াবহ খনি দুর্ঘটনায় বহু মানুষ মারা যান। আহত পাঁচ সহস্রাধিক ব্যক্তি চিরজীবনের মতো প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তাদের প্রতি সহমর্মিতায় ও সহযোগিতায় বেশ কিছু সামাজিক সংস্থা চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসে। এর ঠিক পরের বছর জুরিখে বিশ্বের বহু সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্তর্দেশীয় স্তরে এক বিশাল সম্মেলন করেন। সেখান থেকেই প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে বিস্তারিত সব তথ্যের হদিশ মেলে। সেখানে সর্বসম্মতভাবে প্রতিবন্ধী কল্যাণে বেশকিছু প্রস্তাব ও কর্মসূচি গৃহীত হয়। খনি দুর্ঘটনায় আহত বিপন্ন প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস পালন করতে আহ্বান জানানো হয়। সেই থেকেই কালক্রমে সারা পৃথিবীর প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দিন হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯২ সাল থেকে এই দিবসটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পালিত হয়ে আসছে।

বিজনেস আওয়ার/০৩ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস আজ

পোস্ট হয়েছে : ১১:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রতিবছর ৩ ডিসেম্বরকে বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৯২ সাল থেকে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে। শারীরিকভাবে অসম্পূর্ন মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগীতা প্রদর্শন ও তাদের কর্মকান্ডের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই এই দিবসটির সূচনা।

দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য পরিবর্তনমুখী পদক্ষেপ: প্রবেশগম্য ও সমতাভিত্তিক বিশ্ব বিনির্মাণে উদ্ভাবনের ভূমিকা’।

প্রতিবন্ধীদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা, প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা পৃথক পৃথক বানী দিয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধিতার শিকার। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের সাথে জাতীয় উন্নয়নের যোগসূত্র আছে। প্রতিবন্ধীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হলে তারা জাতীয় উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতায় প্রভূত অবদান রাখতে পারবে।

অধিকারকর্মীদের মতে, দেশে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হলেও এর তাৎপর্য আমরা ঠিকভাবে উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছি। প্রায় এক যুগ হতে চলল- বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাগ্যের তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। বিশেষ করে যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা গ্রহণের হার আগের চেয়ে বাড়লেও চাকরির বাজারে অনেকেই যোগ্যতা অনুযায়ী টিকে থাকতে পারছে না।

প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে উপবৃত্তি দিচ্ছে। বিভিন্ন সময় এ ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু সেবা গ্রহণের পথ এখনও সুগম হয়নি। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে অনেক হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতা। আর সেই দীর্ঘসূত্রতার প্রভাব পড়ে ভাতা পাওয়ার উপরও। অনেকে প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার কারণে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৫৮ সালের মার্চ মাসে বেলজিয়ামে এক ভয়াবহ খনি দুর্ঘটনায় বহু মানুষ মারা যান। আহত পাঁচ সহস্রাধিক ব্যক্তি চিরজীবনের মতো প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তাদের প্রতি সহমর্মিতায় ও সহযোগিতায় বেশ কিছু সামাজিক সংস্থা চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসে। এর ঠিক পরের বছর জুরিখে বিশ্বের বহু সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্তর্দেশীয় স্তরে এক বিশাল সম্মেলন করেন। সেখান থেকেই প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে বিস্তারিত সব তথ্যের হদিশ মেলে। সেখানে সর্বসম্মতভাবে প্রতিবন্ধী কল্যাণে বেশকিছু প্রস্তাব ও কর্মসূচি গৃহীত হয়। খনি দুর্ঘটনায় আহত বিপন্ন প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস পালন করতে আহ্বান জানানো হয়। সেই থেকেই কালক্রমে সারা পৃথিবীর প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দিন হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯২ সাল থেকে এই দিবসটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পালিত হয়ে আসছে।

বিজনেস আওয়ার/০৩ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: