স্পোর্টস ডেস্ক: গোটা বিশ্ব এখন ফুটবলে মাতোয়ারা। ঠিক তখন ফুটবলের সহস্র রেকর্ডের বরপুত্র লিওনেল মেসি কাতারে নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নেমে ভাঙছেন একের পর এক রেকর্ড। আর্জেন্টাইন মহাতারকা এখন যৌথভাবে বিশ্বকাপে আকাশী-সাদাদের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার সঙ্গে তার বিশ্বকাপে গোল এখন ১০টি।
এই বিশ্বকাপে মেসির সামনে রয়েছে দু’টি রেকর্ডের হাতছানি। আর এই রেকর্ড গড়তে হলে ডিয়াগো ম্যারাডোনাকে টপকাতে হবে এই ক্ষুদে ফুটবল জাদুকরকে। বিশ্বকাপে এখনও অন্তত দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল অথবা সেমি এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। এই দুই খেলায় ১ গোল করলেই বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে রেকর্ড সর্বোচ্চ ১১ গোলের মালিক হয়ে যাবেন।
এছাড়া, ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামলেই মেসি ছুঁয়ে ফেলবেন জার্মাানির লোথার ম্যাথিউসের বিশ্বকাপে ২৫ ম্যাচের রেকর্ডকে। আর সেমিতে জিতে ফাইনালে গেলে মেসিই হবেন প্রথম ফুটবলার, যার খেলা হবে ২৬টি বিশ্বকাপের ম্যাচ। সেমিতে যদি দল হেরেও যায় তখন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নামলেও সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়বেন মেসি।
কাতার বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলছেন মেসি। সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করা আর্জেন্টিনার সেমিফাইনালে ওঠায় সবচেয়ে বড় অবদান মেসিরই। আর্জেন্টিনার প্রতিটি জয়ে কোনো না কোনো অবদান রেখেছেন সাত বারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে স্পটকিক থেকে করা গোলটি বিশ্বকাপে মেসির দশম গোল। এই গোলেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেন কিংবদন্তি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। ১০ গোল নিয়ে তিনিই এতদিন ছিলেন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করা আর্জেন্টাইন। এবার মেসি তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়।
রেকর্ড ছোঁয়ার পর মেসিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাতিগোল নামে খ্যাত স্ট্রাইকার বাতিস্তুতা। চাইছেন, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পরের ম্যাচেই মেসি গোল করে তাকে ছাড়িয়ে যাক। মেসি গোল পেলে যে বেড়ে যাবে আর্জেন্টিনার জয়ের সম্ভাবনা।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে রেকর্ড ছোঁয়া গোলের পরপরই মেসির সঙ্গে নিজের পুরনো একটি ছবি টুইট করে লিখেন, ‘প্রিয় লিও, তোমাকে অভিনন্দন। আমি রেকর্ডটি ২০ বছর ধরে রেখেছি এবং উপভোগ করেছি। এখন রেকর্ডটি তোমার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারাটা আমার জন্য বিরাট সম্মান ও আনন্দের।’
১৯৯৪ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন বাতিস্তুতা। মোট ৪ গোল করেন তিনি। সেবার গ্রিসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ৫ গোল করেন বাতিগোল। সেবারও জ্যামেইকার বিপক্ষে ম্যাচে পেয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের দেখা। ইতিহাসের মাত্র চতুর্থ ফুটবলার হিসেবে দুটি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন তিনি। ২০০২ সালে ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে মাত্র ১ গোল করেন তিনি।
অন্যদিকে ২০০৬ বিশ্বকাপে প্রথম গোল করা মেসি ২০১০ বিশ্বকাপে পাননি গোলের দেখা। ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তোলার পথে করেন ৪ গোল। পরের আসরে ১ গোল করা মেসি কাতারে এবারের আসরে এখন পর্যন্ত করেছেন ৪ গোল।
বিজনেস আওয়ার/১২ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ