ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না: ফারদিনের বাবা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • 49

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ফারদিন আত্মহত্যা করতে পারে না এবং আত্মহত্যার কোনো কারণও দেখছি না বলে জানিয়েছেন তার বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী নুর উদ্দিন বলেন, ‘মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে যদি পুলিশ আত্মহত্যা উল্লেখ করে তাহলে আমি আদালতে নারাজি দেব। কেননা আমার ছেলে কখনই আত্মহত্যা করতে পারে না। এটি র‍্যাব ও ডিবি সাজাচ্ছে। তারা মনগড়াও তদন্ত করছে। আমার ছেলে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে। সব ধরনের পরিস্থিতি সঙ্গে চলতে পারা আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। ফারদিন পরিবারের অনেক উত্থান পতন দেখেছে এবং সে প্রতিটি পরিস্থিতিকে সামলে নিয়েছে। সে একজন যোদ্ধা, তার উপর আমার পুরো পরিবারও নির্ভরশীল ছিল। এমন ছেলে কীভাবে আত্মহত্যা করবে? তা আমার বোধগম্য নয়।’

ফারদিনের মরদেহের ছবি দেখিয়ে নুর উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের আরও বলেন, ‘আমি ফারদিনের মরদেহ দেখেছি। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। চিকিৎসকরাও তার শরীরের গুরুতর জখমের চিহ্ন পান। তাছাড়া ফারদিন যদি আত্মহত্যা করবে তাহলে সুলতানা কামাল ব্রিজে কেন সে যাবে? যখন রামপুরায় এসেছিল পাশেই ছিল হাতিরঝিল। সেখানে সে গভীর রাতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারতো। কিন্তু হাতিরঝিলে না গিয়ে সে কেন অতদূর সুলতানা কামাল ব্রিজের কাছে যাবে? এটা আমারও প্রশ্ন। পাশাপাশি আমি চাইব এ ঘটনার আরও নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু তদন্ত হোক। কেননা ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাব যে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়েছে সেখানে উপর থেকে পানিতে কী পড়েছে তাও স্পষ্ট নয়। এটা যে ফারদিন এটাই বা কে বলবে? এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে আমি পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করব। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন পর্যন্ত আমার ছেলে হত্যার বিচার নিশ্চিত করার জন্য লড়ে যাব।’

এর আগে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ও রাতে ডিবি ও র‌্যাব পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে ফারদিন পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ এবং স্পেন যাওয়ার টাকা সংস্থানের হতাশা থেকেই মূলত আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর রামপুরা থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় যান বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ। নিখোঁজের তিনদিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ‌্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে এ ঘটনায় নিহতের বাবা রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় বান্ধবী বুশরাকে গ্রেফতারের পর ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ড শেষে ইতোমধ্যে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার কাছ থেকে খুনের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে ডিবি জানায়।

বিজনেস আওয়ার/১৫ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না: ফারদিনের বাবা

পোস্ট হয়েছে : ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ফারদিন আত্মহত্যা করতে পারে না এবং আত্মহত্যার কোনো কারণও দেখছি না বলে জানিয়েছেন তার বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী নুর উদ্দিন বলেন, ‘মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে যদি পুলিশ আত্মহত্যা উল্লেখ করে তাহলে আমি আদালতে নারাজি দেব। কেননা আমার ছেলে কখনই আত্মহত্যা করতে পারে না। এটি র‍্যাব ও ডিবি সাজাচ্ছে। তারা মনগড়াও তদন্ত করছে। আমার ছেলে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে। সব ধরনের পরিস্থিতি সঙ্গে চলতে পারা আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। ফারদিন পরিবারের অনেক উত্থান পতন দেখেছে এবং সে প্রতিটি পরিস্থিতিকে সামলে নিয়েছে। সে একজন যোদ্ধা, তার উপর আমার পুরো পরিবারও নির্ভরশীল ছিল। এমন ছেলে কীভাবে আত্মহত্যা করবে? তা আমার বোধগম্য নয়।’

ফারদিনের মরদেহের ছবি দেখিয়ে নুর উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের আরও বলেন, ‘আমি ফারদিনের মরদেহ দেখেছি। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। চিকিৎসকরাও তার শরীরের গুরুতর জখমের চিহ্ন পান। তাছাড়া ফারদিন যদি আত্মহত্যা করবে তাহলে সুলতানা কামাল ব্রিজে কেন সে যাবে? যখন রামপুরায় এসেছিল পাশেই ছিল হাতিরঝিল। সেখানে সে গভীর রাতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারতো। কিন্তু হাতিরঝিলে না গিয়ে সে কেন অতদূর সুলতানা কামাল ব্রিজের কাছে যাবে? এটা আমারও প্রশ্ন। পাশাপাশি আমি চাইব এ ঘটনার আরও নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু তদন্ত হোক। কেননা ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাব যে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়েছে সেখানে উপর থেকে পানিতে কী পড়েছে তাও স্পষ্ট নয়। এটা যে ফারদিন এটাই বা কে বলবে? এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে আমি পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করব। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন পর্যন্ত আমার ছেলে হত্যার বিচার নিশ্চিত করার জন্য লড়ে যাব।’

এর আগে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ও রাতে ডিবি ও র‌্যাব পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে ফারদিন পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ এবং স্পেন যাওয়ার টাকা সংস্থানের হতাশা থেকেই মূলত আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর রামপুরা থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় যান বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ। নিখোঁজের তিনদিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ‌্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে এ ঘটনায় নিহতের বাবা রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় বান্ধবী বুশরাকে গ্রেফতারের পর ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ড শেষে ইতোমধ্যে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার কাছ থেকে খুনের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে ডিবি জানায়।

বিজনেস আওয়ার/১৫ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: