বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে বৈঠক করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ২০১৩ সালে নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের রাজধানীর শাহীনবাগের বাসায় যান। সেখানে তিনি ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের সমন্বয়কারী নিখোঁজ সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলিসহ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ খবর পেয়ে সেখানে ‘মায়ের কান্না’ নামে আরেকটি সংগঠনের সদস্যরা ১৯৭৭ সালে সেনাশাসনের সময়ে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার ন্যায়বিচার চেয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে স্মারকলিপি দিতে যায়।
সে সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মায়ের কান্নার সদস্যদের সঙ্গে কথা না বলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। সেখান থেকেই তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে সরকার থেকে তার নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়।
জানা গেছে, শাহীনবাগের ওই ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা ওয়াশিংটনকে অবহিত করেন পিটার হাস। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে জানতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ১৫ ডিসেম্বর বৈঠক করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, জরুরি বৈঠক ডেকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে পিটার ডি হাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানালে রাষ্ট্রদূত ইমরান ঢাকার অবস্থান ও পুরো ঘটনা ব্যাখ্যা করেন। তিনি প্রয়োজনে পিটার হাসের নিরাপত্তা আরও বাড়ানোরও আশ্বাস দেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠকের বিষয় নিশ্চিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, রাষ্ট্রদূত ইমরানের সঙ্গে মার্কিন সহকারী মন্ত্রীর বৈঠকটি নিয়মিত বৈঠক। তলব বা জরুরি বৈঠক না। তবে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের অপ্রীতিকর ঘটনায় বাংলাদেশের অবস্থান তাদের জানিয়েছেন।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে রাষ্ট্রদূতের বৈঠককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তলব না বলে নিয়মিত বৈঠক বলছেন। তবে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্র বলছে, এটি ছিল তলব বা জরুরি বৈঠক। এ কারণে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সূচিতেও বৈঠকের উল্লেখ ছিল না। সাধারণত জরুরি বৈঠক সূচিতে থাকে না।
বিজনেস আওয়ার/১৮ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ