ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেয়েদের নিয়ে পালানোর চেষ্টা: জাপানি মাকে ফেরালো পুলিশ

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • 54

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার চেষ্টাকালে জাপানি নারী নাকানো এরিকোকে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ বলছে, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে এরিকো দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। দুই মেয়ে মায়ের হেফাজতে ছিল। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তাদের জাপানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মা এরিকো।

পুলিশ সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনা না থাকায় তাদের যেতে দেওয়া হয়নি। শনিবার দুই মেয়ের বাবা ইমরান শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। পারিবারিক আদালতের চূড়ান্ত রায় হওয়ার আগেই দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে পালিয়ে যাচ্ছিলেন এরিকো। এ বিষয়ে ২৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে অভিযোগ করব।

এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, এভাবে এরিকোর যেতে চাওয়াটা ঠিক হয়নি। এর পরও বিষয়টি আদালতে মীমাংসা (সেটেল) করার চেষ্টা করব। সূত্র জানায়, এরিকোর মা জাপানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে দেখতে দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। তাদের তিন মেয়ে। তাদের বয়স ১১, ১০ ও ৭ বছর। ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। আর ছোট মেয়েকে তার নানির কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো। ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সি দুই মেয়েশিশুকে ফিরে পেতে বাংলাদেশে এসে ১৯ আগস্ট রিট করেন এরিকো। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট দুই শিশুকে ৩১ আগস্ট আদালতে হাজির করতে তাদের বাবা ও ফুফুকে নির্দেশ দেন। শিশুদের আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গুলশান ও আদাবর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে ২২ আগস্ট রাতে বাবার কাছ থেকে ওই দুই শিশুকে নিয়ে আসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ অবস্থায় ২৩ আগস্ট শিশুদের ফিরে পেতে আদালতে আবেদন করেন শিশুদের বাবা। সেদিন হাইকোর্ট দুই শিশুসন্তানকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে (উইমেন সাপোর্ট সেন্টার) রাখতে আদেশ দেন। তখন আদালত বলেন, এ সময়ে সকালে মা ও বিকালে বাবা তাদের মেয়েদের সঙ্গে দেখা করা ও সময় কাটাতে পারবেন। আদেশ অনুসারে ধার্য তারিখ ৩১ আগস্ট উইমেন সাপোর্ট সেন্টার থেকে সিআইডির তত্ত্বাবধানে দুই শিশু আদালতে উপস্থিত হয়। আদালতে তাদের বাবা ইমরান ও মা এরিকো উপস্থিত হন। খাস কামরায় দুই শিশুর বক্তব্য শোনেন আদালত। শিশুদের মা-বাবার বক্তব্যও শোনেন। সব পক্ষের শুনানি নিয়ে ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট গুলশানের ফ্ল্যাটে শিশুদের রাখার আদেশ দেন।

বিজনেস আওয়ার/২৫ ডিসেম্বর, ২০২২/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

মেয়েদের নিয়ে পালানোর চেষ্টা: জাপানি মাকে ফেরালো পুলিশ

পোস্ট হয়েছে : ০১:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার চেষ্টাকালে জাপানি নারী নাকানো এরিকোকে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ বলছে, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে এরিকো দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। দুই মেয়ে মায়ের হেফাজতে ছিল। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তাদের জাপানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মা এরিকো।

পুলিশ সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনা না থাকায় তাদের যেতে দেওয়া হয়নি। শনিবার দুই মেয়ের বাবা ইমরান শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। পারিবারিক আদালতের চূড়ান্ত রায় হওয়ার আগেই দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে পালিয়ে যাচ্ছিলেন এরিকো। এ বিষয়ে ২৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে অভিযোগ করব।

এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, এভাবে এরিকোর যেতে চাওয়াটা ঠিক হয়নি। এর পরও বিষয়টি আদালতে মীমাংসা (সেটেল) করার চেষ্টা করব। সূত্র জানায়, এরিকোর মা জাপানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে দেখতে দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। তাদের তিন মেয়ে। তাদের বয়স ১১, ১০ ও ৭ বছর। ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। আর ছোট মেয়েকে তার নানির কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো। ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সি দুই মেয়েশিশুকে ফিরে পেতে বাংলাদেশে এসে ১৯ আগস্ট রিট করেন এরিকো। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট দুই শিশুকে ৩১ আগস্ট আদালতে হাজির করতে তাদের বাবা ও ফুফুকে নির্দেশ দেন। শিশুদের আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গুলশান ও আদাবর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে ২২ আগস্ট রাতে বাবার কাছ থেকে ওই দুই শিশুকে নিয়ে আসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ অবস্থায় ২৩ আগস্ট শিশুদের ফিরে পেতে আদালতে আবেদন করেন শিশুদের বাবা। সেদিন হাইকোর্ট দুই শিশুসন্তানকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে (উইমেন সাপোর্ট সেন্টার) রাখতে আদেশ দেন। তখন আদালত বলেন, এ সময়ে সকালে মা ও বিকালে বাবা তাদের মেয়েদের সঙ্গে দেখা করা ও সময় কাটাতে পারবেন। আদেশ অনুসারে ধার্য তারিখ ৩১ আগস্ট উইমেন সাপোর্ট সেন্টার থেকে সিআইডির তত্ত্বাবধানে দুই শিশু আদালতে উপস্থিত হয়। আদালতে তাদের বাবা ইমরান ও মা এরিকো উপস্থিত হন। খাস কামরায় দুই শিশুর বক্তব্য শোনেন আদালত। শিশুদের মা-বাবার বক্তব্যও শোনেন। সব পক্ষের শুনানি নিয়ে ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট গুলশানের ফ্ল্যাটে শিশুদের রাখার আদেশ দেন।

বিজনেস আওয়ার/২৫ ডিসেম্বর, ২০২২/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: