বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রাজধানীর মৌচাকে বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। লাফিয়ে পড়ার আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দায়ী করে সে একটি সুইসাইড নোট লিখে যায় জানা গেছে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম, ফারজানা আক্তার মৌ (১৪)। সে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল থেকে এবার নবম শ্রেণীতে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে ছিলেন।
ফারজানা আক্তার মৌ চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার হারাইরপাড়া এলাকার সৌদি প্রবাসী আবু মুসা ও শাহনাজ আক্তার মনি দম্পতির মেয়ে।
শাহজাহানপুর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে মৌচাকের মারুফ মার্কেটের পেছনে ২৩৭/২৩৮ নম্বর নকশী ভিলা নামে বাড়ির সামনে থেকে ওই স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারনা করা হচ্ছে। মেয়েটি ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার আগে বলপেন দিয়ে ছাদের রেলিংয়ে একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছে। সেখান থেকে বলপেনটি ও তার জুতা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, মৃত মৌয়ের মামা মোস্তফা কামাল অভিযোগ করে জানান, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণিতে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছিল মৌ। তবে ইংরেজি, গণিতসহ তিনটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয় সে। আজকে তাদের দশম শ্রেণিতে ভর্তির শেষ দিন ছিল। এ জন্য মৌ তাকে (মামা) নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়েছিল অনুরোধ করতে, যাতে পরবর্তী ক্লাসে ভর্তি সুযোগ দেয়া হয়। তবে প্রধান শিক্ষক এটি মেনে নেননি। এরপর সেখান থেকে বাসায় এসে সবার অগোচরে ভবনের ছাদে চলে যায় মৌ। সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে। পরে ছাদে গিয়ে তার জুতা এবং ছাদের রেলিংয়ে হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে।
সুইসাইড নোটে ওই শিক্ষার্থী লিখেছে, ‘বাবা অনেক ইচ্ছা ছিল অনেক বড় হব, ভাল কিছু করব; কিন্তু হতে পারি নাই। মাফ করে দিও, (ইতি তোমার মা মৌ)।’
নোটে আরও লেখা হয়, ‘আমি বাঁচতে চাইছি, কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিল না, হেড মাস্টারের ভাইয়ের মেয়ে ফেল করছে, তাকে উঠানো (পরবর্তী ক্লাসে) হয়েছে, কিন্তু আমাদের হয়নি। আমার মৃত্যুর পর হলেও এর প্রতিশোধ নেয়া হোক।’
বিজনেস আওয়ার/২৬ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ