ঢাকা , বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রগতি ইন্স্যুরেন্সে নানা অনিয়ম

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
  • 47

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাবে হিসাব মান লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। এছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা, বীমা আইন, শ্রম আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। যে কারনে কোম্পানির ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাব নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য (কোয়ালিফাইড ওপিনিয়ন) দিয়েছে নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) অনুযায়ী আর্থিক বিবৃতি প্রস্তুত এবং উপস্থাপনা সম্পর্কিত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অধ্যাদেশ ১৯৬৯, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট ২০১৫ এবং আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ অনুযায়ি আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত এবং উপস্থাপন করা হয়নি। এক্ষেত্রে বিএসইসির নোটিফিকেশন বিএসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০৬/২০৮/এডমিন/৮১ অনুসরন করা হয়নি।

প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ভিত্তি ছাড়াই ভিন্ন ধরনের রিজার্ভ গঠন করে আসছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। আর্থিক হিসাবে ‘রিজার্ভ ফর এক্সসেপশনাল লস’ নামে দীর্ঘসময় ধরে রিজার্ভ গঠন করে আসছে। চলতি বছরের ৬ কোটি ৯২ লাখ টাকাসহ মোট ৯৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার এই রিজার্ভ রয়েছে। যা ‘প্রফিট অ্যান্ড লস’ অ্যাকাউন্টসে ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর মাধ্যমে কর সুবিধা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু হিসাব মান অনুযায়ি, এই রিজার্ভ গঠনের উদ্দেশ্য, আইনগত বা গঠনমূলক বাধ্যবাধকতা এবং ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তথ্যের ঘাটতির কারনে কোম্পানির বিভিন্ন বছরে গঠন করা ৫৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার আয়কর দায়ের সত্যতা যাছাই করতে পারেনি নিরীক্ষক। এছাড়া ২০১৯ সালে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা কর চার্জের পর্যাপ্ততা যাচাই করতে পারেনি। এ কোম্পানিটি আইএএস-১২ অনুযায়ি ডেফার্ড টেক্স গণনা করেনি। এছাড়া ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যালেন্সের ডেফার্ড টেক্সের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি নিরীক্ষক।

আইডিআরএ নির্ধারিত ইনস্ট্রুমেন্টে কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে কিনা, তা যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। এছাড়া সম্পদ ও দায়ের সত্যত যাচাই করা যায়নি। এ কোম্পানিটিতে বীমা আইন-১০ এর ধারা ৬৩ অনুযায়ি, ম্যানেজমেন্ট ও কমিশন ব্যয় অতিরিক্ত হয়েছে বলে তুলে ধরেছে নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক জানিয়েছে, ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাবে ২২৯ কোটি ২২ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখানো হয়েছে। কিন্তু ক্রয়মূল্য, সম্পদ পূণঃমূল্যায়ন ও অবচয়ের প্রয়োজনীয় রেকর্ডস যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষনের ঘাটতি থাকায় ওই সম্পদের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-৪০ অনুযায়ি, যে সম্পত্তি দিয়ে ভাড়া আয় করা হয়, সেই সম্পত্তিকে বিনিয়োগ সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ করতে হয়। তবে প্রগতি ইন্স্যুরেন্সে তা করা হয়নি।

এদিকে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ি ফান্ড গঠন করেনি বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক।

উল্লেখ্য, রবিবার (২৩ আগস্ট) লেনদেন শেষে প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ৪৮.৯০ টাকায়।

বিজনেস আওয়ার/২৪ আগস্ট, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

প্রগতি ইন্স্যুরেন্সে নানা অনিয়ম

পোস্ট হয়েছে : ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাবে হিসাব মান লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। এছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা, বীমা আইন, শ্রম আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। যে কারনে কোম্পানির ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাব নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য (কোয়ালিফাইড ওপিনিয়ন) দিয়েছে নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) অনুযায়ী আর্থিক বিবৃতি প্রস্তুত এবং উপস্থাপনা সম্পর্কিত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অধ্যাদেশ ১৯৬৯, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট ২০১৫ এবং আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ অনুযায়ি আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত এবং উপস্থাপন করা হয়নি। এক্ষেত্রে বিএসইসির নোটিফিকেশন বিএসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০৬/২০৮/এডমিন/৮১ অনুসরন করা হয়নি।

প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ভিত্তি ছাড়াই ভিন্ন ধরনের রিজার্ভ গঠন করে আসছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। আর্থিক হিসাবে ‘রিজার্ভ ফর এক্সসেপশনাল লস’ নামে দীর্ঘসময় ধরে রিজার্ভ গঠন করে আসছে। চলতি বছরের ৬ কোটি ৯২ লাখ টাকাসহ মোট ৯৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার এই রিজার্ভ রয়েছে। যা ‘প্রফিট অ্যান্ড লস’ অ্যাকাউন্টসে ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর মাধ্যমে কর সুবিধা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু হিসাব মান অনুযায়ি, এই রিজার্ভ গঠনের উদ্দেশ্য, আইনগত বা গঠনমূলক বাধ্যবাধকতা এবং ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তথ্যের ঘাটতির কারনে কোম্পানির বিভিন্ন বছরে গঠন করা ৫৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার আয়কর দায়ের সত্যতা যাছাই করতে পারেনি নিরীক্ষক। এছাড়া ২০১৯ সালে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা কর চার্জের পর্যাপ্ততা যাচাই করতে পারেনি। এ কোম্পানিটি আইএএস-১২ অনুযায়ি ডেফার্ড টেক্স গণনা করেনি। এছাড়া ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যালেন্সের ডেফার্ড টেক্সের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি নিরীক্ষক।

আইডিআরএ নির্ধারিত ইনস্ট্রুমেন্টে কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে কিনা, তা যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। এছাড়া সম্পদ ও দায়ের সত্যত যাচাই করা যায়নি। এ কোম্পানিটিতে বীমা আইন-১০ এর ধারা ৬৩ অনুযায়ি, ম্যানেজমেন্ট ও কমিশন ব্যয় অতিরিক্ত হয়েছে বলে তুলে ধরেছে নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক জানিয়েছে, ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাবে ২২৯ কোটি ২২ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখানো হয়েছে। কিন্তু ক্রয়মূল্য, সম্পদ পূণঃমূল্যায়ন ও অবচয়ের প্রয়োজনীয় রেকর্ডস যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষনের ঘাটতি থাকায় ওই সম্পদের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-৪০ অনুযায়ি, যে সম্পত্তি দিয়ে ভাড়া আয় করা হয়, সেই সম্পত্তিকে বিনিয়োগ সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ করতে হয়। তবে প্রগতি ইন্স্যুরেন্সে তা করা হয়নি।

এদিকে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ি ফান্ড গঠন করেনি বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক।

উল্লেখ্য, রবিবার (২৩ আগস্ট) লেনদেন শেষে প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ৪৮.৯০ টাকায়।

বিজনেস আওয়ার/২৪ আগস্ট, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: