ঢাকা , রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ই-ভ্যালির লোভনীয় অফারে আকৃষ্ট হচ্ছেন হাজার হাজার গ্রাহক

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
  • 48

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশি ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি থেকে পণ্য কিনলেই ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দিয়ে ব্যবসা করছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১০০ টাকার পণ্য কিনলে সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি অর্থ ফেরত দেওয়ার লোভনীয় এই অফারে হাজার হাজার গ্রাহক আকৃষ্ট হচ্ছেন।

অনলাইনে পণ্য কিনলে সময় বাঁচে তাই ঘরের দুয়ারে প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিবন্ধন নেয় ই-ভ্যালি। মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, মোবাইল ফোনসেট, টেলিভিশন ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি গাড়ি বিক্রিতেও নেমেছে। ৫০ হাজার টাকার পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানি কার্যক্রম শুরুর দুই বছর পার না হতেই এক হাজার কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। ব্যবসা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে নানা অভিযোগও জমা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়ের ধরন দেখে বিশেষজ্ঞরাও আশঙ্কা করছেন, এতে মানি লন্ডারিংয়ের সুযোগ রয়েছে।

ই-ভ্যালি জানায়, ৩৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে তাদের নিবন্ধিত গ্রাহক । আর প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার পণ্য বেচা-বিক্রি হচ্ছে। তারা ১৫০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির বিপরীতে দেড় কোটি টাকার কর দিয়েছে সরকারকে। এছাড়াও প্রতি মাসে গড় ১০ লাখ করে পণ্য বিক্রির অর্ডার পাচ্ছে তারা।

যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) থেকে ২০১৮ সালের ১৪ মে নিবন্ধন নেয় ই-ভ্যালি ডটকম লিমিটেড। এর অনুমোদিত মূলধন ৫ লাখ টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ৫ হাজার শেয়ার রয়েছে। এর মাধ্য ১ হাজার শেয়ার রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের আর বাকি ৪ হাজার শেয়ার রয়েছে তাঁর স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের নামে। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য রয়েছে ১০ টাকা করে। এহিসেবে পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল আর বাকি ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন।

মোহাম্মদ রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রিধারী। ঢাকা ব্যাংক দিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। এরপরে ‘কিডস’ব্র্যান্ডের ডায়াপার আমদানি শুরু করেন। পরেই তিনি নিয়ে আসেন ই-ভ্যালি। শুরুর দিকে চালু করা হয় ‘ভাউচার’ নামক একটি পদ্ধতি, এতে দেওয়া হতো ৩০০ শতাংশ ও ২০০ শতাংশ ক্যাশব্যাক। বর্তমানে ১৫০ শতাংশ, ১০০ শতাংশ এবং পরে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। শুরুর দিকে ১০ টাকায় একটি পেনড্রাইভ এবং ১৬ টাকায় টি-শার্ট বিক্রি করে সাড়া জাগায় ই-ভ্যালি।

রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর সম্প্রতি ই-ভ্যালি নিয়ে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেন, পণ্য আছে ৫টি, যেহেতু কেউ জানে না, তাই টাকা জমা দিলেন হয়তো ১০০ জন। পণ্য পাবেন ৫ জন। বাকি ৯৫ জনের টাকা ঝুলে থাকবে। আর সবার বোঝা উচিত যে বিক্রেতা বা কোম্পানি আপনাকে পণ্যের সঙ্গে ১০০ শতাংশ, ১৫০ শতাংশ টাকা ফেরত দিচ্ছে। নিশ্চয়ই তিনি পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বা পকেট থেকে দেবেন না। দেবেন নিশ্চয়ই অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে।

বিজনেস আওয়ার/২৪ আগস্ট, ২০২০/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ই-ভ্যালির লোভনীয় অফারে আকৃষ্ট হচ্ছেন হাজার হাজার গ্রাহক

পোস্ট হয়েছে : ১২:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশি ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি থেকে পণ্য কিনলেই ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দিয়ে ব্যবসা করছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১০০ টাকার পণ্য কিনলে সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি অর্থ ফেরত দেওয়ার লোভনীয় এই অফারে হাজার হাজার গ্রাহক আকৃষ্ট হচ্ছেন।

অনলাইনে পণ্য কিনলে সময় বাঁচে তাই ঘরের দুয়ারে প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিবন্ধন নেয় ই-ভ্যালি। মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, মোবাইল ফোনসেট, টেলিভিশন ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি গাড়ি বিক্রিতেও নেমেছে। ৫০ হাজার টাকার পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানি কার্যক্রম শুরুর দুই বছর পার না হতেই এক হাজার কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। ব্যবসা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে নানা অভিযোগও জমা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়ের ধরন দেখে বিশেষজ্ঞরাও আশঙ্কা করছেন, এতে মানি লন্ডারিংয়ের সুযোগ রয়েছে।

ই-ভ্যালি জানায়, ৩৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে তাদের নিবন্ধিত গ্রাহক । আর প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার পণ্য বেচা-বিক্রি হচ্ছে। তারা ১৫০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির বিপরীতে দেড় কোটি টাকার কর দিয়েছে সরকারকে। এছাড়াও প্রতি মাসে গড় ১০ লাখ করে পণ্য বিক্রির অর্ডার পাচ্ছে তারা।

যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) থেকে ২০১৮ সালের ১৪ মে নিবন্ধন নেয় ই-ভ্যালি ডটকম লিমিটেড। এর অনুমোদিত মূলধন ৫ লাখ টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ৫ হাজার শেয়ার রয়েছে। এর মাধ্য ১ হাজার শেয়ার রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের আর বাকি ৪ হাজার শেয়ার রয়েছে তাঁর স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের নামে। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য রয়েছে ১০ টাকা করে। এহিসেবে পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল আর বাকি ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন।

মোহাম্মদ রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রিধারী। ঢাকা ব্যাংক দিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। এরপরে ‘কিডস’ব্র্যান্ডের ডায়াপার আমদানি শুরু করেন। পরেই তিনি নিয়ে আসেন ই-ভ্যালি। শুরুর দিকে চালু করা হয় ‘ভাউচার’ নামক একটি পদ্ধতি, এতে দেওয়া হতো ৩০০ শতাংশ ও ২০০ শতাংশ ক্যাশব্যাক। বর্তমানে ১৫০ শতাংশ, ১০০ শতাংশ এবং পরে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। শুরুর দিকে ১০ টাকায় একটি পেনড্রাইভ এবং ১৬ টাকায় টি-শার্ট বিক্রি করে সাড়া জাগায় ই-ভ্যালি।

রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর সম্প্রতি ই-ভ্যালি নিয়ে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেন, পণ্য আছে ৫টি, যেহেতু কেউ জানে না, তাই টাকা জমা দিলেন হয়তো ১০০ জন। পণ্য পাবেন ৫ জন। বাকি ৯৫ জনের টাকা ঝুলে থাকবে। আর সবার বোঝা উচিত যে বিক্রেতা বা কোম্পানি আপনাকে পণ্যের সঙ্গে ১০০ শতাংশ, ১৫০ শতাংশ টাকা ফেরত দিচ্ছে। নিশ্চয়ই তিনি পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বা পকেট থেকে দেবেন না। দেবেন নিশ্চয়ই অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে।

বিজনেস আওয়ার/২৪ আগস্ট, ২০২০/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: