ঢাকা , রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশিদের জন্য বাড়ি কেনা নিষিদ্ধ করলো কানাডা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩
  • 54

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়েছে কানাডা। এখন থেকে বিনিয়োগকারী হিসেবে কানাডায় আবাসিক সম্পত্তি কিনতে পারবে না বিদেশিরা। দুই বছরের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। খবর বার্তাসংস্থা এএফপির।

রোববার (১ জানুয়ারি) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরও হয়েছে। মূলত আবাসন সংকটের সম্মুখীন কানাডার স্থানীয়দের জন্য আরও বাড়ি সহজলভ্য রাখার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। -এএফপি, এনডিটিভি

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সোমবার (২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডায় বিদেশিদের আবাসিক সম্পত্তি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও এক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন উদ্বাস্তু এবং কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা যারা দেশটির নাগরিক নন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা বাড়ি কেনার অনুমতি পাবেন।

গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে অটোয়া আরও স্পষ্ট করে যে, এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র শহরের বাসস্থানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এবং গ্রীষ্মকালীন কটেজগুলোর মতো বিনোদনমূলক সম্পত্তিগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না। আপাতত দুই বছরের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। এএফপি বলছে, বিদেশিদের বাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দুই বছরের এই অস্থায়ী পদেক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২০২১ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রস্তাব করেছিলেন। সেসময় কানাডাজুড়ে ক্রমবর্ধমান দাম অনেক কানাডিয়ানদের জন্য বাড়ির মালিকানা নাগালের বাইরে রেখেছিল।

২০২১ সালে ট্রুডোর লিবারেল পার্টির নির্বাচনী মঞ্চ থেকে বলা হয়েছিল, ‘কানাডায় একটি বাড়ির আকাঙ্ক্ষা মুনাফাভোগী, সম্পদশালী কর্পোরেশন এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। এটি আবাসনে আকাশচুম্বী দামের একটি বাস্তব সমস্যার দিকে পরিচালিত করছে। বাড়িগুলো মানুষের জন্য, বিনিয়োগকারীদের জন্য নয়।’ সেই ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর নন-কানাডিয়ান অ্যাক্টের মাধ্যমে (বিদেশিদের) আবাসিক সম্পত্তি ক্রয়ের ওপর চুপিসারে নিষেধাজ্ঞা প্রবর্তন করে লিবারেল পার্টি। ভ্যাঙ্কুভার এবং টরন্টোর মতো প্রধান বাজারগুলোও অনাবাসী এবং খালি বাড়ির ওপর কর আরোপ করে।

এরপর কানাডায় বাড়ির দাম অনেকটা কমে আসে। কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, কানাডায় বাড়ির গড় দাম ২০২২ সালের শুরুতে ৫ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার থেকে গত মাসে মাত্র ৪ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। অবশ্য অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিদেশি ক্রেতাদের ওপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা কানাডার বাড়িগুলোকে আরও সাশ্রয়ী করতে কার্যকর কোনও প্রভাব ফেলবে না। এই ধরনের পদক্ষেপের পরিবর্তে বরং তারা চাহিদা মেটাতে আরও আবাসন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করছেন।

কানাডার জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা অনুসারে, দেশটিতে বিদেশিদের বাড়ির মালিকানা পাঁচ শতাংশেরও কম। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির জাতীয় আবাসন সংস্থা কানাডা মর্টগেজ অ্যান্ড হাউজিং কর্পোরেশন গত বছরের জুনের একটি প্রতিবেদনে বলেছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে প্রায় ১৯ মিলিয়ন হাউজিং ইউনিট প্রয়োজন হবে। এর অর্থ হলো দেশটিতে আরও ৫.৮ মিলিয়ন নতুন বাড়ি তৈরি করতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/০২ জানুয়ারি, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিদেশিদের জন্য বাড়ি কেনা নিষিদ্ধ করলো কানাডা

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়েছে কানাডা। এখন থেকে বিনিয়োগকারী হিসেবে কানাডায় আবাসিক সম্পত্তি কিনতে পারবে না বিদেশিরা। দুই বছরের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। খবর বার্তাসংস্থা এএফপির।

রোববার (১ জানুয়ারি) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরও হয়েছে। মূলত আবাসন সংকটের সম্মুখীন কানাডার স্থানীয়দের জন্য আরও বাড়ি সহজলভ্য রাখার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। -এএফপি, এনডিটিভি

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সোমবার (২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডায় বিদেশিদের আবাসিক সম্পত্তি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও এক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন উদ্বাস্তু এবং কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা যারা দেশটির নাগরিক নন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা বাড়ি কেনার অনুমতি পাবেন।

গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে অটোয়া আরও স্পষ্ট করে যে, এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র শহরের বাসস্থানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এবং গ্রীষ্মকালীন কটেজগুলোর মতো বিনোদনমূলক সম্পত্তিগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না। আপাতত দুই বছরের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। এএফপি বলছে, বিদেশিদের বাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দুই বছরের এই অস্থায়ী পদেক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২০২১ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রস্তাব করেছিলেন। সেসময় কানাডাজুড়ে ক্রমবর্ধমান দাম অনেক কানাডিয়ানদের জন্য বাড়ির মালিকানা নাগালের বাইরে রেখেছিল।

২০২১ সালে ট্রুডোর লিবারেল পার্টির নির্বাচনী মঞ্চ থেকে বলা হয়েছিল, ‘কানাডায় একটি বাড়ির আকাঙ্ক্ষা মুনাফাভোগী, সম্পদশালী কর্পোরেশন এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। এটি আবাসনে আকাশচুম্বী দামের একটি বাস্তব সমস্যার দিকে পরিচালিত করছে। বাড়িগুলো মানুষের জন্য, বিনিয়োগকারীদের জন্য নয়।’ সেই ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর নন-কানাডিয়ান অ্যাক্টের মাধ্যমে (বিদেশিদের) আবাসিক সম্পত্তি ক্রয়ের ওপর চুপিসারে নিষেধাজ্ঞা প্রবর্তন করে লিবারেল পার্টি। ভ্যাঙ্কুভার এবং টরন্টোর মতো প্রধান বাজারগুলোও অনাবাসী এবং খালি বাড়ির ওপর কর আরোপ করে।

এরপর কানাডায় বাড়ির দাম অনেকটা কমে আসে। কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, কানাডায় বাড়ির গড় দাম ২০২২ সালের শুরুতে ৫ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার থেকে গত মাসে মাত্র ৪ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। অবশ্য অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিদেশি ক্রেতাদের ওপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা কানাডার বাড়িগুলোকে আরও সাশ্রয়ী করতে কার্যকর কোনও প্রভাব ফেলবে না। এই ধরনের পদক্ষেপের পরিবর্তে বরং তারা চাহিদা মেটাতে আরও আবাসন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করছেন।

কানাডার জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা অনুসারে, দেশটিতে বিদেশিদের বাড়ির মালিকানা পাঁচ শতাংশেরও কম। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির জাতীয় আবাসন সংস্থা কানাডা মর্টগেজ অ্যান্ড হাউজিং কর্পোরেশন গত বছরের জুনের একটি প্রতিবেদনে বলেছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে প্রায় ১৯ মিলিয়ন হাউজিং ইউনিট প্রয়োজন হবে। এর অর্থ হলো দেশটিতে আরও ৫.৮ মিলিয়ন নতুন বাড়ি তৈরি করতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/০২ জানুয়ারি, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: