বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক :প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছিল বিএনপি, এরশাদ- এমন দাবি করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সরকার তো প্রশাসন নিয়েই কাজ করে। সরকারের রাজনৈতিক অংশ এবং প্রশাসনিক অংশ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত এবং একসাথেই কাজ করতে হয়। সরকার প্রশাসনের মাধ্যমেই তার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। আমাদের সরকার প্রশাসনকে কোনোভাবেই দলীয়করণ করেনি এবং করার কোন পরিকল্পনাও আমাদের নেই।’
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সমাপনী দিনে ডিসিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
এসময় তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যারা ডিসি হয়েছেন কিংবা বিভাগীয় কমিশনার বা যারা সচিব হয়েছেন; যোগ্যতার ভিত্তিতে এসএসবির মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের পদায়ন করা হয়েছে। সুতরাং প্রশাসনকে আমরা কখনো দলীয়করণ করিনি বরং ইতিপূর্বে বিএনপি বিভিন্ন সময় যখন ক্ষমতায় ছিল জিয়াউর রহমানের সময়, খালেদা জিয়ার সময়, সাত্তার সাহেবের সময় আর এরশাদ সাহেব যখন ক্ষমতায় ছিল তখন প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছিল।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে আজকে এখানে আলোচনা হয়নি, কারণ সরকার নির্বাচন আয়োজন করে না। নির্বাচনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা দিতে হলে জেলা প্রশাসনকে সেটি নির্বাচন কমিশনই দেবে। সেটি আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়।’
পাশাপাশি সিনেমা হল পুনর্নির্মাণ, পুনরায় চালু করা, আধুনিকায়ন ও নতুন সিনেমা হল নির্মাণের জন্য যে ১ হাজার কোটি টাকা বিশেষ ঋণ তহবিল গঠন করা হয়েছে সেটি মাঠ পর্যায়ে সবাইকে অবহিত করার জন্য জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানান মন্ত্রী।
তিনি জানান, ‘জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে উপজেলা পর্যায়ে তথ্য অফিস করার প্রস্তাবও এসেছে। তবে আমি মনে করি উপজেলা পর্যায়ে সব মন্ত্রণালয়ের অফিস থাকতে হবে তা নয়, ক্রমাগতভাবে সরকারের আকার বড় করা সমীচীন নয় সেটি তাদের বলেছি।’
এছাড়া অনিবন্ধিত পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও ভুল তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা ও করণীয় বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের দিক-নির্দেশনা দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৬২টি অনলাইন সংবাদ পোর্টাল, ১৬৯টি দৈনিক পত্রিকার অনলাইন পোর্টাল, ১৫টি টেলিভিশনের অনলাইন পোর্টাল ও ১৪টি আইপিটিভিকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে, সেটি জেলা প্রশাসকদের জানানো হয়েছে। বাকি সবগুলো রেজিস্ট্রেশন-বিহীন।’
‘জেলা পর্যায়ে অনেক অনলাইন পোর্টাল, আইপি টিভি ও ইউটিউব চ্যানেল আছে, যেগুলোর কোনো নিবন্ধন নেই এবং যারা সেগুলোতে কাজ করে তারা নিজেদের আবার সাংবাদিক পরিচয় দেয় এবং সেগুলোর মাধ্যমে অনেক সময় গুজব, ভুল তথ্য পরিবেশন এবং বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
ড. হাছান জানান, ‘অনিবন্ধিত পোর্টালে যদি দেখা যায় কেউ বিভ্রান্তি বা গুজব ছড়াচ্ছে কিংবা অসত্য বা ভুল সংবাদ পরিবেশন করে সমাজে হানাহানি তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে অথবা কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে সেটিকে আবার ভিন্ন কাজে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে- তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সত্য তথ্যটা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবেশন করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ের গুজব প্রতিরোধ সেলকে জানাতে জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
বাস্তব প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘গুজব ছড়ায় কয়েক ঘণ্টায়। আর সেটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কয়েকদিন সময় লাগে। কারণ এর একটা প্রক্রিয়া আছে, সেটি বিটিআরসিকে জানাতে হয়। এই সময়ে গুজব থেকে রক্ষা পেতে সোশ্যাল মিডিয়াতেই যেন বলা হয় সেটি গুজব এবং আসলে সত্যটা এই। তারপর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া।’
বিজনেস আওয়ার/২৬ জানুয়ারি, ২০২৩/এস এম