ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পবিত্র আশুরা আজ

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২০
  • 68

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। আশুরা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক তাৎপর্যময় ও গুরুত্ববহ দিন। মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে। আশুরা দিবসে ঐতিহাসিক বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ ও স্মৃতিবহ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে আশুরার দিন বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে সমৃদ্ধ। তবে কারবালা প্রান্তরে সংঘটিত নবী দৌহিত্র হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত এ দিনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

সত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ৬১ হিজরিতে আশুরার দিনে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে কারবালা প্রান্তরে নির্মমভাবে শহীদ হন মর্যাদাবান সাহাবি হোসাইন (রা.), তার পরিবার ও সহচররা। বলা বাহুল্য, পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলাম সবসময় সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামের সুমহান আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য তার আত্মত্যাগ ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য ত্যাগের মহিমা মুসলিম উম্মাহর এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কাছে ১০ মহররম নানা কারণে অতি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ৬১ হিজরিতে পঞ্চম খলিফা হজরত মুয়াবিয়া (রা.) হজরত মুগির (রা.) এর পরামর্শে পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। ইসলামি শরীয়ায় বংশানুক্রমিক শাসন বা রাজতন্ত্র হারাম। তাই ইয়াজিদের কাছে বাইয়াত নিতে অস্বীকৃতি জানান ইমাম হোসাইন (রা.)। এর প্রতিবাদে তিনি মদিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান।

মক্কা থেকে তিনি কুফার উদ্দেশে হিজরত করেন। পথে কারবালায় থামে তার কাফেলা। ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীদের আটক করে মদিনায় ফিরিয়ে নিতে উমর ইবনে সাদ আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য কারবালায় প্রবেশ করে। সিমার ইবনে জিলজুশান মুরাদিও কারবালায় সৈন্য সমাবেশ ঘটায়। আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে ইয়াজিদ বাহিনী ইমাম হোসাইন (রা.) এর শিবির অবরোধ করে। তারা পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
শিবিরের নারী-শিশুসহ সবাই তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পড়েন। কিন্তু ইমাম হোসাইন (রা.) আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানান।

অবরোধ অব্যাহত থাকলে ১০ মহররম ইয়াজিদ বাহিনীর অবরোধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন ইমাম হোসাইন (রা.)। অসম যুদ্ধে ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তার ৭২ সঙ্গী শাহাদাতবরণ করেন। সিমার ইবনে জিলজুশান ইমাম হোসাইনের (রা.) কণ্ঠদেশে ছুরি চালিয়ে হত্যা করে। কারবালার বেদনাদায়ক ইতিহাস ছাড়াও দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরো অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। দেশে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতির কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ধর্মপ্রাণ নগরবাসী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইমাম বাড়াগুলোতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন। এ উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ।

বিজনেস আওয়ার/৩০ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পবিত্র আশুরা আজ

পোস্ট হয়েছে : ১০:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। আশুরা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক তাৎপর্যময় ও গুরুত্ববহ দিন। মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে। আশুরা দিবসে ঐতিহাসিক বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ ও স্মৃতিবহ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে আশুরার দিন বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে সমৃদ্ধ। তবে কারবালা প্রান্তরে সংঘটিত নবী দৌহিত্র হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত এ দিনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

সত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ৬১ হিজরিতে আশুরার দিনে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে কারবালা প্রান্তরে নির্মমভাবে শহীদ হন মর্যাদাবান সাহাবি হোসাইন (রা.), তার পরিবার ও সহচররা। বলা বাহুল্য, পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলাম সবসময় সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামের সুমহান আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য তার আত্মত্যাগ ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য ত্যাগের মহিমা মুসলিম উম্মাহর এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কাছে ১০ মহররম নানা কারণে অতি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ৬১ হিজরিতে পঞ্চম খলিফা হজরত মুয়াবিয়া (রা.) হজরত মুগির (রা.) এর পরামর্শে পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। ইসলামি শরীয়ায় বংশানুক্রমিক শাসন বা রাজতন্ত্র হারাম। তাই ইয়াজিদের কাছে বাইয়াত নিতে অস্বীকৃতি জানান ইমাম হোসাইন (রা.)। এর প্রতিবাদে তিনি মদিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান।

মক্কা থেকে তিনি কুফার উদ্দেশে হিজরত করেন। পথে কারবালায় থামে তার কাফেলা। ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীদের আটক করে মদিনায় ফিরিয়ে নিতে উমর ইবনে সাদ আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য কারবালায় প্রবেশ করে। সিমার ইবনে জিলজুশান মুরাদিও কারবালায় সৈন্য সমাবেশ ঘটায়। আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে ইয়াজিদ বাহিনী ইমাম হোসাইন (রা.) এর শিবির অবরোধ করে। তারা পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
শিবিরের নারী-শিশুসহ সবাই তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পড়েন। কিন্তু ইমাম হোসাইন (রা.) আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানান।

অবরোধ অব্যাহত থাকলে ১০ মহররম ইয়াজিদ বাহিনীর অবরোধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন ইমাম হোসাইন (রা.)। অসম যুদ্ধে ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তার ৭২ সঙ্গী শাহাদাতবরণ করেন। সিমার ইবনে জিলজুশান ইমাম হোসাইনের (রা.) কণ্ঠদেশে ছুরি চালিয়ে হত্যা করে। কারবালার বেদনাদায়ক ইতিহাস ছাড়াও দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরো অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। দেশে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতির কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ধর্মপ্রাণ নগরবাসী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইমাম বাড়াগুলোতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন। এ উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ।

বিজনেস আওয়ার/৩০ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: