ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধুঁকতে থাকা ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডের বড় লোকসান

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ব্যবসা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৭ সালের নভেম্বরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করা হয় তারকাটা, পেরেক, ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোডস, জি.আই ওয়ার ও ব্ল্যাক ওয়ার উৎপাদকারী ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস কোম্পানিকে। কিন্তু শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের ৪ বছরের মধ্যে চলতি মূলধন (দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থ) ঘাটতিতে কোম্পানিটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম তৈরী হয়। যেখানে কোম্পানির অধিকাংশ বিভাগ (সেকশন) বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় মালিকানায় পরিবর্তন এসেছে। তবে সেটা ভালো কারো কাছে হস্তান্তর হয়েছে, সেটা বলার সুযোগ নেই।

ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের উদ্যোক্তা/পরিচালকদের শেয়ার কিনে নিয়েছে আরেক তালিকাভুক্ত এসএস স্টিলের উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা। যারা নিজেদের এসএস স্টিলকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না। ওই কোম্পানির ব্যবসায় নেই কোন উন্নতি। নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছে বোনাস শেয়ার। যাতে অনেকেই কোম্পানির দেখানো মুনাফার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। লোকসান করে কৃত্রিম মুনাফা দেখানো হতে পারে বলেও তাদের ধারনা। সেই কোম্পানির লোকজনই দায়িত্ব নিয়েছে ধংসপ্রাপ্ত ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের।

২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর ইস্যু ম্যানেজার এমটিবি ক্যাপিটালের হাত ধরে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়া ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের জন্য সাধারন বিনিয়োগকারীদের থেকে একই বছরে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। মেশিনারীজ ও ইক্যুপমেন্ট ক্রয় এবং ঋণ পরিশোধের জন্য এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

যা সংগ্রহের ৪ বছরের মধ্যেই দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার মতো আর্থিক সংকটে পড়ে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস। এর ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে কোম্পানির অধিকাংশ সেকশন বন্ধ ছিল বলে আর্থিক হিসাবে জানানো হয়।

চলতি মূলধন ঘাটতিকে একটি কোম্পানির জন্য বিপদ সংকেত বলে জানান দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ মোঃ শায়খুল ইসলাম। তিনি বলেন, চলতি মূলধনের ঘাটতি মানে একটি কোম্পানি দূর্বল হয়ে পড়েছে। এবং এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না পারলে পুরো কোম্পানি একসময় বন্ধ হয়ে যাবে।

ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি মূল্য থেকে উৎপাদন ব্যয়, প্রশাসনিক ব্যয়, সুদজনিত ব্যয়, আয়কর ব্যয় শেষে নিট লোকসান হয়েছে ১১ কোটি ৭ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ১.৬৫ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরে হয়েছিল নিট মুনাফা ৫৫ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ০.০৮ টাকা।

একই বিষয়ে জানতে ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানির প্রোফাইলে যোগাযোগ করার মতো কারও নাম্বার পাওয়া যায়নি। অথচ প্রতিটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রোফাইলে কোম্পানি সচিবের নাম ও তার ফোন নাম্বার দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ধুঁকতে থাকা ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডের বড় লোকসান

পোস্ট হয়েছে : ০১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ব্যবসা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৭ সালের নভেম্বরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করা হয় তারকাটা, পেরেক, ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোডস, জি.আই ওয়ার ও ব্ল্যাক ওয়ার উৎপাদকারী ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস কোম্পানিকে। কিন্তু শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের ৪ বছরের মধ্যে চলতি মূলধন (দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থ) ঘাটতিতে কোম্পানিটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম তৈরী হয়। যেখানে কোম্পানির অধিকাংশ বিভাগ (সেকশন) বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় মালিকানায় পরিবর্তন এসেছে। তবে সেটা ভালো কারো কাছে হস্তান্তর হয়েছে, সেটা বলার সুযোগ নেই।

ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের উদ্যোক্তা/পরিচালকদের শেয়ার কিনে নিয়েছে আরেক তালিকাভুক্ত এসএস স্টিলের উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা। যারা নিজেদের এসএস স্টিলকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না। ওই কোম্পানির ব্যবসায় নেই কোন উন্নতি। নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছে বোনাস শেয়ার। যাতে অনেকেই কোম্পানির দেখানো মুনাফার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। লোকসান করে কৃত্রিম মুনাফা দেখানো হতে পারে বলেও তাদের ধারনা। সেই কোম্পানির লোকজনই দায়িত্ব নিয়েছে ধংসপ্রাপ্ত ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের।

২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর ইস্যু ম্যানেজার এমটিবি ক্যাপিটালের হাত ধরে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়া ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের জন্য সাধারন বিনিয়োগকারীদের থেকে একই বছরে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। মেশিনারীজ ও ইক্যুপমেন্ট ক্রয় এবং ঋণ পরিশোধের জন্য এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

যা সংগ্রহের ৪ বছরের মধ্যেই দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার মতো আর্থিক সংকটে পড়ে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস। এর ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে কোম্পানির অধিকাংশ সেকশন বন্ধ ছিল বলে আর্থিক হিসাবে জানানো হয়।

চলতি মূলধন ঘাটতিকে একটি কোম্পানির জন্য বিপদ সংকেত বলে জানান দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ মোঃ শায়খুল ইসলাম। তিনি বলেন, চলতি মূলধনের ঘাটতি মানে একটি কোম্পানি দূর্বল হয়ে পড়েছে। এবং এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না পারলে পুরো কোম্পানি একসময় বন্ধ হয়ে যাবে।

ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডসের ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি মূল্য থেকে উৎপাদন ব্যয়, প্রশাসনিক ব্যয়, সুদজনিত ব্যয়, আয়কর ব্যয় শেষে নিট লোকসান হয়েছে ১১ কোটি ৭ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ১.৬৫ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরে হয়েছিল নিট মুনাফা ৫৫ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ০.০৮ টাকা।

একই বিষয়ে জানতে ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানির প্রোফাইলে যোগাযোগ করার মতো কারও নাম্বার পাওয়া যায়নি। অথচ প্রতিটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রোফাইলে কোম্পানি সচিবের নাম ও তার ফোন নাম্বার দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: