1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : user : user
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
বিএসইসির টি+৩ সিদ্ধান্তে ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে গতি তরান্বিত
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

বিএসইসির টি+৩ সিদ্ধান্তে ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে গতি তরান্বিত

  • পোস্ট হয়েছে : সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০২০
print sharing button

রেজোয়ান আহমেদ : ব্যবসা বন্ধ ও লভ্যাংশ দেয় না এমন পচাঁ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়। আর এই ক্যাটাগরির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদেরকে নিরুৎসাহিত করার জন্য সেটেলমেন্ট কার্যক্রম টি+৯-এ সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গত ১৩ আগস্ট ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির উন্নয়নে অনেকগুলো কার্যকরি সংস্কারের পাশাপাশি সেকেন্ডারি মার্কেটের জন্য টি+৩ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা এই ক্যাটাগরির পচাঁ শেয়ারের গেম্বলারদেরকে গেম্বলিং করতে উজ্জীবিত করেছে।

কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের পরে ‘জেড’ ক্যাটাগরি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছাস করে বিনিয়োগকারীরা। একইসঙ্গে এই ক্যাটাগরির পচাঁ শেয়ারে অস্বাভাবিক উত্থান তরান্বিত করেছে টি+৩ সিদ্ধান্ত। যে তালিকায় সম্পদ ঋণাত্মক, বিগত ১৫ বছরে লভ্যাংশ দেয়নি, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায় লোকসানে এমন কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানির দর কয়েকদিনের ব্যবধানে ১০০ শতাংশের বেশি পর্যন্ত বেড়েছে। এই দর বৃদ্ধির খেলায় সাধারন বিনিয়োগকারীরাও জড়িয়ে পড়েছে। যাদেরকে একসময় নিশ্চিত লোকসানের কবলে পড়তে হবে।

বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে সেটেলমেন্ট হতে টি+৯ এর কারনে বিক্রি করে টাকা ফেরত পেতে অনেকদিন সময় লাগে। এতে করে ওই শেয়ারের দাম এই ৯ কার্যদিবসের মধ্যে পতন হওয়ারও সম্ভাবনা বেশি থাকে। যে কারনে ঝুকিঁর পরিমাণ বেশি। কিন্তু টি+৩ এর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে অন্যসব ক্যাটাগরির সঙ্গে ‘জেড’ ক্যাটাগরির পার্থক্য থাকবে মাত্র ১ কার্যদিবস।

কমিশনের ওই সভায় ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির উন্নয়নে বেশ কিছু ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। যা কোম্পানিগুলোকে ব্যবসায় উন্নতি করতে সহযোগিতা করবে। এরমধ্যে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ধারনকৃত শেয়ারে বিক্রি, হস্তান্তর ও বন্ধকী দেওয়ার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া পর্ষদ পূণর্গঠন, বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ, পর্যবেক্ষক বসানো ও পয়তাল্লিশ কর্মদিবসের মধ্যে বিদ্যমান বোর্ড পূনর্গঠন করতে ব্যর্থ হলে বর্তমান পরিচালক ও উদ্যোক্তাদেরকে শেয়ারবাজারে কোন তালিকাভুক্ত কোম্পানি বা মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে পরিচালক হিসেবে থাকার সুযোগ বন্ধ করেছে। কমিশনের এসব সিদ্ধান্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির সংস্কারে কার্যকরি পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে কমিশনের কিছু সিদ্ধান্তের ফলে ভবিষ্যতে ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোম্পানির সংখ্যা বাড়বে। তবে সেটেলমেন্ট সম্পন্ন করার সময় কমিয়ে টি+৩-তে আনার কারনে তার সুফল পাওয়া যাবে না।ওইদিন কমিশন সভায় পরপর দুইবছর নগদ লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরপর ২ বছর এজিএম করতে ব্যর্থ হলে, পরপর ২ বছর পরিচালন লোকসান ও ঋণাত্মক পরিচালন নগদ প্রবাহ এবং পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে সংরক্ষিত আয় বেশি ঋণাত্মক হওয়া কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানো হবে।

এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবেই ভবিষ্যতে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু এতে করে সেকেন্ডারি মার্কেটের গেম্বলিংয়ে কোন প্রভাব পড়বে না বা সুশাষন বাড়বে না। বরং টি+৩ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই গেম্বলিংয়ের রাস্তা প্রশস্থ করা হয়েছে।   

অনেক আগে থেকেই একটি গেম্বলার শ্রেণী ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে গেম্বলিং করে। কিন্তু তাদেরকে সুশাসনের আওতায় আনার জন্য ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে কোন সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। উল্টো সেটেলমেন্ট সময় ৬দিন কমিয়ে টি+৩তে এনে সেকেন্ডারি মার্কেটে গেম্বলিংয়ের গতি বাড়ানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। 

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএমবিএ) এর সভাপতি ছায়েদুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, টি+৩ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অস্বাভাবিক উত্থানে গতি বেড়েছে এটা ঠিক। তবে এই ক্যাটাগরির শেয়ারে আগেও গেম হতো। তাই দোষারোপ না করে নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র আইন দিয়ে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না, যদি বিনিয়োগকারীরা সচেতন না হন।

তিনি বলেন, ‘জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে মার্জিণ ঋণ দেওয়া হয় না। এছাড়া লেনদেন সেটেলমেন্টেও সময় বেশি লাগে। এসব বৈশিষ্টের মাধ্যমে ‘জেড’ ক্যাটাগরিকে আলাদা করা হয়েছে। তারপরেও বিনিয়োগকারীরা যদি ওই ক্যাটাগরির পচাঁ শেয়ারে বিনিয়োগ করে ঝুকিঁ নিতে চায়, তাহলে কার কি করার থাকে। তাই নিজেদেরকেই সবার আগে সচেতন হতে হবে।  

নিম্নে কমিশনের ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে টি+৩ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে শেয়ারবাজারের সবচেয়ে পচাঁ কয়েকটি কোম্পানির দর বৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নাম১৩ আগস্টের দর৩০ আগস্টের দরব্যবধান
জিলবাংলা সুগার মিলস৯৭.৮০২০০.২০১০৫%
সাভার রিফ্রেক্টরিজ১৫৪.১০২৫৫.২০৬৬%
শ্যামপুর সুগার মিলস৪৭.১০৭৩.৩০৫৬%
ইমাম বাটন২৩.১০৩৩.৩০৪৪%
মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ১২.৬০১৮৪৩%
জুট স্পিনার্স৯৩.৫০১২৭.৯০৩৫%
মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক১৩.৫০১৬.৭০২৪%
দুলামিয়া কটন৬৬.৭০৭৭.৮০১৭%

বিএসইসির ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে টি+৩ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে সরকারি মালিকানাধীন জিল বাংলা সুগারের দাম বেড়েছে ১০৫ শতাংশ। অথচ ৬ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও ৬২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লোকসান করেছে। ধারাবাহিক এমন লোকসানে কোম্পানিটির রিটেইন আর্নিংস এখন ঋণাত্মক ৩৭০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ১৯৮৮ সালে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটির সর্বশেষ কবে লভ্যাংশ দিয়েছে, সেই তথ্যও ভুলে গেছে সবাই। এমনকি কোন স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির প্রোফাইলেও এ তথ্য পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র সরকার অর্থায়নের কারনে টিকে রয়েছে এ কোম্পানিটি।

বিজনেস আওয়ার/৩১ আগস্ট, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো সংবাদ